অ্যাপশহর

দেদার প্লাস্টিক ব্যবহার বর্ধমানে, নিষেধ নামেই

কোনও অবস্থাতেই ৪০ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করা যাবে না, বর্ধমান পুরসভার পক্ষ থেকে এ কথা ঘোষণা করা হয়েছে আগেই।

EiSamay 23 Aug 2018, 6:07 pm
এই সময়, বর্ধমান: কোনও অবস্থাতেই ৪০ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করা যাবে না, বর্ধমান পুরসভার পক্ষ থেকে এ কথা ঘোষণা করা হয়েছে আগেই। বার কয়েক পুরসভার পক্ষ থেকে এই নিয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। জরিমানাও করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার রোখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি আবারও সেই একই রকম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন কয়েক লক্ষ ক্ষতিকারক প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ হাতবদল হয়ে গিয়ে পড়ছে আবর্জনার স্তূপ বা শহরের নর্দমায়।
EiSamay.Com চলছে দেদার প্লাস্টিকের ব্যবহার
চলছে দেদার প্লাস্টিকের ব্যবহার


কেরালায় নজিরবিহীন প্লাবনের নেপথ্যে উঠে এসেছে প্লাস্টিকের কথা। মূলত প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের লাগামছাড়া ব্যবহারের ফলে নিকাশি ব্যবস্থা অনেকটাই অকেজো হয়ে গিয়েছে দক্ষিণের রাজ্যে। দেশের অন্যত্র জল জমার কারণ হিসেবে এই প্লাস্টিকের উপস্থিতির রহস্যই উঠে আসছে। শহর বর্ধমান তার ব্যতিক্রম নয়। ২০১৬ সালে সামান্য বৃষ্টিতে শহরের বহু অংশ ডুবে গিয়েছিল জলে। সেদিন অনেকেই পুরসভার দিকে আঙুল তুলেছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল, ঠিক সময়ে নর্দমা পরিষ্কার না করার জন্য এই বিপত্তি। যদিও পরে পুরসভা নর্দমা সাফাই অভিযানে হাত দিয়ে দেখেছে ময়লা নয়, বেশিরভাগই প্লাস্টিকের ক্যারি ব্যাগ জমে রয়েছে নর্দমাগুলিতে।

এর পর শহরজুড়ে অভিযান হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক ব্যাগ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এর জেরে কিছুদিনের জন্য ছবিটা বদলে গিয়েছিল। কিন্তু, কয়েকদিন পরেই আবার ফিরে এসেছে প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার। একটু লুকিয়ে যার ব্যবহার হচ্ছিল, এখন তা হচ্ছে প্রকাশ্যেই। পরিবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন বোরহাটের বাসিন্দা রাজীব দত্ত। তিনি বলেন, ‘একটা বিষয় এ বারও একটু ভাবার সময় এসেছে আমাদের। প্রশাসনের ঘাড়ে দোষ দিয়ে নিজেদের আড়াল করার চেষ্টা করে কোনও লাভ আছে কি? আমরাই তো বাজারে গিয়ে জিনিস কিনে বলি, বাড়ি থেকে ব্যাগ আনিনি। তখন বিক্রেতার ক্যারি ব্যাগ দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। তারপর সেই ব্যাগ কোথায় ফেলি, কী করি, তার কোনও খোঁজ কেউ রাখি? আমরা সচেতন না হলে আমাদেরই বিপদ। আর সে দিন খুব দূরে নেই কিন্তু। সম্প্রতি কেরালার ঘটনা প্রমাণ করেছে, পরিবেশ, প্রকৃতিকে ধ্বংস করে পদক্ষেপ করলে তার পরিণাম কী হতে পারে।’

বর্ধমান শহরের সর্বত্র, বিসি রোড থেকে বড়বাজার, তেঁতুলতলা বাজার থেকে নীলপুর কিংবা পুলিশলাইন, কোথায় ৪০ মাইক্রনের নীচে ক্যারিব্যাগের ব্যবহার হচ্ছে না? নীলপুরের ব্যবসায়ী অশোক বিশ্বাস বলেন, ‘আমরাও চাই এটা বন্ধ হোক। কিন্তু ক্রেতাকে ধরে রাখতে আমাকেও প্লাস্টিক ব্যাগ রাখতে হয়েছে। এটাও তো কিনে দিতে হয় আমাদের। এর দাম তো পাই না আমরা।’ বিসি রোডের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সব্জি কিনছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী সন্দীপ দত্ত। প্লাস্টিকের ব্যাগে সেই সব্জি নিয়ে বাইকে চাপার সময়ে জানতে চাওয়া হয়, প্লাস্টিকের ব্যবহার করছেন কেন? তিনি বলেন, ‘আপনারা বলছেন, পুরসভা বলছে, সবাই ঠিকই বলছেন। কিন্তু, যে কারখানায় এই ক্যারি ব্যাগ তৈরি হয়, রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার সেটি কেন বন্ধ করে দিচ্ছে না কেন। কেন তারা অভিযান চালাচ্ছে না সেই কারখানায়? উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলেই তো ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে।’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল