অনির্বাণ ঘোষ করোনার প্রথম ঢেউয়ে ভাইরাসের সবচেয়ে বেশি বলি হয়েছিলেন বয়স্করা। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গিয়েছে বয়স্কদের মৃত্যুহার। তবে তাৎপর্যপূর্ণ হারে বেড়েছে কম বয়সিদের মৃত্যু। বলা ভালো, মাঝবয়সিদের মৃত্যুর নজির। চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা, ৩১-৪৫ বছর বয়সিদের ভিড় লক্ষ্যণীয় হারে বাড়ছে আইসিইউ-গুলিতেও। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এর নেপথ্যে রয়েছে করোনার নয়া স্ট্রেনের চরিত্র, কমবয়সিদের বেপরোয়া জীবনযাত্রা, বয়স্কদের সাবধানী হয়ে যাওয়া এবং টিকাকরণের মতো বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর। চিন্তা বেড়েছে, শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার নজির বেড়ে চলা নিয়েও।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, গত বছর এপ্রিল থেকে চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমাকে প্রথম ঢেউ এবং তার পরবর্তী সময়কে দ্বিতীয় ঢেউ ধরা হচ্ছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রথম ঢেউয়ে প্রায় ১১ হাজার ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে (২৯ মে পর্যন্ত) এ যাবৎ মারা গিয়েছেন প্রায় ৪৫০০ করোনা আক্রান্ত। মৃতদের বয়স বিচার করলে দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর নজির কমেছে ৭৫-ঊর্ধ্ব রোগীদের। কোভিড বুলেটিনের তথ্যও বলছে, প্রথম ঢেউয়ের সময়ে যেখানে ৭৫-ঊর্ধ্ব আক্রান্তদের মধ্যে ১৩.২৫% রোগী মারা যেতেন, এ বার সেখানে দেখা যাচ্ছে, মারা যাচ্ছেন এর প্রায় অর্ধেক রোগী (৭.৩০%)।
আবার অন্য ভাবে বিচার করলেও একই ছবি স্পষ্ট। গত বার যেখানে করোনায় মৃতদের ২৪% ছিলেন এই বয়সের, সেখানে দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেখা যাচ্ছে, মৃতদের মধ্যে ২০% মানুষ ৭৫-ঊর্ধ্ব। ৬১-৭৫ বছয় বয়সিদের মধ্যেও একই ব্যাপার দেখা যাচ্ছে। ৪৩% থেকে কমে ৪১% হয়েছে শতকরা মৃত্যুর সংখ্যা। কিন্তু ৩১-৪৫ বছর বয়সিদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, মৃত্যুর নজির বেড়ে গিয়েছে অন্তত ৪%, যা রীতিমতো চিন্তার কারণ। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর নজির বেড়েছে ৪৬-৬০ বছর বয়সিদের মধ্যেও (২৬% থেকে ২৭%)।
সৌগত ঘোষের মতো মাইক্রোবায়োলজির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে করোনার যে নতুন স্ট্রেন দাপাদাপি করছে, তার চরিত্রই হলো কমবয়সিদের উপরে হামলা চালানো- 'প্রথম ঢেউয়ে করোনার টার্গেট ছিলেন মূলত বয়স্করা। তুলনায় বেঁচে গিয়েছিলেন কমবয়সিরা। এবার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে তাঁরাই করোনার টার্গেট।'
যদিও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এর জন্য মূলত দায়ী করছেন ভাইরাসের চরিত্রকে নয়, বরং কমবয়সিদের আচরণকেই। পূণ্যব্রত গুণ কিংবা অনির্বাণ দোলুইয়ের মতো জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, 'রুটি-রুজির কারণেই কমবয়সিদের বেশি বেরোতে হয় বাইরে। ফলে তাঁরা করোনার সামনাসামনি হনও বেশি। এবং সর্বোপরি কম বয়সে বেপরোয়া মনোভাবও থাকে। তাই তাঁরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এবং মারাও যাচ্ছেন। তুলনায় বয়স্করা প্রথম ঢেউ থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন অনেক সাবধানী। তাই ওঁরা বেঁচে যাচ্ছেন।' মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস আবার মনে করেন, শহুরে বয়স্কদের একটা বড় অংশ এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে টিকাও নিয়ে নিয়েছেন। ফলে করোনায় ভুগলেও বাড়াবাড়ি আটকানো গিয়েছে তাঁদের সিংহভাগের ক্ষেত্রেই।
মোটের উপর, মাঝবয়সিদের আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যু তুলনায় বেশি হচ্ছে, সন্দেহ নেই। ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সৌরেন পাঁজা বলেন, 'ইদানীং আইসিইউ-তে যত রোগী ঢুকছে, তার মধ্যে কমবয়সি, বিশেষ করে মাঝবয়সি রোগীর সংখ্যাই বেশি। এঁদের একটা বড় অংশই করোনাকে শুরুতে গুরুত্ব দেননি। প্রাথমিক উপসর্গে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে এঁদের সিংহভাগকেই হয়তো আইসিইউ পর্যন্ত আসতে হতো না, তার আগেই সুস্থ হয়ে উঠতে পারতেন।' মেডিসিন বিশেষজ্ঞ পার্থসারথি কর্মকার জানান, মাঝবয়সে অনেকের শরীরেই প্রেশার-সুগার-কোলেস্টেরলের মতো কো-মর্বিডিটি থাবা বসায়। কিন্তু বয়স্কদের মতো সেটা অনেকেরই জানা থাকে না। অজানা অসুখের সঙ্গে করোনার মিশেলে সংক্রমণ আরও গুরুতর আকার ধারণ করে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, গত বছর এপ্রিল থেকে চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমাকে প্রথম ঢেউ এবং তার পরবর্তী সময়কে দ্বিতীয় ঢেউ ধরা হচ্ছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রথম ঢেউয়ে প্রায় ১১ হাজার ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে (২৯ মে পর্যন্ত) এ যাবৎ মারা গিয়েছেন প্রায় ৪৫০০ করোনা আক্রান্ত। মৃতদের বয়স বিচার করলে দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর নজির কমেছে ৭৫-ঊর্ধ্ব রোগীদের। কোভিড বুলেটিনের তথ্যও বলছে, প্রথম ঢেউয়ের সময়ে যেখানে ৭৫-ঊর্ধ্ব আক্রান্তদের মধ্যে ১৩.২৫% রোগী মারা যেতেন, এ বার সেখানে দেখা যাচ্ছে, মারা যাচ্ছেন এর প্রায় অর্ধেক রোগী (৭.৩০%)।
আবার অন্য ভাবে বিচার করলেও একই ছবি স্পষ্ট। গত বার যেখানে করোনায় মৃতদের ২৪% ছিলেন এই বয়সের, সেখানে দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেখা যাচ্ছে, মৃতদের মধ্যে ২০% মানুষ ৭৫-ঊর্ধ্ব। ৬১-৭৫ বছয় বয়সিদের মধ্যেও একই ব্যাপার দেখা যাচ্ছে। ৪৩% থেকে কমে ৪১% হয়েছে শতকরা মৃত্যুর সংখ্যা। কিন্তু ৩১-৪৫ বছর বয়সিদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, মৃত্যুর নজির বেড়ে গিয়েছে অন্তত ৪%, যা রীতিমতো চিন্তার কারণ। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর নজির বেড়েছে ৪৬-৬০ বছর বয়সিদের মধ্যেও (২৬% থেকে ২৭%)।
সৌগত ঘোষের মতো মাইক্রোবায়োলজির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে করোনার যে নতুন স্ট্রেন দাপাদাপি করছে, তার চরিত্রই হলো কমবয়সিদের উপরে হামলা চালানো- 'প্রথম ঢেউয়ে করোনার টার্গেট ছিলেন মূলত বয়স্করা। তুলনায় বেঁচে গিয়েছিলেন কমবয়সিরা। এবার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে তাঁরাই করোনার টার্গেট।'
যদিও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এর জন্য মূলত দায়ী করছেন ভাইরাসের চরিত্রকে নয়, বরং কমবয়সিদের আচরণকেই। পূণ্যব্রত গুণ কিংবা অনির্বাণ দোলুইয়ের মতো জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, 'রুটি-রুজির কারণেই কমবয়সিদের বেশি বেরোতে হয় বাইরে। ফলে তাঁরা করোনার সামনাসামনি হনও বেশি। এবং সর্বোপরি কম বয়সে বেপরোয়া মনোভাবও থাকে। তাই তাঁরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এবং মারাও যাচ্ছেন। তুলনায় বয়স্করা প্রথম ঢেউ থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন অনেক সাবধানী। তাই ওঁরা বেঁচে যাচ্ছেন।' মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস আবার মনে করেন, শহুরে বয়স্কদের একটা বড় অংশ এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে টিকাও নিয়ে নিয়েছেন। ফলে করোনায় ভুগলেও বাড়াবাড়ি আটকানো গিয়েছে তাঁদের সিংহভাগের ক্ষেত্রেই।
মোটের উপর, মাঝবয়সিদের আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যু তুলনায় বেশি হচ্ছে, সন্দেহ নেই। ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সৌরেন পাঁজা বলেন, 'ইদানীং আইসিইউ-তে যত রোগী ঢুকছে, তার মধ্যে কমবয়সি, বিশেষ করে মাঝবয়সি রোগীর সংখ্যাই বেশি। এঁদের একটা বড় অংশই করোনাকে শুরুতে গুরুত্ব দেননি। প্রাথমিক উপসর্গে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে এঁদের সিংহভাগকেই হয়তো আইসিইউ পর্যন্ত আসতে হতো না, তার আগেই সুস্থ হয়ে উঠতে পারতেন।' মেডিসিন বিশেষজ্ঞ পার্থসারথি কর্মকার জানান, মাঝবয়সে অনেকের শরীরেই প্রেশার-সুগার-কোলেস্টেরলের মতো কো-মর্বিডিটি থাবা বসায়। কিন্তু বয়স্কদের মতো সেটা অনেকেরই জানা থাকে না। অজানা অসুখের সঙ্গে করোনার মিশেলে সংক্রমণ আরও গুরুতর আকার ধারণ করে।