অ্যাপশহর

Chop Silpo in West Bengal: ২৩ বছর ধরে বাড়েনি দাম! মাত্র ১ টাকায় আজও মিলছে চপ, জানেন কোথায়?

এমন দুর্মূল্যের বাজারে মাত্র এক টাকায় মিলছে চপ থেকে দোপেঁয়াজি। ২৩ বছরেও বাড়েনি দাম।

Produced byএলিনা দত্ত | Lipi 25 Jan 2023, 7:44 pm
West Bengal Trending News এই দুর্মূল্যের বাজারে ঊর্ধমুখী সমস্ত কিছুর দাম। পাঁচ টাকা দিলেও চপ মেলে বাতাসা সাইজের। এমন অগ্নিমূল্যের বাজারে এক টানা ২৩ বছর ধরেও বাড়েনি দাম। এমন দামের ছ্যাঁকা ধরা বাজারেও মাত্র ১ টাকায় চপ বিক্রি করছেন এক ব্যক্তি। হ্যাঁ, ঠিকই শুনলেন। মাত্র ১ টাকায় চপ। কিন্তু তাঁর স্বাদে কোনও ঘাটতি নেই। শুধু চপ নয়, তিন তিনটি আইটেম- চপ, দোপেঁয়াজি ও বেগুনি। সবই মিলছে মাত্র ১ টাকায়।
EiSamay.Com chop in 1 Rupee


দিন দিন ভোজ্য তেল এবং অন্যান্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে চপের দাম। আগে ৩ থেকে ৫ টাকাতেও একটা বড় চপ পাওয়া যেত। তবে এখন সেসব অতীত। এখন বিভিন্ন জায়গায় চপের দাম বেড়েছে। সাধারণত ৬ থেকে ১০ টাকায় মেলে একটি চপ। কোথাও আবার তার থেকেও বেশি। ফলে ইচ্ছে হলে চপ খেতেও এখন দু'বার ভাবতে হয় অনেককেই। তবে অবিশ্বাস্য হলেও পটাশপুরের এক প্রত্যন্ত গ্রামে এই চপ এখনও পাওয়া যায় মাত্র ১ টাকাতেই।

D.Bapi Biriyani News: জনপ্রিয় বিরিয়ানির দোকানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, মুখ খুললেন ডি.বাপির মালিক

আলু, তেল ইত্যাদির মূল্যবৃদ্ধিকে তোয়াক্কা না করে পটাশপুর ও মংলামাড়ো রাজ্য সড়কের পাশে সরিদাসপুর (পাঁচুড়িয়া) বাসস্টপে একচালা গুমটি দোকানে চপ ভাজেন কৃষ্ণগোপাল মাইতি। বছরের পর বছর ধরে মাত্র ১ টাকাতেই চপ বিক্রি করছেন তারা। বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে এখনও ১ টাকায় চপ পাওয়া যায় এই কথা শুনে অনেকেই অবাক হয়ে যান। অবাক হওয়ার পাশাপাশি কৌতুহল বাড়তেই তাঁরা ছুটে যান কৃষ্ণবাবুর দোকানে দোকানের চপ খেতে। কৃষ্ণগোপালবাবুর তেলেভাজার জনপ্রিয়তার কারণে অনেকের কাছে বাসস্টপটি ‘এক টাকার চপের বাসস্ট্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত।

১ টাকায় কীভাবে চপ বিক্রি করছেন কৃষ্ণবাবু?


মূল্যবৃদ্ধির বাজারে যেখানে সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় সাধারণ মানুষকে। এমনকী, হু হু করে বাড়ছে জিনিসের দাম, সেখানে কী ভাবে মাত্র ১ টাকায় দিনের পর দিন চপ বিক্রি করছেন কৃষ্ণবাবু? এই বিষয়টি অবশ্য খোলসা করে দিয়েছেন তিনি নিজেই। জানিয়েছেন, তাঁর লাভ করাটা লক্ষ্য নয়। তাঁর লক্ষ্য হল মানুষকে খাওয়ানো। তিনি বলেন, "আমাদের এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ চাষবাসের উপর নির্ভরশীল। কেউ কেউ বাইরে শ্রমিকের কাজ করতে যান। যে কারণে প্রত্যেকেরই আর্থিক অবস্থা সংকটজনক।" তাই এই সকল মানুষের কথা ভেবেই তিনি দীর্ঘ ২২ বছরের বেশি সময় ধরে মাত্র ১ টাকাতেই চপ বিক্রি করছেন। কৃষ্ণগোপালবাবু জানান, গোপালসিংপুরে গ্রামের বাড়িতে তাঁর ঠাকুমার তেলেভাজার দোকান ছিল। ঠাকুমার দেখানো পথেই সংসারের হাল ধরতে তেলেভাজা বিক্রি শুরু কৃষ্ণবাবুর। তাঁর ব্যবসার ইউএসপি দাম এক টাকায় বেঁধে রাখা।

Kolkata Best Street Food: বাইকেই তৈরি চিকেন তন্দুরি থেকে কাসুন্দি ভেটকি, বিশেষ চমক বিরা কাবাব! শহরের 'বুলেট কাবাব' চেখে দেখেছেন?

বিয়ে থেকে জামাইষষ্ঠী, এলাকার লোকজন মিষ্টির পরিবর্তে এক টাকার চপ নিয়ে যান। চপ কিনতে ভিড় করেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। একটু সময় পেলে বাসযাত্রীরা তেলেভাজা কিনতে নেমে পড়েন। পথচলতি বা অফিস ফেরত লোকজন গাড়ি থামিয়ে চপ কেনেন। কম টাকায় তেলে ভাজা পাওয়ায় রিকশা চালক থেকে ব্যবসায়ী, এখানে সকালের জলখাবার খান।

আগে ছেলে চণ্ডীচরণ পড়াশোনার ফাঁকে বাবার দোকান সামলাতেন। এখন পুরোপুরি বাবার সঙ্গী। সকাল-বিকেল দোকানে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন পড়ে। একা হাতে সামলান চণ্ডীচরণ। কাঠের আগুনের আঁচে চপ, দোপেঁয়াজি ভাজেন কৃষ্ণগোপালবাবু। তেলেভাজার স্বাদ ও গুণমান বজায় রাখতে নিজের হাতে মশলা ও আলুর পুর তৈরি করেন।

বছরের পর বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে মাত্র ১ টাকায় চপ পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দাদের থেকে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন সকাল বেলায় কৃষ্ণবাবুর দোকান খুলে চপ বিক্রি করতে শুরু করার সাথে সাথে ১০টা বাজলেই সব চপ শেষ হয়ে যায়। আবার তিনি বিকাল বেলায় ৪টের পর দোকান খোলেন। তখনও সন্ধে ৭ টার মধ্যেই সব শেষ। শুধু এলাকার বাসিন্দারাই, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রাম থেকেও মানুষ কৃষ্ণবাবুর দোকানে চপ কিনতে ছুটে আসেন।
লেখকের সম্পর্কে জানুন
এলিনা দত্ত
ডিজিটাল মিডিয়ায় ১১ বছরেরও বেশি সময় কাটিয়ে ফেলেছেন এলিনা। এই সময় ডিজিটাল দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে কাজ করছেন গত আড়াই বছর যাবত। এর আগে কাজ করেছেন News18 বাংলা ওয়েবসাইটে। জেলার খুঁটিনাটি সংবাদ থেকে দেশ দুনিয়ার বিভিন্ন খবর ও অভিনব তথ্যের চর্চায় সর্বদা ব্যাপ্ত থাকেন। এছাড়া ক্রিকেট ও বিনোদন জগৎ নিয়ে তাঁর বিশেষ আগ্রহের কারণে নিত্যনতুন খবর খোঁজা তাঁকে পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে সমৃদ্ধ করে। একজন দক্ষ সংবাদদাতা হিসেবে এলিনার প্রধান উদ্দেশ্য ও অগ্রাধিকার তাজা, বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যবহুল যাচাই করে পাঠকের কাছে দ্রুত পৌঁছে দেওয়া। বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার খিদে তাঁকে মনোযোগী পাঠক করে তুলেছে। ছুটি পেলে ভালোবাসেন সপরিবারে ভ্রমণে যেতে।... আরও পড়ুন

পরের খবর