অ্যাপশহর

ডেটলাইন আসানসোল: বিস্ফোরণের কম্পনে ঘরছাড়া অজগর গৃহস্থের শৌচালয়ে

লকডাউনেও স্বস্তি পেল না বিরাট সরীসৃপ। খনি এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য অজগর হারাল তার নিজের ঘর। ঠাঁই নিল লোকালয়ে।

EiSamay.Com 1 Sep 2020, 3:13 pm
এই সময়, আসানসোল: লকডাউনেও স্বস্তি পেল না অতিকায় সরীসৃপ। খনি এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য অজগর হারাচ্ছে তার নিজের ঘর। ঠাঁই নিচ্ছে লোকালয়ে। সোমবার সামডির খনি সংলগ্ন এলাকায় এক গৃহস্থের শৌচালয়ে মিলল ন'ফুটের সাপ। বনকর্মীরা সেটি উদ্ধার করে ছেড়ে দিয়ে এলেন জঙ্গলে।
EiSamay.Com in the vibration of the explosion, the homeless python in the toilet of the householder
ফাইল ছবি।


করোনার জেরে একটানা লকডাউন চলায় বন্যপ্রাণ তাদের হারিয়ে-যাওয়া প্রকৃতি-পরিবেশ ফিরে পেয়েছিল। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে দেখা গিয়েছে, মানুষ নিষ্ক্রিয় হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে বন্যপ্রাণী। কিন্তু এই সৌভাগ্য হয়নি পশ্চিম বর্ধমানের খনি এলাকার সরীসৃপের। এখানকার খোলামুখ খনিতে নিয়মিত বিস্ফোরণ ঘটানো হয় কয়লা তোলার জন্য। গর্তে বাস করা অজগর এর ফলে তার ঘর হারাচ্ছে। চলে আসছে লোকালয়ে। রূপনারায়ণপুর রেঞ্জ অফিসার সৌরীশ সাধু জানান, গত তিন মাসে খনি এলাকা ও শিল্পাঞ্চল থেকে ১৫টির মতো রক পাইথন মিলেছে। রানিগঞ্জের মহাবীর, মঙ্গলপুর, বার্নপুর, নিঘা, জামুড়িয়ার খনি এলাকা থেকে বড় বড় সাপ উদ্ধার করেছে বন দপ্তর। তেমনই একটি সাপ মেলে সোমবার, সামডির ডাবর কোলিয়ারি সংলগ্ন একটি বাড়ির শৌচালয় থেকে।

এখানকার বাসিন্দা তারক চন্দ্র সকালে ফোন করে বন দপ্তরে জানান, তাঁর শৌচালয়ের প্যানে একটি অজগর বসে আছে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বনকর্মীদের পাঠানো হয়। ততক্ষণে শ'খানেক মানুষের ভিড় জমে গিয়েছে ন'ফুটের অজগর দেখার জন্য। সাপটিকে যন্ত্র দিয়ে বার করে বস্তায় পুরে ফেলেন বনকর্মীরা। রূপনারায়ণপুর বন দপ্তরে সাপটিকে পরীক্ষা করে দেখা হয় সুস্থ আছে কি না। এরপর এদিন দুপুরেই মাইথনের কাছে একটি জঙ্গলে উদ্ধার হওয়া অজগর ছেড়ে দেওয়া হয়।

এভাবে লোকালয় বা শিল্পাঞ্চলে একের পর এক অজগর উদ্ধারের পিছনে রয়েছে খনি এলাকার ব্লাস্টিং। সৌরীশ বলেন, 'এসব এলাকায় এখন খোলামুখ কয়লাখনি হচ্ছে। এই খনি থেকে কয়লা তুলতে গেলে ব্লাস্টিং করতে হয়। উপরের পাথর ভেঙে সেটা সরিয়ে নীচ থেকে কয়লা তোলা হয়। এর ফলে সাপের বাসাই উড়ে যায়। পাথরের ভিতরে গর্তে সাপ থাকে। ব্লাস্টিং করে পাথর সরিয়ে ফেললে সাপ যাবে কোথায়? উপরের জঙ্গলও কেটে ফেলা হচ্ছে।'

সাপের ঘরছাড়া হওয়া সম্পর্কে একই বক্তব্য ডিএফও নীলরতন পান্ডার। তিনি বলেন, 'খনি এলাকায় জঙ্গল থাকে। সেটা সাফ করা হয় প্রথমে। জঙ্গল থেকে সাপ নীচের পাথরের গর্তে চলে যায়। কিন্তু ব্লাস্টিং-এর ফলে কম্পন হয়, তা সহ্য করতে না পারায় সাপ বেরিয়ে পড়ে। শুধু অজগর নয়, শঙ্খচূড়, চন্দ্রবোড়া, কেউটে, গোখরো-সহ বিভিন্ন ধরনের সাপ এসব এলাকায় রয়েছে।'

চিত্তরঞ্জনে সাপ ধরার কাজে নিযুক্ত এক কর্মী পিন্টু দাস বলেন, 'গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় দ্বিগুণ ভয়ঙ্কর সাপ পেয়েছি। এর একটা বড় অংশ রেল কলোনির ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছে। তার মানে সাপ নিজের জায়গায় থাকতে পারছে না।' বন দপ্তরের আবেদন, সাপ দেখা গেলে তা যেন মেরে ফেলা না হয়। বনকর্মীরা সাপ উদ্ধার করে নিয়ে আসবেন খবর পেলেই।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল