অ্যাপশহর

হরকাবাহাদুর কি আন্দোলন থেকে সরলেন, জল্পনা

হরকাবাহাদুর ছেত্রী কোথায়? মোর্চা ত্যাগ করলেও তিনি পাহাড়ের সবচেয়ে পরিচিত মুখ বাঙালির কাছে৷

Ei Samay 17 Jul 2017, 7:11 pm
সঞ্জয় চক্রবর্তী ■ শিলিগুড়ি
EiSamay.Com harka bahadur chettri withdrew himself from the movement of gorkhaland
হরকাবাহাদুর কি আন্দোলন থেকে সরলেন, জল্পনা


হরকাবাহাদুর ছেত্রী কোথায়? মোর্চা ত্যাগ করলেও তিনি পাহাড়ের সবচেয়ে পরিচিত মুখ বাঙালির কাছে৷ সজ্জ্বন , শিক্ষিত মানুষটিতে গত এক সন্তাহ ধরে আর কোনও কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না৷ তাঁর দু’টি মোবাইলই সুইচ অফ৷ তাই জল্পনা ছড়িয়েছে, হরকাবাহাদুর কি গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন ? কিন্ত্ত সরে দাঁড়ানোর কারণই বা কী ? তিনি দীর্ঘদিন আলাদা রাজ্যের দাবির চেয়ে পাহাড়ের উন্নয়নকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন৷ তা নিয়ে মতবিরোধের কারণে কালিম্পংয়ের এই প্রাক্তন বিধায়ক মোর্চা ছেড়ে নতুন দল জন আন্দোলন পার্টি তৈরি করেছিলেন৷ কিন্ত্ত জুনের দ্বিতীয় সন্তাহে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মোর্চা যখন জিটিএ ছেড়ে গোর্খাল্যান্ড আদায়ের ডাক দেয় , হরকাবাহাদুর তখন সেই দাবিকে সমর্থন করে প্রত্যক্ষ আন্দোলনের নেতৃত্বেই চলে আসেন৷

তার পর আচমকা গত এক সন্তাহ ধরে তাঁর আন্দোলনে অনূপস্থিতি নানা জল্পনার জন্ম দিয়েছে৷ তাঁর তৈরি জন আন্দোলন পার্টির দার্জিলিংয়ের নেতা অমর লামা অবশ্য দাবি করেছেন যে হরকাবাহাদুর ছেত্রী কালিম্পংয়েই রয়েছেন৷ তিনি অসুস্থ বলে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না৷ যদিও পাহাড়ের অধিকাংশ নেতাই তাঁর বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানেন না৷ গোর্খাল্যান্ড মুভমেন্ট কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তথা জিএনএলএফ নেতা নীরজ জিম্বা বলেছেন , ‘আমি যতদূর জানি , দিল্লির কর্মসূচির পরে হরকাবাহাদুর ছেত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন৷ তার পরে উনি কোথায় , বলতে পারব না৷ ’ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন , ‘হরকাবাহাদুর ছেত্রী সম্পর্কে আমি কিছু জানি না৷ ’ এতে জল্পনা শুরু হয়েছে যে তিনি গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন৷

এর আগে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন৷ গত বিধানসভা নির্বাচনে কালিম্পং কেন্দ্রে তাঁকে সমর্থন করেছিল তৃণমূল৷ সেই যোগসূত্র থাকার কারণেই কি হরকাবাহাদুর আন্দোলন থেকে সরে গেলেন ? পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলে অবশ্য আলোচনা চলছে মোর্চার হিংসাত্মক আন্দোলনে বিরক্ত হয়েই তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন৷ পৃথক রাজ্যের দাবিতে চলতি আন্দোলনে পাহাড় জুড়ে এখন তাণ্ডব চলছে৷ সরকারি সম্পত্তিতে অগ্নিসংযোগ , হামলা -ভাঙচুর তো চলছেই , আক্রান্ত হচ্ছে পুলিশও৷ পাহাড়ের বিদ্যুত্ উত্পাদন কেন্দ্রগুলিকেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ সব ক’টি ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে , মোর্চা কর্মীদের একাংশ এই হাঙ্গামায় জড়িত৷ মোর্চা নেতারা সেই বিশৃঙ্খল আচরণে রাশ টানার কোনও চেষ্টা তো দূরের কথা , এর নিন্দাও করেননি৷

এতে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন প্রাক্তন কলেজ শিক্ষক হরকাবাহাদুর৷ হিংসাত্মক আন্দোলনে তাঁর বরাবরই আপত্তি ছিল৷ গত ৩০ জুন কালিম্পংয়ে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠকে জন আন্দোলন পার্টির প্রতিনিধিরা দলের সেই অবস্থানের কথা জানিয়েও দেন৷ সে সময় হরকাবাহাদুরও হুমকি দিয়েছিলেন যে আন্দোলনের নামে এমন গুন্ডামি চলতে থাকলে তাঁর দল আন্দোলন থেকে সমর্থন তুলে নেবে৷ তার পরেও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি৷ রোজই কোনও না -কোনও ভাবে হাঙ্গামা চলছে পাহাড়ে৷ নতুন করে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার পর কিন্ত্ত তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার শুরু করে দিয়েছিলেন৷ তার পরও আন্দোলনের নামে এমন তাণ্ডবে ব্যাথিত হয়ে হরকাবাহাদুর কোনও বিতর্কে না -গিয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিলেন বলে জল্পনা চলছে পাহাড়ে৷

তিনি ইতিমধ্যে হওয়া পাহাড়ের দু’টি সর্বদলীয় বৈঠকে ছিলেন না৷ জিএনএলএফ নেতা নীরজ জিম্বা ও মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি তাঁর অবস্থান জানেন না বলায় জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে৷ জন আন্দোলন পার্টির পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে , শুধু হরকাবাহাদুর নন , মোর্চা নেতা বিমল গুরুংকেও তো মিছিল -মিটিংয়ে দেখতে পাওয়া যায় না৷ তিনিও কয়েকদিন ধরে জনসমক্ষে আসছেন না৷ পাতলেবাসেই তিনি ঘাঁটি গেড়েছেন৷ ওই এলাকায় কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না৷ কেবলমাত্র দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারাই সেখানে যেতে পারছেন৷ তাহলে প্রকাশ্যে না -এলেও হরকাবাহাদুরকে নিয়ে এমন বিতর্কের কারণ কী ? তাতে অবশ্য জল্পনায় রাশ পড়ছে না৷

মিরিকে মোর্চা সমর্থকদের গুণ্ডামি দেখুন

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল