অ্যাপশহর

নাতির আবদারে স্বামীর ভিটে ছেড়ে কপ্টারে উঠলেন খানাকুলের শতায়ু

হুগলির (Hooghly) খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতি (Flood Situation)। জল থইথই করলেও স্বামীর ভিটেমাটি ছেড়ে যেতে নারাজ শতায়ু। শেষমেশ নাতির আবদারে হেলিকপ্টারে উঠছেন খানাকুলের জাহ্নবী সামন্ত।

Lipi 3 Aug 2021, 10:29 am

হাইলাইটস

  • ঘরে জল থইথই করলেও, দু-দিন ধরে খাবার না জুটলেও স্বামীর ভিটেমাটি ছাড়তে নারাজ খানাকুলের ঠাকুরানিচকের ১০১ বছরের জাহ্নবী সামন্ত
  • পরিবারের সকল সদস্য ঘর ছেড়ে আরামবাগ ফ্লাড সেন্টারে উঠে গেলেও স্বামীর ভিটেমাটি আঁকড়ে পড়ে থাকেন এই বৃদ্ধা
  • উদ্ধারকারী দলের কাছে শতবর্ষ পেরোনো এই বৃদ্ধার করজোড়ে আবেদন, স্বামী-শ্বশুরের ভিটেতেই মরতে চাই’
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক : স্বামী মারা গিয়েছেন ৫০-৬০ বছর আগে। তবু স্বামীর ভিটেমাটি-ই স্বর্গ! তাই ঘরে জল থইথই করলেও, দু-দিন ধরে খাবার না জুটলেও স্বামীর ভিটেমাটি ছাড়তে নারাজ খানাকুলের ঠাকুরানিচকের ১০১ বছরের জাহ্নবী সামন্ত। পরিবারের সকল সদস্য ঘর ছেড়ে আরামবাগ ফ্লাড সেন্টারে উঠে গেলেও স্বামীর ভিটেমাটি আঁকড়ে পড়ে থাকেন এই বৃদ্ধা। স্বামী-শ্বশুরের ভিটেতেই যে শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে চান তিনি। তাই উদ্ধারকারী দলের কাছে শতবর্ষ পেরোনো এই বৃদ্ধার করজোড়ে আবেদন, স্বামী-শ্বশুরের ভিটেতেই মরতে চাই।’
শনিবার থেকে কংসাবতী ব্যারেজের ছাড়া জল ও নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে হুগলির আরামবাগ, খানাকুল সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। পরিস্থিতি এমনই যে, প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে নামে সেনাবাহিনী। রবিবার খানাকুলের ২৭ জনকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। যার মধ্যে রয়েছেন ঠাকুররানিচকের শতায়ু জাহ্নবী সামন্তর পরিবারও। ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল জাহ্নবীদেবী। আর মা'কে দেখাশোনার জন্য জল থইথই ঘরেতেই পড়েছিলেন জাহ্নবীদেবীর ছেলে। রবিবার সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার নিয়ে এসেও তাঁদের নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়।

কিন্তু, এভাবে তো কোনও মানুষকে মরতে দেওয়া যায় না! আসলের চেয়ে সুদের দাম অনেক বেশি! সোমবার দুপুরে জাহ্নবীদেবীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর নাতিকে ফ্লাড সেন্টার থেকে হেলিকপ্টারে করে তাঁদের জল থইথই বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে উদ্ধারকারী দল। জলের মধ্যে নাতি থাকবে, এটা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেননি জাহ্নবীদেবী। ফ্লাড সেন্টারে যাওয়ার ব্যাপারে নাতির আবদারও ফেলতে পারেননি শতবর্ষ পেরোনো ঠাকুমা। অবশেষে হেলিকপ্টারে করে নাতির সঙ্গে ভিটেমাটি ছাড়েন জাহ্নবীদেবী। তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।


৭ বছরের বালকের বুদ্ধিতে বড় দুর্ঘটনা এড়াল ক্যানিং লোকাল

তবে গত দু-দিন ধরে না খেতে পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন জাহ্নবীদেবী। তাই চপার থেকে নামিয়ে পল্লিশ্রী এলাকায় হেলিপ্যাড চত্বরেই এই বৃদ্ধাকে খাবার খাইয়ে সুস্থ করার ভার নেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। কিছুটা সুস্থ করার পরই তাঁকে আরামবাগ ফ্লাড সেন্টারে পাঠায় সেনাবাহিনী। তবে বাড়ি ছে়ড়ে এলেও শেষ নিঃশ্বাস স্বামীর ভিটেতেই ফেলতে চান বলে করজোড়ে উদ্ধারকারী দলের কাছে আবেদন জানিয়েছেন শতবর্ষ পেরোনো এই বৃদ্ধা।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল