অ্যাপশহর

১০৮ অপরাজিতায় পুজো পাখিরা পরিবারে

অপরাজিতার পাশাপাশি এই পুজোর আরেক বৈশিষ্ট পরিবারের সদস্যদের ধুনুচি নাচ। তা দেখতে পাখিরা বাড়ির মণ্ডপে জড়ো হন, আশপাশের এলাকার বহু মানুষ। দশমীর ভাসানকে লক্ষ্য রেখে এখন পাখিরা বাড়ির ঠাকুরদালানে নিয়ম করে চলছে ধুনুচি নৃত্যের অনুশীলন।

EiSamay.Com 28 Sep 2019, 2:15 pm
দিব্যেন্দু সরকার  তারকেশ্বর
EiSamay.Com pakhira mandir durga puja


অপরাজেয় থাকার মনোস্কামনায় অপরাজিতা ফুল! তারকেশ্বরের পাখিরা পরিবারের বিশ্বাস, মা দুর্গাকে ১০৮টি অপরাজিতা ফুল দিয়ে পুজা করলে জীবনে পরাজয়ের মুখ দেখতে হবে না! অপরাজিতার পাশাপাশি এই পুজোর আরেক বৈশিষ্ট পরিবারের সদস্যদের ধুনুচি নাচ। তা দেখতে পাখিরা বাড়ির মণ্ডপে জড়ো হন, আশপাশের এলাকার বহু মানুষ। দশমীর ভাসানকে লক্ষ্য রেখে এখন পাখিরা বাড়ির ঠাকুরদালানে নিয়ম করে চলছে ধুনুচি নৃত্যের অনুশীলন। আর সেই সঙ্গে আনুষঙ্গিক সংগীত পরিবেশনের প্রস্তুতি।

পুজোর চার দিন হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় এই বাড়িতে। থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রতিযোগিতাও। বিসর্জনে হয় পরিবারের ঐতিহ্যবাহী ধুনুচি নাচ। এক সময় এই পরিবারের পাট এবং চালের ব্যবসা ছিল দেশ জুড়ে। ব্যবসার সুবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে পাখিরা বাড়ির নাম। দিল্লি কালীবাড়ি, সিমলা কালীবাড়ি, গয়ার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মতো নানা প্রতিষ্ঠান আর আশ্রমে ‘অবদান’ রয়েছে পাখিরা পরিবারের। এক সময় ভিন রাজ্য থেকে ভক্তদের সমাগম ঘটত এই দুর্গাপুজোয়। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়, রামকুমার চট্টোপাধ্যায়, প্রহ্লাদ ব্রহ্মচারী মতো ব্যক্তিত্ব এসেছেন পাখিরা বাড়ির দুর্গা দর্শনে। পরিবারের প্রয়াত কর্তা বেচারাম পাখিরা প্রায় ৮০ বছর আগে দুর্গাপুজার প্রচলন করেছিলেন। আগে সরস্বতী পুজোর দিন একই চালায় লক্ষ্মী এবং সরস্বতী পুজা শুরু হয়ছিল।

বেচারামের মৃত্যুর পরে সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় সব পুজা। সমাজে গুজব রটে যায়, পাখিরা বাড়িতে দেবীর কোপ পড়েছে! পরবর্তী কালে পাখিরা পরিবারের নববধূ অর্চনা স্বপ্নাদেশ পান মায়ের। তারপর ফের একচালায় দুর্গাপুজার সূচনা হয়। গত ২১ বছর ধরে সেই পরম্পরা বজায় রয়েছে! দশমীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় ১০৮টি অপরাজিতা ফুল দিয়ে মা দুর্গার পুজো হয়। পরিবারের প্রবীণ সদস্য, গোবিন্দ পাখিরা বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পুজা শুধু পরিবার-পরিজনেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। গ্রামের সীমানা ছাড়িয়ে গোটা তারকেশ্বরবাসীর পুজোয় পরিণত হয়েছে।’ তিনি জানান, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ-রামকুমারদের গল্পে-গানে-আড্ডায় একসময় মাতোয়ারা হয়ে উঠত তাঁদের বাড়ির বৈঠকখানা!

বাড়ির এক সদস্য সুজাতা পাখিরা বলেন, ‘আমি ঠাকুমা-শাশুড়ির কাছে মুখে গল্প শুনেছি আগে এই বাড়িতে একই চালে লক্ষ্মী ও সরস্বতী পুজো হত। আগে মাটির খড়ের চালাঘর ছিল। পরে আমার দাদাঠাকুর বেচারাম এই ঠাকুর দালানটি করেছিলেন।’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল