অ্যাপশহর

দ্রুতই কাজ শুরু করবে বসিরহাট কমিশন

বসিরহাট-বাদুড়িয়ার ঘটনার তদন্তে বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

EiSamay.Com 10 Jul 2017, 10:09 am
এই সময়: বসিরহাট-বাদুড়িয়ার ঘটনার তদন্তে বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর রাজ্যে এটি ১৩তম বিচারবিভাগীয় কমিশন , যার নেতৃত্ব দেবেন অবসরপ্রান্ত বিচারপতি সৌমিত্র পাল৷ কোন শক্তি এই ঘটনার পিছনে রয়েছে তা খুঁজে প্রকাশ্যে আনাই এই কমিশনের উদ্দেশ্য৷ মুখ্যমন্ত্রী চান , দ্রুত কাজ শুরু করে এই কমিশন প্রকাশ্যে আনুক, বসিরহাট -বাদুড়িয়ার ঘটনার পিছনে কাজ করেছে কোন শক্তি৷ রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে’র কথায় , ‘ইতিমধ্যেই কমিশন গঠনের বিজ্ঞন্তি প্রকাশিত হয়েছে৷ দ্রুত কমিশনের ঠিকানা ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ ’
EiSamay.Com in the investigation of the incident of basirhat badruya the judicial commission was formed by mamata banerjee
দ্রুতই কাজ শুরু করবে বসিরহাট কমিশন


রাজনৈতিক মহলের মতে, আগের ১২টি বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ে বাদুড়িয়া -বসিরহাটের ঘটনার তদন্তে গঠিত বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের গুরুত্ব অনেক বেশি৷ কারণ , এর সঙ্গে উগ্র মৌলবাদের তত্ত্ব জড়িয়ে রয়েছে৷ সরাসরি মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি ও তার সহযোগী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে৷ ক্ষুণ্ণ হয়েছে জাতীয় সংহতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রশ্নে বাংলার সুনামও৷ গত ৬ বছরে রাজ্যে ১২টি বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করা হয়েছে৷ কিন্ত্ত সরকার হাতে পেয়েছে মাত্র চারটি কমিশনের রিপোর্ট৷

প্রথম জমা পড়েছিল এমএলএ হস্টেলে সিপিএম বিধায়ক মোস্তাফা বিন কাশেমের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত -রিপোর্ট৷ বিচারপতি ডিপি সেনগুপ্ত এই কমিশনের দায়িত্বে ছিলেন৷ তা বিধানসভায় পেশও করেছিল সরকার৷ কমিশন গঠনের এক বছরের মধ্যে সরকারের হাতে এসেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের বিডিও কল্লোল শূরের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে অবসরপ্রান্ত বিচারপতি গীতেশরঞ্জন ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের রিপোর্ট৷ ২০১১ সালে ৪ নভেম্বর এই কমিশন গঠনের কথা ঘোষণা করা হয়৷ ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর রিপোর্ট জমা পড়ে৷ ২১ জুলাইয়ের ঘটনা নিয়ে অবসরপ্রান্ত বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত বিচারবিভাগীয় কমিশন ২০১২ সালের ২৩ জুলাই কাজ শুরু করে ২০১৪ -র ২৯ ডিসেম্বর রিপোর্ট পেশ করে৷

যদিও এই রিপোর্ট সরকার গ্রহণ করেছে কি না , তা আজও জানা যায়নি৷ যেমন রাজ্য সরকারের কাছে পেশ করা হলেও জানা যায়নি , সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে গঠিত অবসরপ্রান্ত বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট৷ যদিও ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর রাতে কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে , কার্যকালও বাড়ানো হয়নি৷ আবার আমরির অগ্নিকাণ্ডে গঠন করা বিচারবিভাগীয় কমিশন ২০১২ সালের ১ জুন কাজ শুরু করলেও রিপোর্ট আজও জমা পড়েনি৷ ২০১২ সালে নভেম্বরে নদিয়ার তেহট্টে এসডিপিও -র বাড়ির সামনে বিক্ষোভে পুলিশের গুলি চালনার ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের কাজ জায়গার অভাবে অনেক দেরিতে শুরু হয়ে আজও শেষ হয়নি৷ সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ড , কাশীপুর -বরাহনগর গণহত্যা , নিউ টাউন জমি কেলেঙ্কারি , আনন্দমার্গী হত্যাকাণ্ড , পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় ১৯৯৯ সালে আদিবাসীদের মহাহুল উত্সবে লরি চাপা পড়ে ২৩ জনের মৃত্যু নিয়ে গঠিত অবসরপ্রান্ত বিচারপতি নিখিলনাথ ভট্টাচার্য কমিশনের রিপোর্টও জমা পড়েনি৷

প্রতিটি তদন্তের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে সাক্ষীর অভাবই৷ একমাত্র নিউ টাউন জমি কেলেঙ্কারির তদন্তেই ৮৬০টি অভিযোগ জমা পড়েছে , কিন্ত্ত যার মধ্যে দু’শোর কিছু বেশি শুনানি এখনও পর্যন্ত করা যায়নি৷ ঘটনা হল , এই দীর্ঘসূত্রতায় বিরক্ত মমতাও৷ দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েই তিনি জানতে চেয়েছিলেন , এই সব বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের কাজ কতটা এগিয়েছে৷ আগের ১২টি বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ে বাদুড়িয়া -বসিরহাটের ঘটনার তদন্তে গঠিত বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের গুরুত্ব অনেক বেশি৷ কারণ , এর সঙ্গে উগ্র মৌলবাদের তত্ত্ব জড়িয়ে রয়েছে৷ সরাসরি মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি ও তার সহযোগী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে৷ ক্ষুণ্ণ হয়েছে জাতীয় সংহতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রশ্নে বাংলার সুনামও৷

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল