অ্যাপশহর

বিপর্যয়ে ক্ষতিপূরণ সরকারই দিক, দাবি পরিবেশকর্মীদের

পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হিসেবে এ রাজ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত বাজি কারখানা মাত্রই ৪৮টি। তার মধ্যে পর্ষদের আলিপুর আঞ্চলিক অফিস এলাকাতেই কারখানার সংখ্যা সর্বাধিক।

EiSamay.Com 11 Oct 2019, 10:45 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: দিন তিনেক আগেই ডায়মন্ড হারবারের রামনগর থানা এলাকায় আতসবাজি বানাতে গিয়ে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত এক দশকে বাজি বানাতে গিয়ে এ রাজ্যে মারা গিয়েছেন অন্তত ৫৩ জন মানুষ। অথচ, রাজ্যের বেশিরভাগ বাজি কারখানাই যেহেতু চলছে বেআইনি ভাবে, তাই মৃত বা আহত--কোনও শ্রমিক বা শ্রমিক পরিবারই শ্রম-আইনের আওতায় নেই, ক্ষতিপূরণও পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে বাজি কারখানায় মৃত প্রতিটি শ্রমিকের পরিবারের জন্যই বাধ্যতামূলক ক্ষতিপূরণের দাবি তুললেন পরিবেশকর্মীরা। একই সঙ্গে বেআইনি বাজি কারখানাগুলিকে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে অনুমোদন দেওয়ারও দাবি উঠছে।
EiSamay.Com government should take steps to safeguard the interest of those who make fire crackers
বাজি বানাতে গিয়ে এ রাজ্যে মারা গিয়েছেন অন্তত ৫৩ জন মানুষ


পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হিসেবে এ রাজ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত বাজি কারখানা মাত্রই ৪৮টি। তার মধ্যে পর্ষদের আলিপুর আঞ্চলিক অফিস এলাকাতেই কারখানার সংখ্যা সর্বাধিক। সেই এলাকায় অনুমোদনপ্রাপ্ত বাজি কারখানা ৩৩টি। অথচ, রাজ্যের জেলায় জেলায় ছোট, মাঝারি, বড় মিলিয়ে বস্তুত প্রায় ২৫ হাজার বাজি কারখানা চলছে। যেখানে কর্মরত কয়েক লক্ষ মানুষ। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন ল’ অফিসার তথা পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের হিসেবে, ‘২০০৯ থেকে রাজ্যে বাজি বানাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫৩ জনের। জখম একশোরও বেশি শ্রমিক। অনেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক। অথচ, এঁদের ক্ষতিপূরণের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা সরকারের করা উচিত।’

পরিবেশ সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-র নব দত্তর বক্তব্য, রাজ্যের বাজি কারখানার খুব সামান্য অংশের উপরেই সরকারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এই কারখানাগুলির কোনও বৈধতা না-থাকায় এর সঙ্গে যুক্ত লক্ষ লক্ষ শ্রমিক একটি বিপজ্জনক পেশায় যুক্ত থেকেও উপযুক্ত নিরাপত্তা এবং ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি অবশ্যই মানবিক দৃষ্টিতে দেখা দরকার। কারণ যে শ্রমিকেরা এই কাজে যুক্ত, তাঁরা জানেন না, কোন কারখানার লাইসেন্স আছে আর কার নেই। নব দত্ত বলেন, ‘অনুমোদন দিতে হবে শর্তসাপেক্ষে। তার পর বেআইনি কারখানাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ, এই বাজি কারখানাগুলিতে আতসবাজি ছাড়াও আরও কিছু বিস্ফোরক তৈরি হয় যা অন্য কাজেও ব্যবহার হয়। এই পর্যবেক্ষণ খোদ জাতীয় পরিবেশ আদালতেরই।’ জানা গিয়েছে, পুজোর আগেই বেআইনি বাজি কারখানা নিয়ে বৈঠক করেছে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সেখানে বেআইনি কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান চালানোরও সিদ্ধান্ত হয়। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, পরিবেশ দপ্তর, শ্রম দপ্তর, পুলিশের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া তা কার্যত অসম্ভব। আতসবাজি উৎপাদক সংগঠনের মতে, এখন শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া-ই নয়, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুরেও গ্রামে গ্রামে প্রায় কুটির শিল্পের মতো গড়ে উঠেছে বাজি কারখানা।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল