অ্যাপশহর

মন্দায় গলানো হচ্ছে নতুন সোনার গয়না, মত বিশেষজ্ঞদের

সোনা গলানোর প্রক্রিয়াও এখন প্রতিষ্ঠানের আকার নিচ্ছে। এখন পরিশোধনাগারে সোনা গলানোর জন্য পাঠানো হচ্ছে। আগে দোকানেই বা কাছাকাছি কোনও কারখানায় সোনা গলানোর কাজ হত।

Ei Samay 6 Jul 2020, 8:49 am
এই সময়: সোনা ব্যবসায় মন্দার প্রভাব পড়তে থাকায় মজুত থাকা গয়না কমাতে নতুন তৈরি সোনার গয়না গলাতে শুরু করেছেন বিক্রেতারা। এতদিন নতুন গয়না কেনার জন্য বিক্রি করা পুরোনো গয়না গলিয়ে নতুন গয়না তৈরি করাই দস্তুর ছিল সোনার ব্যবসায়ীদের। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন ভারি গয়না গলিয়ে হাল্কা গয়না তৈরি শুরু করেছে গয়না বিক্রেতা সংস্থাগুলি।
EiSamay.Com goldsmiths are liquidifying gold ornaments to beat the blues of market down in corona crisis
মন্দায় গলানো হচ্ছে নতুন সোনার গয়না


এর জন্য গয়না বানানোর জন্য হওয়া খরচের ক্ষতিও বইতে রাজি বিক্রেতারা। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে দীর্ঘদিন ধরে গয়না বানিয়ে তা মজুত করে রাখার ফলে খরচ ক্রমাগত বেড়ে যাওয়াই এর কারণ।

যদিও কলকাতার বাজারে এ ধরনের কিছু ঘটেনি বলে জানিয়েছেন স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে। তাঁর কথায়, ‘কলকাতা বা দেশের কোনও প্রান্তে এমন ঘটনা ঘটছে তা আমার কানে আসেনি। তবে, নতুন সোনার গয়না গলিয়ে ফেলা একটা নিয়মিত প্রক্রিয়া। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতা চাহিদার কথা মাথায় রেখে ভারি সোনার গয়না তৈরি করা হলেও পরে তা বিক্রি না হওয়ায় বদলে যাওয়া মানসিকতার কথা মাথায় রেখে সেই গয়না গলিয়ে হাল্কা বা অন্য ডিজাইনের গয়না কমবেশি তৈরি করা হয়ে থাকে। এটা নতুন কিছু নয়।’ তবে, মন্দার আঁচে নতুন সোনার গয়না গলিয়ে ফেলতে হচ্ছে এ কথা ভুল, বাবলু জানান।

সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান শঙ্কর সেন বলেন, ‘সোনার গয়নার ক্ষেত্রে ধাতুর মূল্যই ৮০-৮৫ শতাংশ, বাকিটা মজুরি বাবদ খরচ হয়। সোনার দাম বৃদ্ধি পেলে সেই খরচ কিছুই নয়। গত কয়েক মাসে সোনার দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। তা ছাড়া নতুন সোনার গয়না গলানোর প্রক্রিয়া বরাবরই রয়েছে। এখন সোনার দাম এতটা বেড়ে যাওয়ার কারণে ক্রেতারাও ভারি ও দামি গয়নার পরিবর্তে নিজেদের বাজেট অনুযায়ী হাল্কা বা অপেক্ষাকৃত কম দামের গয়নাই পছন্দ করবেন। সে ক্ষেত্রে তৈরি হওয়া গয়না কাজে না এলে তা গলানো খুব স্বাভাবিক। ক্রেতারা যদি নতুন গয়না গলিয়ে হাল ফ্যাশনের গয়না তৈরি করতে পারেন, তা হলে ব্যবসায়ীরা পারবে না কেন?’

মেটাল ফোকাসের দক্ষিণ এশিয়ার প্রিন্সিপ্যাল কনসালট্যান্ট চিরাগ শেঠ বলেন, ‘এখন দু’ধরনের স্ক্র্যাপ গলানোর জন্য আসছে। এতদিন পর্যন্ত, শুধুমাত্র পুরোনো গয়নাই গলানোর জন্য পাঠানো হত। কিন্তু এখন অনেক গয়না ব্যবসায়ী নতুন গয়না গলানো শুরু করে দিয়েছে। এর ফলে চলতি বছরে ছাঁটাই সোনার পরিমাণ গত বছরের ১১৯ টন থেকে বেড়ে ১৪০ টনে দাঁড়াবে।’

ক্রেতারা বিপণিতে আসা বন্ধ করে দেওয়ায় এবং কেনাকাটার ক্ষেত্রে প্রচন্ড খুঁতখুতে হওয়ার কারণে মজুত থাকা গয়নার পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে চাপের মুখে পড়েছে গয়না ব্যবসায়ীরা। এর পাশাপাশি সোনা কেনার জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধ করাও তাদের পক্ষে মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে, চিরাগ জানান।

পরের খবর