প্রায় দু-মাস পর কালবৈশাখীর দেখা মিলেছে। কিছুটা স্বস্তি মিলেছে দুর্গাপুর (Durgapur) শিল্পাঞ্চলেও। কিন্তু জলের সমস্যা মেটেনি। বর্তমানে খনি এলাকায় জলের সংকট (Water Crisis) চরমে। বিশেষত মঙ্গলপুর এলাকার কারখানাগুলিতে জলের সমস্যা প্রকট হয়েছে। পাশাপাশি দুর্গাপুর শহরের বিজুপাড়া এলাকা, দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপ (DSP) এলাকাতেও কুয়ো, পুকুরগুলি প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। আর এই সমস্ত সমস্যার অন্যতম কারণ, ভূ-পৃষ্ঠে ক্রমাগত কমছে জলস্তর কমেছে। জলস্তর কমার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদও।
বিশেষজ্ঞদের মতে,খনি এলাকা থেকে শহর ও শিল্পাঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়ার জন্য মানুষই দায়ী। খনি এলাকায় কয়লা তুলে নেওয়ার পর খনিগর্ভগুলিতে বালি ভরে দেওয়া হয় অথবা খালি ফেলে রাখা হয়। এটা জলস্তর নেমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া দুর্গাপুরে একের পর এক বহুতল নির্মাণ হচ্ছে। প্রায় প্রতিটি বহুতলেই সাব মারসাল বসানো হচ্ছে। যা সাধারণত দুর্গাপুর, আসানসোলের মতো খনি-শিল্প এলাকায় একেবারেই প্রযোজ্য নয়। দুর্গাপুর পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ তথা ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপঙ্কর লাহা জলস্তর কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, "জলস্তর (Water Level) নামবেই। অনেকেই অবৈধভাবে ভূ-গর্ভস্থ জল তুলে নিচ্ছে।" এখনই সচেতন না হলে আগামী দিনে ভয়ঙ্কর দিন দেখতে হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জলস্বপ্ন প্রকল্পের আওতায় দুর্গাপুর পুর এলাকায় প্রতিটি বাড়িতে জলের পাইপ লাইন দেওয়া হলেও ঠিকমতো জল আসছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। বিশেষত দুর্গাপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর, ধুবিঘাট, বিজুপাড়া সহ দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপে এই সমস্যা চরমে। পানীয় জল না পেয়ে ইতিমধ্যে বিক্ষোভ শুরু করেছেন এলাকাবাসী। জল সরবরাহের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে দীপঙ্কর লাহা বলেন, "যে সমস্ত জায়গায় জলের সমস্যা রয়েছে সেখানে ওয়াটার ট্যাঙ্ক পাঠাচ্ছি। পাইপলাইনে মেরামতির জন্য কিছু জায়গায় একবেলা জল সরবরাহ বন্ধ থাকছে।" তবে বিজুপাড়া উঁচু এলাকা এবং জলস্তর নেমে যাওয়ার জন্য জল সরবরাহ ঠিকমতো হচ্ছে না বলে তিনি জানিয়েছেন।
যদিও জলস্তর (Water Level) কমে যাওয়ার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ জেলাশাসক (DM) এস অরুণ প্রসাদ। অন্যদিকে, মঙ্গলপুর শিল্পাঞ্চলে জল সংকটের (Water Crisis) কথা তাঁর জানা নেই বলে জানিয়েছেন DM।