অ্যাপশহর

জমি দিতে নারাজ অনেকেই, কয়লাখনি দেউচা-পাঁচামিতে হবেই, অনড় অনুব্রতও

Deocha Pachami -নিয়ে জোর তরজা বাম-তৃণমূলে। বীরভূমের জেলা সভাপতি Anubrata Mondal-এর জোরালো দাবি, যাই হয়ে যাক কয়লাখনি এখানেই হবে। পালটা Sujan Chakraborty -এর প্রশ্ন, সরকার কি জোর খাটাবে?

EiSamay.Com 10 Dec 2021, 9:05 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: 'কয়লাখনি দেউচা-পাঁচামিতে হবেই। হবে এক লাখ বেকারের চাকরি।' শুক্রবার কয়লাখনি সংলগ্ন শেওড়াফুলির মাঠে দলে যোগদানের সভায় একথা বলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি Anubrata Mondal।
EiSamay.Com deocha


দিন কয়েক আগেই BJP ছেড়ে তৃণমূল যোগদান করেছেন সুনীল সোরেন। আদিবাসীদের কাছে গ্রহণযোগ্য ওই নেতাকে তৃণমূলে পেয়ে। উচ্ছ্বসিত তৃণমূল। তারই নেতৃত্বে এদিন ওই সভায় বহু আদিবাসী তৃণমূলে যোগদান করেন। মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত বলেন, ‘সুনীল ভুল করে অন্য দলে গিয়েছিল। খুব ভালো ছেলে। সুনীল আদিবাসীদের উন্নয়ন চায়। আমি ওর সঙ্গে কথা বলেই আদিবাসী উন্নয়নে কাজ করব। এই এলাকায় কয়লাখনি হবেই। এক লাখ বেকারের চাকরি হবে। এক পরিবারে যতগুলো ছেলে থাকবে প্রত্যেকে বাড়ি পাবে। এখানে কেউ বাধা দিতে পারবে না। ২০১০ সালে এই ব্লকই মুখ্যমন্ত্রী Buddhadeb Bhattacharya-কে আটকে দিয়েছিল। এবার এরাই আদিবাসীদের কয়লাখনি গড়তে এগিয়ে আসবে।‘

অন্যদিকে, মানুষ চায় না। সরকার কি জোর করে কয়লা খাদান করবে? প্রশ্ন তুললেন সুজন চক্রবর্তী। ‘আমরা কয়লাখনি গড়তে জমি ছাড়ব না। যে সরকার বেকারদের চাকরি দিতে পরে না। তাদের কাছে এই প্যাকেজ আশা করা যায় না। আমরা যেমন আছি তেমনিই থাকতে চাই।’ শুক্রবার দেউচা পাঁচামি প্রস্তাবিত কয়লাখনি নিয়ে বাম প্রতিনিধি দলের কাছে এমনটাই জানালেন গ্রামের বাসিন্দারা।

চিটফান্ড মামলায় CBI-এর হাতে গ্রেফতার তৃণমূল নেতা প্রণব চট্টোপাধ্যায়

এ দিন CPM-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, রামচন্দ্র ডোমের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল হরিণসিংহা গ্রামে যান। গ্রামে ঢোকার মুখে কিছু মানুষ তাদের পথ আটকান। কালো পতাকা দেখিয়ে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। বাম প্রতিনিধি দল তাদের বাধা টপকে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।

হরিণসিংহা গ্রামের বাসিন্দা স্মিতা মুর্মু বলেন, ‘আমি D.Ed করেছি সাত বছর আগে। আমার দুই বোনও শিক্ষিতা। কিন্তু কেউ চাকরি পাইনি। তাই এই সরকারের প্রতিশ্রুতিকে আমরা ভরসা করি না। এদের কথার সঙ্গে কাজের কোনও মিল নেই। তাই আমরা জমি দেব না। আমরা যেমন ছিলেন তেমনিই থাকতে চাই।’ সুজনবাবু বলেন,‘আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য গ্রামে গিয়েছিলাম। আমরা যে যাচ্ছি তা তৃণমূলের খুব পছন্দ হয়নি। যেন ওটা ওদের জমিদারি। গ্রামের মানুষ কিছু বলতে পারবেন না, আমরাও কিছু শুনতে পালব না, এমন ভাব। তাই তারা বাইরে থেকে কিছু লোক নিয়ে এসে আমাদের পথ আটকানোর চেষ্টা করে।’

সুজনের দাবি, তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। তাঁরা কালো পতাকার তোয়াক্কা না করে গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। সুজন বলেন, ‘আমরা হরিণসিংহা, দেওয়ানগঞ্জ, চাঁদা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাতে বোঝা গিয়েছে সরকারের কোনও প্রতিনিধি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেনি। জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, BDO, পঞ্চায়েত প্রধানের মাধ্যমে কে কী কথা বলে দিয়েছেন কেউ জানে না।’

‘মহুয়া ইংরেজি বলতে পারেন…এতেই সমস্যা’, মমতাকে আক্রমণ তথাগতর

এ দিন এলাকার বাসিন্দারা দাবি করেন, জীবন, জীবিকা, পরিবেশ ধ্বংস হলে তাঁরা যাবেন কোথায়? Sujan Chakraborty দাবি করেন, দেউচা পঁচামি প্রকল্প ঘিরে মানুষ অসহায় বোধ করছেন। তাঁদের মধ্যে আতঙ্কও তৈরি রয়েছে। রুটিরুজি ফেলে তাঁরা যাবেন কোথায়! সুজন স্পষ্ট দাবি করেন, ‘মানুষ ওখানে কয়লাখনি চাইছেন না। সরকারের উচিত মানুষের জীবন, জীবিকা ও পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খতিয়ে দেখে। পদক্ষেপ করা। মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়ে কর্পোরেট কোম্পানি যখন খনি দখল নিতে চায় তখন BJP তাদের পাশে দাঁড়ায়। এ রাজ্যের সরকার কি BJPর পথে হাঁটবে?’ প্রশ্ন ছুড়ে দেন বাম নেতা।

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর সফর প্রসঙ্গে অনুব্রত বলেন, ‘আগেই বলেছি এখানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আটকে দিয়েছিল আদিবাসীরা। ফলে কে এল গেল, দেখে লাভ নেই। মুখ্যমন্ত্রী এলাকার উন্নয়ন নিয়ে যা ভাবনা চিন্তা করছেন। ৩৪ বছরে বামফ্রন্ট করেনি। আমরা আদিবাসীদের নিয়েই কয়লাখনি গড়ব।‘

পরের খবর