অ্যাপশহর

নারদকাণ্ডে সুযোগ নিতে চায় সিপিএম

নারদ নিয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায়কে তাঁদের রাজনৈতিক সুযোগ হিসাবেই দেখছে সিপিএম৷ রাজ্যে ভাবমূর্তি ও বিশ্বাসযোগ্যতার সমস্যায় ভুগতে থাকা সিপিএম তাই কালবিলম্ব না-করে মিছিল ও প্রচার শুরু করেছে৷

EiSamay.Com 23 Mar 2017, 11:43 am
এই সময়, নয়াদিল্লি: নারদ নিয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায়কে তাঁদের রাজনৈতিক সুযোগ হিসাবেই দেখছে সিপিএম৷ রাজ্যে ভাবমূর্তি ও বিশ্বাসযোগ্যতার সমস্যায় ভুগতে থাকা সিপিএম তাই কালবিলম্ব না-করে মিছিল ও প্রচার শুরু করেছে৷ এই কর্মসূচি চলবে মে মাস পর্যন্ত৷ তার পর পরবর্তী আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে৷
EiSamay.Com cpm wants to take advantage of narada sting operation
নারদকাণ্ডে সুযোগ নিতে চায় সিপিএম


এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘ইতিবাচক’বলায় ‘ম্যাচ ফিক্সিং’য়ের আশঙ্কা বাড়ল বলে মনে করছে রাজ্য সিপিএম৷ বুধবার সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক হয় সেই বৈঠকে নারদ কেলেঙ্কারি নিয়ে সিপিএমের পরবর্তী কর্মসূচি এবং মমতার অবস্থান নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে৷ প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে আগামী ২৯ মার্চ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কারণে মাইক-বিধি প্রত্যাহার হলে ওই দিন সন্ধ্যায় কলকাতায় বড় সভা করবে বামেরা৷ ইতিমধ্যে মিছিল, অবস্থান হয়েছে শহরে বড় জমায়েত করে এই ইস্যু কোনও ভাবে হাতছাড়া হতে দিতে নারাজ আলিমুদ্দিন স্ট্রিট৷ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর মমতা মঙ্গলবার রায়কে ‘ইতিবাচক’বলেছেন৷ সেই প্রসঙ্গ টেনে সুজন বলেন,‘এই মন্তব্যর মাধ্যমে দরজা খোলা রাখার ইঙ্গিত দেওয়া হল৷ সিবিআই যে এক মাস সময় পেয়েছে সেই সময়ে কি ম্যাচ-ফিক্সিং করা হতে পারে? সংসদে বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূলের নীরব থাকা, মণিপুরে বিজেপিকে সমর্থন দেওয়ার ফলে মানুষের মনে এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷’সুজনের বক্তব্য,‘মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য থেকেই এই সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে৷’এ দিনও সুজন অভিযুক্ত মন্ত্রীদের পদত্যাগের দাবি করেছেন৷ রাজ্য সরকারের করের টাকায় কেন সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই তদন্তর বিরোধিতা করা হচ্ছে এ দিন সেই প্রশ্নও তুলেছেন এই সিপিএম নেতা৷ সুজনের কথায়, ‘অভিযুক্ত মন্ত্রীদের বরখাস্ত করার দাবি ইতিমধ্যে রাজ্যপালের কাছে আমরা করেছি৷ বিজেপির আগেই আমরা বলেছি৷ দরকার হলে আবার রাজ্যপালের কাছে আমরা যাব৷ আমরা চাই অভিযুক্ত মন্ত্রীরা নিজেরাই পদত্যাগ করুন৷’

কিন্ত্ত নারদ কেলেঙ্কারি তো সামনে এসেছিল রাজ্য বিধানসভা ভোটের আগে৷ তার পরেও তৃণমূল বিপুল ভাবে জিতে আসে৷ ফলে নারদ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগকে লোকে তো খারিজ করে দিয়েছে৷ সিপিএম নেতৃত্বের অবশ্য ব্যাখ্যা, নারদ যখন সামনে আসে, তখন নির্বাচনী প্রক্রিয়া তুঙ্গে৷ তখন এই ধরনের অভিযোগ এলে তাকে সাধারণত বিরোধীদের মরিয়া প্রচার বলেই দেখাবার চেষ্টা করে ক্ষমতাসীন দল৷ রাজ্যেও সেটাই হয়েছিল এবং লোকে তা বিশ্বাসও করে৷ ঠেকে শিখে সিপিএম নেতৃত্বের এখন উপলব্ধি হল, ভোটের আগে চটজলদি কোনও প্রয়াসই লোকে নেয় না৷ পশ্চিমবঙ্গে সে কারণেই সিপিএম-কংগ্রেস সমঝোতা এবং উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট লোকে মানেনি৷ এর জন্য কিছুদিন সময় দিতে হয়৷ সেটা না দিয়ে সুবিধাবাদী জোট হলে তা লোকের মনে দাগ কটে না৷

সিপিএমের আশা, সিবিআই যদি ঠিক ভাবে তদন্ত করে, তা হলে তৃণমূলের অনেক নেতাই কারাবাসে যেতে পারেন৷ তার রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হতে বাধ্য৷ এরকম হলে তার সুবিধা বিরোধীরা পাবে৷ দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার মন্তব্য হল,‘২০১১-র থেকে এ বারের ফারাকটা দেখুন৷ আগে নতুন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতেই আমাদের আড়াই বছরের মতো সময় লেগেছিল৷ এ বার ছ’মাসের মধ্যে আন্দোলন শুরু করেছি৷ নারদ নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের পরই রাজ্যজুড়ে মিছিল হয়ে গিয়েছে৷ এই ছবিটা শুধু নারদ নিয়ে নয়, ওয়াকফ নিয়ে, মাদ্রাসার সমস্যা নিয়ে লোকে রাস্তায় নামছে৷ এই ছবি আগে ছিল না৷’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল