অ্যাপশহর

দু’শোর প্রেসিডেন্সির ঠাঁই ১০০-রও পরে

প্রাক্তনী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুগত মারজিত আবার বলেন, ‘উপাচার্য যা বলছেন তা ফেলে দেওয়া যায় না। তা ছাড়া, প্রেসিডেন্সি তৈরির সময় শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি দায়সারা ও ত্রুটিপূর্ণ সারা হয়েছিল। যার প্রভাব অনেকদিন প্রতিষ্ঠানকে ভুগতে হবে। সে সময় আমি উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ছিলাম প্রচুর অভিযোগ পেয়েছি।’

Ei Samay 12 Jun 2020, 5:03 pm
এই সময়: এ বারও উৎকর্ষ তালিকায় ঠাঁই পেল না প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা নিয়ে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হওয়া দু’শো বছরের প্রাচীন প্রেসিডেন্সির বারবার এমন ফলাফল নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভিতরে ও বাইরে তুমুল সমালোচনা। দেশের সেরা ১০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে কলকাতা ও যাদবপুর যথেষ্ট ভালো জায়গা করে নিতে পারলেও প্রেসিডেন্সি রয়েছে ১০১ থেকে ১৫০-র মধ্যে কোনও একটি স্থানে।
EiSamay.Com presidency
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়


কেন পারছে না প্রেসিডেন্সি? বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, অভিজ্ঞ শিক্ষকের অভাব, বর্তমান কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার মান সম্পর্কে প্রাক্তনী এবং সমাজের বিশিষ্টদের দৃষ্টিভঙ্গি, গবেষণা ক্ষেত্রে পাবলিকেশন এবং যথার্থ পিএইচডি স্কলার না থাকা, এমফিলের মতো কোর্স না থাকা ইত্যাদির প্রভাব পড়ছে জাতীয় র৵াঙ্কিংয়ে। পড়ুয়াদের প্লেসমেন্ট বা চাকরি পাওয়ার তথ্যও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সঠিক ভাবে থাকছে না। তা ছাড়া যত পড়ুয়া ভর্তি হচ্ছেন আর যতজন পাশ করে বেরোচ্ছেন, সেই সংখ্যাও দিনে দিনে কমছে।

উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া এর অনেকগুলিই মেনে নিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘দেখতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স মাত্র ৬ বছর। কী করে একটা ছ’বছরের প্রতিষ্ঠান ৭০-৮০, এমনকী দু’শো বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পারবে?’ উপাচার্যের বক্তব্য, ২০১৫ সালে প্রথম পিএইচডি ব্যাচ ঢুকেছে। গত বছর তাঁদের কয়েকজন ডিগ্রি পেয়েছেন। অনুরাধা বলেন, ‘যাদবপুর, কলকাতা, কল্যাণী, জেএনইউয়ের কত একর জমি! আমাদের সেটাও নেই। প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনী নোবেল পেয়েছেন কি না তা তো আর র৵াঙ্কিং দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচার করা হচ্ছে না!’

যদিও প্রাক্তনীদের প্রশ্ন, ২০৩ বছরের প্রেসিডেন্সিকে নিজের সুবিধার জন্য কেন এ ভাবে ছ’বছর বলা হবে? সে কথা বলেও কলেজের প্রাক্তন ছাত্র (অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়) যখন নোবেল পান, তখন তাঁকে র৵াঙ্কিংয়ের জন্য ধরার আশা কেন করছেন উপাচার্য? প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন উপাচার্য মালবিকা সরকার বলেন, ‘২০১৪ সালের আগে পর্যন্ত দেশ-বিদেশ থেকে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁরা নানা কারণে ২০১৪-র পর থেকে একে ছেড়ে চলে গিয়েছেন।’

গত কয়েক বছরে আচার্য জগদীশ বসু চেয়ার প্রফেসর ছেড়ে চলে গিয়েছেন পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক সব্যসাচী ভট্টাচার্য। ছেড়ে গিয়েছেন সোমক রায়চৌধুরী। চলে গিয়েছেন আরও অনেকে। সব্যসাচীর কথায়, ‘সেরা ১০০-র মধ্যে প্রেসিডেন্সি নেই শুনে খারাপ লাগলেও বিস্মিত হচ্ছি না। কারণ সেখানে শিক্ষার আদর্শ বলে কিছু ছিল না।’ একই আক্ষেপের অনুরণন প্রাক্তনী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সরকারি আমলা জহর সরকারের বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘প্রাচুর্য, অর্থ প্রচুর দিয়েছে সরকার। কিন্তু নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তাঁরা কেবল আনুগত্য দেখেছেন।’জহরের বক্তব্য, ‘বর্তমান উপাচার্য ও তাঁর লোকজন ঘরবাড়ি, পর্দা আর দেওয়ালের রঙ পরিবর্তনে ব্যস্ত। আসল বিষয়ে নজর দেওয়া হয়নি।’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল