অ্যাপশহর

মেমারির শিবিরে সুরুবালা শুনলেন, স্বামী আর নেই

সাগেডিতে ঘরে বছর ১২-র ছেলে। লকডাউনে কাজ ছিল না অনিল টুডুর (৪২)। অভাবের ঘরে মানসিক অবসাদে গলায় দড়ি দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। ময়না-তদন্তের জন্য পুলিশ তাঁর দেহ পাঠিয়েছে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে।

EiSamay.Com 30 Apr 2020, 9:27 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: জমিতে আলু তোলার কাজ করতে এসেছিলেন পুরুলিয়ার সুরুবালা টুডু। তার পর থেকে লকডাউনে মেমারিতে তিনি আটকে। মঙ্গলবার খবর পেলেন তাঁর স্বামী আত্মঘাতী হয়েছেন। পুরুলিয়ার বোরো থানার সাগেডি গ্রামের বাসিন্দা সুরুবালাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন।
EiSamay.Com istockphoto-590620334-612x612
.


সাগেডিতে ঘরে বছর ১২-র ছেলে। লকডাউনে কাজ ছিল না অনিল টুডুর (৪২)। অভাবের ঘরে মানসিক অবসাদে গলায় দড়ি দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। ময়না-তদন্তের জন্য পুলিশ তাঁর দেহ পাঠিয়েছে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘লকডাউনের মাঝে ওর স্ত্রীকে বর্ধমান জেলা প্রশাসন ফেরত পাঠালে আমরা অবশ্যই দেখব।’ স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতো বলেন, ‘রেশনে এখন বিনা পয়সায় চাল, আটা দিচ্ছে সরকার। ওঁর ঘরে খাবারের অভাব ছিল না। হয়তো অন্য কারণে অবসাদে ভুগছিলেন।’

মেমারিতে সুরুবালার সঙ্গে এসেছিলেন আরও ৮৪ জন। পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের দেওয়া খাবারে দিন কাটাচ্ছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবার রাতে সুরুবালা স্বামীর মৃত্যুর খবর পান। কান্নায় ভেঙে পড়া সুরুবালাকে সান্ত্বনা জোগান তাঁর সহযোগীরা। পুলিশ হয়ে মহকুমাশাসকের মাধ্যমে খবর পোঁছয় জেলাশাসক বিজয় ভারতীর কাছে। এর মধ্যে পুলিশ যোগাযোগ করে মেমারির বাসিন্দা মহাদেব টুডুর সঙ্গে। দীর্ঘদিন মহাদেব আদিবাসিদের নিয়ে সামাজিক কাজে জড়িয়ে। পুলিশের কাছে শুনে নিজের গাড়িতে সুরুবালাকে পুরুলিয়া পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন মহাদেব। মেমারি থানা কাগজপত্র তৈরি করে দিলে বুধবার ভোরে সুরুবালাকে নিয়ে সাগেডি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছন তিনি। মহাদেব বলেন, ‘আমাকে মেমারি থানার বড়বাবু সব কথা বলতেই আমি রাজি হয়ে যাই। সাগেডিতে এসে দেখলাম, ওঁরা খুবই গরিব। স্ত্রী বর্ধমান থেকে টাকা, চাল, খাবার নিয়ে ফিরবেন এই আশাতেই ছিলেন ওঁর স্বামী। স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। কিন্তু কবে স্ত্রী ফিরতে পারবেন তা জানতে পারেননি।’ সুরুবালা বলেন, ‘আমার সঙ্গে দু’দিন আগেও কথা হয়েছে। তখনও আমি বলেছিলাম, লকডাউন উঠলেই আমি ফিরে যাব। বারবার বলছিল, ঘরে খাবার নেই। ছেলেটা আছে। আমি যাতে ফিরে আসি। কিন্তু কী ভাবে ফিরব সেটাই জানতাম না। সব শেষ হয়ে গেল।’ জেলাশাসক বলেন, ‘আমাদের কাছে খবরটা আসার পর মানবিকতার খাতিরে পুলিশকে বলেছিলাম, বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করার জন্য। পুলিশ সেই ব্যবস্থা করেছে।’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল