অ্যাপশহর

ইতালি-স্পেনের পরিণাম দেখুন, বাজারে সচেতনতার প্রচার পুলিশের

‘দেখছেন তো মার্কিন মুলুকের হাল। ইতালি, ব্রিটেন, স্পেনের অবস্থা। লকডাউন না মানায় উজাড় হয়ে যাচ্ছে। দয়া করে জরুরি কাজ না-থাকলে বাড়ি থেকে বেরোবেন না।’

EiSamay.Com 30 Mar 2020, 9:57 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ‘দেখছেন তো মার্কিন মুলুকের হাল। ইতালি, ব্রিটেন, স্পেনের অবস্থা। লকডাউন না মানায় উজাড় হয়ে যাচ্ছে। দয়া করে জরুরি কাজ না-থাকলে বাড়ি থেকে বেরোবেন না।’
EiSamay.Com coronavirus: See the situation in Italy and Spain, Kolkata police   campaigns at markets
সচেতনতা প্রচার পুলিশের। মানিকতলা বাজারে


লকডাউন কার্যকর করতে এ ভাবেই প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ। কখনও করজোড়ে, কখনও বা কঠোর ভাষায় অকারণে রাস্তায় বেরনো বা জটলা করে থাকা জনতাকে বোঝাতে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের পাশাপাশি থানার ওসি, এমনকি আইপিএস অফিসাররাও রাস্তায় নেমেছেন। লকডাউনের মধ্যে অত্যাবশকীয় জিনিস কিনতে বা জরুরি কাজে যাঁরা বেরোবেন, তাঁদের কোনওরকম অসুবিধেয় পড়তে দিতে চান না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাইরে বেরোলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথাও পইপই করে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেও রবিবার শহরের কয়েকটি জায়গায় চায়ের দোকানে আড্ডা, গলি ক্রিকেট বা বাইকে তিনজন সওয়ার হয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে বিক্ষিপ্ত ভাবে।

চিকিৎসক থেকে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, যাঁরা বিষয়টিকে হাল্কা ভাবে নিচ্ছেন, তাঁরা বুঝতে চাইছেন না বিপদটা ঠিক কতটা মারাত্মক। তাই লাঠিচার্জ বা সরাসরি মামলার পথে না-হেঁটে পুলিশ যতটা সম্ভব নাগরিকদের বোঝানোর চেষ্টা করছে। লাগাতার প্রচারে মানুষের বড় অংশের মধ্যেই যে সচেতনতা ফিরেছে, তা-ও টের পাওয়া গেল রবিবারের বাজারে। শহরের বেশ কয়েকটি বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা, প্রত্যেকের মধ্যেই সচেতনতার ছবি ধরা পড়েছে। তার পরেও প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’-একজনের অসতর্কতার জন্যও বড় বিপদ হতে পারে। তাই প্রত্যেককেই নিয়ম মানতে হবে।

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ নাগরিকদের অকারণ জটলা বন্ধ করতে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। শহরের কয়েকটি থানা মাইকিংয়ের সময় বিপদ বোঝাতে ইতালি-আমেরিকায় করোনা সংক্রমণে কী অবস্থা, তা প্রচার করছে। শহরের প্রধান রাস্তাগুলি প্রায় ফাঁকা থাকলেও পাড়ার মোড়, অলিগলি বা ছোট রাস্তায় বিক্ষিপ্ত জটলা হচ্ছে। এখন সে দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে বিভিন্ন থানা।

এমনিতে লকডাউনে সকলে গৃহবন্দি। অনেকে আগেভাগে বাজারও সেরে রেখেছেন। তবু শহরের কয়েকটি প্রান্তে রবিবারের বাজারে দেখা গিয়েছে, ক্রেতাদের সচেতন করতে পুলিশের সঙ্গে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। যেমন, সকালে গড়িয়া বাজারের আধখোলা গেটের সামনে সাইকেল রেখে ভিতরে ঢুকছিলেন এক প্রৌঢ়। গেটের সামনে কর্তব্যরত স্বেচ্ছাসেবকদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘দোকানে পান পাওয়া যাবে তো?’ স্বেচ্ছাসেবক জবাব দিলেন, ‘সব পাবেন। আগে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে আসুন। তার পরে বাজারে ঢুকুন।’

দেখা গেল, বাজারের বাইরে হাত ধোয়ার জন্য জনা তিরিশেক ক্রেতার লাইন। স্বেচ্ছাসেবকরা জানিয়ে দেন, কিছু না-কিনলেও বাজারে ঢুকতে হলে হাতে স্যানিটাইজার দিতেই হবে। কেনাকাটার সময়েও ভিড় করা যাবে না, কেনা হলে বেরোতে হবে পাশের গেট দিয়ে। মানিকতলা বাজারের সামনেও দেখা গেল পুলিশের ভ্যান। বাজারে মাস্ক পরে, হ্যান্ড মাইক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। কোনও দোকানের সামনে একটু বেশি ভিড় দেখলেই ঘোষণা করেছেন, ‘পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখুন। খুব প্রয়োজন না হলে একই দোকানের সামনে ভিড় করবেন না।’ গোলপার্ক থেকে গাড়িয়াহাট মোড় পর্যন্ত গড়িয়াহাট বাজারের গেটগুলি ছিল বন্ধ। বন্ধ গেটের বাইরেও ছিল হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। বালিগঞ্জ স্টেশনের দিকেও বাজারের প্রথম দু’টি গেট বন্ধ। কর্তব্যরত পুলিশকর্মী জানান, সামনের গেট খোলা। এন্টালি বাজারেও ভিড় নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি গেট বন্ধ রাখা হয়। যে গেটটি খোলা, তার সামনে জনা কয়েক পুলিশকর্মী একসঙ্গে বেশি ভিড় হয়ে গেলেই অপেক্ষা করতে পরামর্শ দেন ক্রেতাদের। মেনে চলতে হয়েছে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের বৃত্ত।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল