অ্যাপশহর

কনকনে শীতে স্নান করার নিদান স্ত্রীয়ের! ক্ষোভে- আতঙ্কে গৃহত্যাগী স্বামী

শীতের রাতে জোর করে স্নান করানোর জেরে ক্ষোভে-আতঙ্কে গৃহত্যাগ চিকিৎসক স্বামীর। রাজ্যে ছেড়ে পাড়ি দিলেন ভিন রাজ্যে। ১০ দিন পর পুলিশের তৎপরতায় পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন বৃদ্ধ চিকিৎসকের।

Lipi 25 Jan 2022, 1:46 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা বড় বালাই! স্ত্রীর কড়া হুকুম ছিল চেম্বার করে এসে বাড়ি ঢোকার সময় স্নান করে ঢুকতে হবে। রাতদুপুরে স্নানের নিদান একেবারে নাপসন্দ ছিল বনগাঁর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কান্তি চক্রবর্তীর। বয়সও ৬২ হতে চলল। এই ঠান্ডায় রাতে স্নান করা যায়? রাগে গৃহত্যাগী হয়েছিলেন তিনি। ভিন রাজ্য ঘুরে আসার পর অবশেষে বৃদ্ধ চিকিৎসকের সঙ্গে পরিবারের পুনর্মিলন করাল ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ। যেন প্রায় ১০ দিন ধরে চলা টানটান চিত্রনাট্যের যবনিকা পড়ল ভদ্রেশ্বর থানায়।
EiSamay.Com istockphoto-482858617-612x612
Representative Image


পুলিশ জানায়, সোমবার ভোররাতে মানকুন্ডু স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কান্তি চক্রবর্তীকে। চেন্নাই থেকে ফিরেছিলেন তিনি। নিজের মোবাইল নম্বর ছাড়া কারোরই ফোন নম্বর মনে ছিল না তাঁর। হাতে মোবাইলও ছিল না। পকেটে টাকাও প্রায় ফুরিয়ে এসেছিল। ফলে পরিবারের কারোর সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। ভদ্রেশ্বর থানার সেকেন্ড অফিসারের তৎপরতাতেই বাড়ি ফিরে গেলেন কান্তি চক্রবর্তী। তাঁর বড় ছেলে সোমবার দুপুরে ভদ্রেশ্বর থানায় এসে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন।

করোনা-আতঙ্কের জেরেই রাতদুপুরে চিকিৎসক কান্তিবাবুকে স্নান করার নিদান দিতেন তাঁর স্ত্রী। বাড়িতে ছোট ছেলে অসুস্থ। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি মা। কিন্তু স্ত্রীর এই নিদান কান্তিবাবুর কাছে অসহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই বিরক্ত হয়ে রাগে গত ১৫ জানুয়ারি গৃহত্যাগী হন তিনি। কান্তিবাবু জানান, ঘর ছেড়ে তিনি সোজা পাড়ি দিয়েছিলেন চেন্নাই। কিন্তু ,পরিবার ছেড়ে সেখানে থাকতে পারেননি। তাই পুনরায় রাজ্যে ফিরে আসেন। তবে লজ্জায়, রাগে-অভিমানে বাড়িতে যেতে পারেননি। রবিবার রাতে হাওড়া-ব্যান্ডেল মেন লাইনের মানকুন্ডু স্টেশনে ঠাঁই নেন তিনি। তারপর ভদ্রেশ্বর থানার সেকেন্ড অফিসার মহেশ্বর মাজি তাঁকে উদ্ধার করেন।

'ট্যাঁকের জোর আছে?' গাড়ি কিনতে এসে অপমানের সপাট জবাব কৃষকের

ঠিক যেন চিত্রনাট্য! ঘড়িতে তখন রাত দুটো। হিসেব মতো সোমবার পড়ে গিয়েছে। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ছে। ভদ্রেশ্বর থানার সেকেন্ড অফিসার মহেশ্বর মাজি জিপ নিয়ে মানকুন্ডু স্টেশন রোডে টহল দিচ্ছেন। হঠাৎই তাঁর নজরে পড়ে, মানকুন্ডু স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের নীচে আধভেজা অবস্থায় এক প্রৌঢ় দাঁড়িয়ে কাঁপছেন। বিষয়টি উপেক্ষা না করে মহেশ্বরবাবু নিজে জিপ থেকে নেমে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানান কান্তিবাবু। তখন মহেশ্বরবাবু জিপে করেই ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন এবং বিশ্রামের ব্যবস্থা করেন। এরপর সকাল হতেই কান্তিবাবুর মোবাইল নম্বরেই ফোন লাগান পুলিশ আধিকারিক। মোবাইলটা বাড়িতেই ছিল। তাঁর স্ত্রী ফোন রিসিভ করেন এবং কান্তিবাবু ১৫ তারিখ থেকে নিখোঁজের কথা জানান। তিনি ভদ্রেশ্বর থানায় রয়েছেন জানালে আবেগাপ্লুত স্ত্রী স্বামীকে ফেরাতে ছেলেকে পাঠানোর কথা জানান। তারপর সোমবার দুপুরে কান্তিবাবুর বড় ছেলে অর্পণ ভদ্রেশ্বর থানায় গিয়ে বাবাকে ফিরিয়ে নিয়ে যান। বাবার খোঁজে বনগাঁ থানায় নিখোঁজ ডায়ারিও করেছিলেন বলে তিনি জানান।

রাগে এভাবে গৃহত্যাগ করে যে ঠিক করেননি তা টের পেয়েছেন বৃদ্ধ চিকিৎসক। আর তাঁর স্ত্রীও এবার করোনা দূর করতে ভেবে-চিন্তে নিদান দেবে বলেই মনে করছেন ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ আধিকারিকেরা।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল