অ্যাপশহর

পেট্রল-ডিজেলের দামের ছ্যাঁকায় ঘোড়সওয়ার সৌদি ফেরত অলোক

করোনায় সর্বস্ব হারিয়ে দেশে ফিরে বেকার অলোক। সৌদির পুরনো শখ আর তরল সোনার বাড়ন্ত দামের চোটে নিজের বাড়ি ফিরেই কিনে ফেললেন এক নয় দু-দুটি ঘোড়া। Petrol Diesel Price Hike-এর বাজারে রাজু-মুশকানই ভরসা।

Lipi 4 Dec 2021, 4:46 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ‘রাজু চলে রাজু, আপনে মস্তিমে তু। কোই জিয়ে ইয়া মরে কেয়া হামকো বাবু"... সত্তর দশকের হিন্দি সিনেমা আজাদ এর সেই জনপ্রিয় গানটির কথা মনে পড়ে? ধর্মেন্দ্র তার প্রিয় ঘোড়া রাজুকে নিয়ে মনের আনন্দে ঘুরছেন। পঞ্চাশ বছর পরেও রাজুর পিঠে সওয়ার হয়ে ঘুরছেন ব্যান্ডেলের বাসিন্দা অলোক রায়। তবে চরিত্র পাল্টেছে।
EiSamay.Com c222c7a2-d5ad-4232-bda9-4982b481cd5c


তিনি কিনে ফেলেছেন দু’দুটো ঘোড়া। নাম দিয়েছেন রাজু আর মুশকান। মোটর বাইক রেখে দিয়েছেন বাড়িতে। এখন ঘোড়ায় চেপেই সমস্ত কাজকর্ম করেন। তিনি হলেন ব্যান্ডেল বলাগড়ের বাসিন্দা অলোক রায়। বছর পয়ঁত্রিশের এই যুবক এক সময় কর্মসূত্রে মধ্যপ্রাচ্যের একটি শহরে ছিলেন দীর্ঘদিন। সৌদিতে একটি কোম্পানিতে ভারী যন্ত্রাংশ পরিচালনার কাজ করতেন। গতবছর বাবা মা দুজনেই করোনায় আক্রান্ত হলে সব ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

কিন্তু, হঠাৎ ঘোড়া কেনার শখ কেন? জিজ্ঞাসা করতে অলোক জানান,‘এই বাজারে চাকরি আশা ছেড়ে দিয়ে স্বনির্ভর ব্যবসা করাই বেশি ভাল বলে আমার মনে হয়েছে। আমি যেখানে চাকরি করতাম সেই কোম্পানির মালিক ছিলেন একজন শেখ। তার অনেক ঘোড়া ছিল। আমিই তাদের দেখভাল করতাম। ঘোড়ায় চড়াও শিখে যাই সেখান থেকে। দেশে ফেরার পর বেকার হয়ে বসে ছিলাম। তখনই আমার ঘোড়া কেনার কথা মাথায় আসে।’

'বুড়ো বয়সে ভীমরতি!' শিশির অধিকারীকে আক্রমণ অখিল গিরির

শুধু তাই নয়, অলোকের কথায়, বিশ্বে উষ্ণায়ন বাড়ছে। এর ফলে আমরা কেউ চিরস্থায়ী নই। বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে বাঁচবার জন্য দূষণ মুক্ত পৃথিবী চাই। তা ছাড়া পেট্রোল ডিজেলের যা দাম বাড়ছে তাতে গাড়ি চালানো খুব ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে। ঘোড়া থেকে দূষণ ছড়ানোর কোনও প্রশ্নই নেই। সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব। তাই আমার মনে হয় আগামী দিনে যানবাহন হিসেবে ঘোড়াই ভরসা। সেই উদ্দেশ্যেই ঘোড়া কেনা।

কয়েকমাস আগে জন্মাষ্টমীর দিন হেস্টিংস থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে একটি ঘোড়া কেনেন। নাম দেন রাজু। এরপর কালীপুজোর দিন সাড়ে ৩ লাখ দিয়ে মারওয়া প্রজাতির একটি স্ত্রী ঘোড়া কিনে আনেন অলোক। নাম রাখেন মুশকান। দুই ঘোড়া নিয়ে বহাল তবিয়তে দিন কাটাচ্ছে অলোক।

স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে এর মধ্যেই অলোক খুলে ফেলেছেন একটি ‘হর্স রাইডিং ক্লাব’। সেখানে ঘোড়ায় চড়া শিখতে আসেন যুবক যুবতীরা। আগামী দিনে বাণিজ্যিক ভাবে ঘোড়ার গাড়ি বের করার ইচ্ছে আছে অলোকের। আর এই কাজে পরিবারকে পাশে পেয়েছেন তিনি। দুই মেয়েই ঘোড়াগুলিকে পরিচর্যা করে। স্ত্রী কলকাতায় চাকরি করলেও অবসর সময়ে স্বামীর সঙ্গে সহযোগিতা করেন।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল