অ্যাপশহর

আসানসোলের মেলা নিয়ে হাইটেক শুনানি

মেলা নিয়ে পুরসভার অবস্থান ভেসে এল মেয়রের এসএমএসে

EiSamay.Com 13 Jan 2017, 9:41 am
এই সময় : মেলা নিয়ে পুরসভার অবস্থান ভেসে এল মেয়রের এসএমএসে৷ আবার আয়োজকরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়া মেলা করতে রাজি কি না , এজলাসে শুনানি চলাকালীনই তা নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পৌঁছল মামলাকারীর আইনজীবীর মোবাইলে৷ সে সব তথ্যই এজলাসে তুলে ধরলেন বাদী -বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা৷ আবার মেলা প্রাঙ্গণের ছবি এজলাসে বসেই দেখে নিলেন বিচারপতিরা৷ আসানসোলের লোকো ময়দানে সাংসদ মেলা শেষ পর্যন্ত হবে কি না , তার ভাগ্য নির্ধারণে এ ভাবেই বারবার ব্যবহার হল তথ্যপ্রযুক্তি৷ বৃহস্পতিবার দু’দফায় রীতিমতো হাইটেক শুনানি দেখলেন দু’পক্ষের আইনজীবী থেকে বিচারপ্রার্থীরা৷ শুধু শুনানিই নয় , বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি শঙ্কর আচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেওয়ার সময়েও বারবার এই বিষয়গুলির উল্লেখ করেছেন
EiSamay.Com
আসানসোলের মেলা নিয়ে হাইটেক শুনানি


সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের পর মেলার জন্য নতুন করে আসানসোলের মেয়রের কাছে আবেদন করেছিলেন উদ্যোক্তারা৷ কিন্ত্ত বেশ কয়েকটি যুক্তি দিয়ে যে আবেদন খারিজ করে দেন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি৷ সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্চ করেই বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন মেলা আয়োজকরা৷ কোন কোন যুক্তিতে সেই আবেদন খারিজ করা হল , তা অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্তর কাছ থেকে জানতে চায় বেঞ্চ৷ আইনজীবীরা যোগাযোগ করেন আসানসোল পুর -কর্তৃপক্ষের সঙ্গে৷ যেহেতু এ দিনই মেলার সূচনার দিন ধার্য ছিল , তাই মামলাটির শুনানি আর পিছিয়ে দিতে চায়নি কোনও পক্ষই৷

মেয়র তাঁর বক্তব্য এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেন অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে৷ সেই যুক্তিগুলিই আদালতের সামনে তুলে ধরেন আইনজীবী৷ পুর -কর্তৃপক্ষের তরফে মূল আপত্তি ছিল মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে৷ সেই অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে তাঁরা মেলা করতে রাজি আছেন কি না , সে বক্তব্যও আয়োজকদের কাছ থেকে তড়িঘড়ি হোয়াটসঅ্যাপ মারফত জেনে নেন তাঁদের আইনজীবীরা৷ দুপুরে দ্বিতীয় দফায় ফের শুনানি শুরু হতে আয়োজকদের তরফে আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান , তাঁর মক্কেলরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাদ দিতে রাজি৷ তখন পুরসভার তরফে আধার , পাসপোর্টের ক্যাম্প , শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ট্রাই -সাইকেল দেওয়ার অনুষ্ঠানের জন্য বাড়তি ভিড়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে বলে যুক্তি দেওয়া হয়৷

বেঞ্চ জানতে চায় , মেলার গেটের আয়তন কত? মেলার মোট পরিসরই বা কত? মেলার গেটের ছবি সেসময় দু’পক্ষের আইনজীবীদের হাতে ছিল না৷ বিচারপতিদের বেঞ্চ তখন আয়োজকদের আইনজীবী কিশোর দত্তকে বলেন , কোনওভাবে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মেলা ও মেলা প্রাঙ্গণের গেটের ছবি আনা সম্ভব কি না৷ কিশোর আবার জুনিয়র আইনজীবীদের বলেন , জরুরি ভিত্তিতে আয়োজকদের কাছ থেকে গেটের ছবি আনাতে হবে৷ মোবাইলে যখন বার্তা আদানপ্রদান চলছে , তখনই একজন জুনিয়র আইনজীবী তাঁর মোবাইলে আসানসোলের লোকো ময়দানের গুগুল -ইমেজ বের করেন৷ সেখানে মেলার গেটেরও ছবি ছিল৷

বিচারপতিদের হাতে এগিয়ে দেওয়া হয় সেই মোবাইল৷ সেই ছবির বিষয়বস্ত্তর প্রতিলিপিও দুই বিচারপতি ও দু’পক্ষের আইনজীবীদের হাতে তুলে দেন আদালতের কর্মীরা৷ বিচারপতি সমাদ্দার এজলাসে জানান , সময়ের সঙ্গে ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনও সংশোধন হয়েছে৷ যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করতেই হবে৷ সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ও মনে করেন , এমন প্রযুক্তির ব্যবহার করতেই হবে৷ এখন আদালতের নির্দেশে মামলার সরকারি সাক্ষীদের ক্ষেত্রে ই-মেল বা মোবাইল মেসেজের মাধ্যমেও সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সমন পাঠানো যায়৷ এক্ষেত্রে বিচারপতিদের বেঞ্চ সেই প্রযুক্তিই ব্যবহার করেছে৷
West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল