চিত্রদীপ চক্রবর্তী
ঢাকা-কলকাতার মধ্যে যাতায়াত করা মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের থেকে ঘুষ আদায়ের ঘটনা৷ দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির কাস্টমস কর্মীদের এই মৌরসিপাট্টায় এ বার সরাসরি থাবা দিল সিবিআই৷ আচমকা তল্লাশিতে এই ঘটনা ধরা পড়ে যাওয়ায়, ভারত-বাংলাদেশের গেদে সীমান্তে ঘটে চলা এই দুর্নীতি নিয়ে শুরু হল সিবিআই তদন্ত৷ যাতে অভিযুক্ত কাস্টমসের অন্তত পাঁচজন সুপারিন্টেন্ডেন্ট-সহ আরও তিনজন৷ এই তালিকায় রয়েছে স্থানীয় এক বাসিন্দা অশোক মহালদার ওরফে ছোটকা৷ এই ছোটকার খোলা তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই জমা হত ঘুষের টাকা৷ পরে যা ভাগ করে দেওয়া হত অন্যদের মধ্যে৷ সূত্রের খবর, অর্থ মন্ত্রকের অধীনে থাকা ভিজিল্যান্স দপ্তরের ডিজির নির্দেশে পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয় প্রায় মাসখানেক আগে৷ সেই তদন্তে এফআইআর করার মতো যথেষ্ট সারবত্তা থাকায়, গত ৩১ মে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখা কাস্টমস অফিসারদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে৷
কী ধরনের দুর্নীতি চলছিল গেদে সীমান্তে? সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে ঢাকার মধ্যে যাতায়াত করা মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের থেকে ল্যান্ড কাস্টমসের অফিসারেরা কোনও রকম চেকিং ছাড়াই ৭০০ টাকা করে আদায় করছিলেন ঘুষ বাবদ৷ এই টাকা নেওয়ার ঘটনার কোনও রকম প্রমাণ যাতে না-থাকে, তার জন্য স্টেশনের সিসিটিভিগুলিকেও অকেজো করে রাখা হয়েছে দাবি করা হয়েছে এফআইআরে৷ এ ভাবেই প্রতিদিন আদায় হত প্রায় তিন-চার লক্ষ টাকা৷ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে যাতায়াত করা অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই ট্রেনের যাত্রীদের উপর নজর রাখার ব্যবস্থা অকেজো করে রাখায় নিরাপত্তা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে৷
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিবিআইয়ের একটি দল গেদে স্টেশনে হানা দেয়৷ সেখানে মৈত্রী হলে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের ঘরে তখন উপস্থিত ছিলেন বিআর সামন্ত সুপার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন), সুদীপ্ত দাস সুপারিন্টেন্ডেন্ট-সহ আরও কয়েকজন৷ সেখানে বি আর সামন্তর টেবিলে পাওয়া যায় ভারতীয় মুদ্রায় ১৫ হাজার ৫৬০ টাকা এবং বাংলাদেশের ১৩ হাজার ১৪১ টাকা৷ কিন্ত্ত সেখানে উপস্থিত কাস্টমস কর্তারা ওই টাকার কোনও যথাযথ হিসেব দিতে পারেননি৷ ওই দিনই স্টেশনের মধ্যে থাকা রেল পুলিশের অফিসের পাশে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের দপ্তরে হানা দিয়ে সেখানকার কম্পিউটার টেবিল এবং আলমারি থেকে চার লক্ষ ১০ হাজার ৬৫৫ ভারতীয় টাকা এবং বাংলাদেশের মুদ্রায় এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা ছাড়াও ১১ রিয়াল এবং ৩৭ ডলার বাজেয়াপ্ত করা হয়৷ এই নোটগুলি বিভিন্ন বান্ডিলে ভাগ করা ছিল৷ আবার প্রতিটি ভাগে একটি করে টুকরো কাগজে তিনটি আলাদা করে অ্যাকাউন্টের নাম লেখা রয়েছে৷ যে অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল ‘সোনালি’,‘সৌহার্দ্য’এবং ‘নয়ন’নামে৷ কাস্টমস আধিকারিকরাও এই টাকার সম্পর্কে সঠিক কিছু জানাতে পারেননি৷ হানাদারির দিনই ওই সমস্ত টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়৷
সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা দেখতে পান ওই দপ্তরে হাজিরা খাতাও ঠিক ভাবে মেনটেন করা হয়নি৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, ওই সমস্ত টাকাই ঘুষ হিসেবে বিভিন্ন যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছিল৷ সিবিআই গোয়েন্দাদের অভিযোগ, মৈত্রী এক্সপ্রেস স্টেশনে আসার পর গেদে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম লোহার গেট দিয়ে আটকে দেওয়া হয়৷ এর পর কাস্টমস অফিসাররা যাত্রীদের লাগেজ পরীক্ষা করবেন সেটাই দস্ত্তর৷ সেখানেই অফিসারদের উপস্থিতিতে যাত্রীদের টাকা-পয়সা-সহ সমস্ত বর্ণনা দিয়ে একটি ঘোষণাপত্রে সই করার কথা৷ যদি কেউ বাড়তি টাকা আনেন বা মিথ্যা তথ্য পেশ করেন, তবে তার থেকে জরিমানা আদায় করার নিয়মও রয়েছে৷ এক্ষেত্রে ওই টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার কথা৷ ওই স্টেশনেই যাত্রীদের পাসপোর্ট এবং ভিসা সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার নিয়মও রয়েছে৷ অর্থ মন্ত্রকের অধীনে থাকা ভিজিল্যান্স দপ্তরের ডিজির নির্দেশ অনুযায়ী এই যাত্রীরা পাঁচ হাজার টাকার বেশি নিজের সঙ্গে রাখতে পারবেন না৷ কিন্ত্ত যাঁদের এই পুরো বিষয়টি দেখার কথা, সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের ঘর থেকেই প্রায় তিরিশ হাজার টাকা পাওয়া যায়৷
সিবিআইয়ের অফিসারেরা ওখানেই অশোক ওরফে ছোটকা নামে এক স্থানীয় বাসিন্দাকে দেখতে পান৷ ওই অফিসে বসেই সে এই কাজকর্ম পরিচালনা করছিল৷ বেশ কয়েকজন যাত্রীর কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায় প্রতিবার কাস্টমসের চেকিংয়ের কাজ যাতে কোনও রকম ঝামেলা ছাড়া করে দেওয়া যায়, সে জন্য তাদের থেকে জনপ্রতি ৩০ টাকা করেও নেওয়া হত৷ সেই টাকাও ছোটকার মাধ্যমে জমা পড়ত ওই তিনটি অ্যাকাউন্টে, যা পরে ভাগ করা হত অন্যদের মধ্যে৷ তল্লাশিতে সিবিআইয়ের কর্তারা পুরো বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই একাধিক কাস্টমস অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে৷
ঢাকা-কলকাতার মধ্যে যাতায়াত করা মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের থেকে ঘুষ আদায়ের ঘটনা৷ দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির কাস্টমস কর্মীদের এই মৌরসিপাট্টায় এ বার সরাসরি থাবা দিল সিবিআই৷ আচমকা তল্লাশিতে এই ঘটনা ধরা পড়ে যাওয়ায়, ভারত-বাংলাদেশের গেদে সীমান্তে ঘটে চলা এই দুর্নীতি নিয়ে শুরু হল সিবিআই তদন্ত৷ যাতে অভিযুক্ত কাস্টমসের অন্তত পাঁচজন সুপারিন্টেন্ডেন্ট-সহ আরও তিনজন৷ এই তালিকায় রয়েছে স্থানীয় এক বাসিন্দা অশোক মহালদার ওরফে ছোটকা৷ এই ছোটকার খোলা তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই জমা হত ঘুষের টাকা৷ পরে যা ভাগ করে দেওয়া হত অন্যদের মধ্যে৷ সূত্রের খবর, অর্থ মন্ত্রকের অধীনে থাকা ভিজিল্যান্স দপ্তরের ডিজির নির্দেশে পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয় প্রায় মাসখানেক আগে৷ সেই তদন্তে এফআইআর করার মতো যথেষ্ট সারবত্তা থাকায়, গত ৩১ মে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখা কাস্টমস অফিসারদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে৷
কী ধরনের দুর্নীতি চলছিল গেদে সীমান্তে? সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে ঢাকার মধ্যে যাতায়াত করা মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের থেকে ল্যান্ড কাস্টমসের অফিসারেরা কোনও রকম চেকিং ছাড়াই ৭০০ টাকা করে আদায় করছিলেন ঘুষ বাবদ৷ এই টাকা নেওয়ার ঘটনার কোনও রকম প্রমাণ যাতে না-থাকে, তার জন্য স্টেশনের সিসিটিভিগুলিকেও অকেজো করে রাখা হয়েছে দাবি করা হয়েছে এফআইআরে৷ এ ভাবেই প্রতিদিন আদায় হত প্রায় তিন-চার লক্ষ টাকা৷ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে যাতায়াত করা অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই ট্রেনের যাত্রীদের উপর নজর রাখার ব্যবস্থা অকেজো করে রাখায় নিরাপত্তা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে৷
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিবিআইয়ের একটি দল গেদে স্টেশনে হানা দেয়৷ সেখানে মৈত্রী হলে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের ঘরে তখন উপস্থিত ছিলেন বিআর সামন্ত সুপার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন), সুদীপ্ত দাস সুপারিন্টেন্ডেন্ট-সহ আরও কয়েকজন৷ সেখানে বি আর সামন্তর টেবিলে পাওয়া যায় ভারতীয় মুদ্রায় ১৫ হাজার ৫৬০ টাকা এবং বাংলাদেশের ১৩ হাজার ১৪১ টাকা৷ কিন্ত্ত সেখানে উপস্থিত কাস্টমস কর্তারা ওই টাকার কোনও যথাযথ হিসেব দিতে পারেননি৷ ওই দিনই স্টেশনের মধ্যে থাকা রেল পুলিশের অফিসের পাশে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের দপ্তরে হানা দিয়ে সেখানকার কম্পিউটার টেবিল এবং আলমারি থেকে চার লক্ষ ১০ হাজার ৬৫৫ ভারতীয় টাকা এবং বাংলাদেশের মুদ্রায় এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা ছাড়াও ১১ রিয়াল এবং ৩৭ ডলার বাজেয়াপ্ত করা হয়৷ এই নোটগুলি বিভিন্ন বান্ডিলে ভাগ করা ছিল৷ আবার প্রতিটি ভাগে একটি করে টুকরো কাগজে তিনটি আলাদা করে অ্যাকাউন্টের নাম লেখা রয়েছে৷ যে অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল ‘সোনালি’,‘সৌহার্দ্য’এবং ‘নয়ন’নামে৷ কাস্টমস আধিকারিকরাও এই টাকার সম্পর্কে সঠিক কিছু জানাতে পারেননি৷ হানাদারির দিনই ওই সমস্ত টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়৷
সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা দেখতে পান ওই দপ্তরে হাজিরা খাতাও ঠিক ভাবে মেনটেন করা হয়নি৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, ওই সমস্ত টাকাই ঘুষ হিসেবে বিভিন্ন যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছিল৷ সিবিআই গোয়েন্দাদের অভিযোগ, মৈত্রী এক্সপ্রেস স্টেশনে আসার পর গেদে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম লোহার গেট দিয়ে আটকে দেওয়া হয়৷ এর পর কাস্টমস অফিসাররা যাত্রীদের লাগেজ পরীক্ষা করবেন সেটাই দস্ত্তর৷ সেখানেই অফিসারদের উপস্থিতিতে যাত্রীদের টাকা-পয়সা-সহ সমস্ত বর্ণনা দিয়ে একটি ঘোষণাপত্রে সই করার কথা৷ যদি কেউ বাড়তি টাকা আনেন বা মিথ্যা তথ্য পেশ করেন, তবে তার থেকে জরিমানা আদায় করার নিয়মও রয়েছে৷ এক্ষেত্রে ওই টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার কথা৷ ওই স্টেশনেই যাত্রীদের পাসপোর্ট এবং ভিসা সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার নিয়মও রয়েছে৷ অর্থ মন্ত্রকের অধীনে থাকা ভিজিল্যান্স দপ্তরের ডিজির নির্দেশ অনুযায়ী এই যাত্রীরা পাঁচ হাজার টাকার বেশি নিজের সঙ্গে রাখতে পারবেন না৷ কিন্ত্ত যাঁদের এই পুরো বিষয়টি দেখার কথা, সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের ঘর থেকেই প্রায় তিরিশ হাজার টাকা পাওয়া যায়৷
সিবিআইয়ের অফিসারেরা ওখানেই অশোক ওরফে ছোটকা নামে এক স্থানীয় বাসিন্দাকে দেখতে পান৷ ওই অফিসে বসেই সে এই কাজকর্ম পরিচালনা করছিল৷ বেশ কয়েকজন যাত্রীর কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায় প্রতিবার কাস্টমসের চেকিংয়ের কাজ যাতে কোনও রকম ঝামেলা ছাড়া করে দেওয়া যায়, সে জন্য তাদের থেকে জনপ্রতি ৩০ টাকা করেও নেওয়া হত৷ সেই টাকাও ছোটকার মাধ্যমে জমা পড়ত ওই তিনটি অ্যাকাউন্টে, যা পরে ভাগ করা হত অন্যদের মধ্যে৷ তল্লাশিতে সিবিআইয়ের কর্তারা পুরো বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই একাধিক কাস্টমস অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে৷