অ্যাপশহর

কেষ্টর বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েতের ডাকে ক্ষোভ

স্বভাবসিদ্ধ ঢংয়ে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি কিন্ত্ত পঞ্চায়েত ভোটের ঢাক বাজিয়ে দিলেন৷ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সেই ‘চড়াম চড়াম ’ ঢাক বাজানোর ঘোষণার মতোই চড়া সুরে পরোক্ষে বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত তৈরির ডাক দিলেন দলের মহিলা

EiSamay.Com 20 Jan 2017, 1:53 pm
এই সময় , সিউড়ি : পঞ্চায়েত নির্বাচনের আরও এক বছর বাকি৷ স্বভাবসিদ্ধ ঢংয়ে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি কিন্ত্ত পঞ্চায়েত ভোটের ঢাক বাজিয়ে দিলেন৷ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সেই ‘চড়াম চড়াম ’ ঢাক বাজানোর ঘোষণার মতোই চড়া সুরে পরোক্ষে বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত তৈরির ডাক দিলেন দলের মহিলা কর্মীদের উদ্দেশে৷ সিউড়িতে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের সভায় বৃহস্পতিবার অনুব্রত বলেন , ‘আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে অন্য কোনও দলের প্রার্থী থাকবে না৷ উন্নয়নের স্বার্থে প্রতি আসনে একজনই প্রার্থী থাকবেন৷ মা -মাটি -মানুষের , মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের৷ ’ তাঁর নিজের জেলা বীরভূমের ১৭৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত , ১৯টি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের ৪২টি আসন ছাড়াও বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম , মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামে এই ঘোষণা কার্যকর করা হবে বলে প্রকাশ্যেই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহভাজন কেষ্ট।
EiSamay.Com anubrata mandal attened tmc woman conferencc at siuri
কেষ্টর বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েতের ডাকে ক্ষোভ


স্বভাবতই তাঁর এই মন্তব্যে ‘গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ ’ করার বার্তা দেখছে বিরোধীরা৷ তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন অনুব্রত৷ বিশেষ করে পুলিশকে বোমা মারার হুমকি দিয়ে মামলায় জড়িয়েছিলেন৷ সম্প্রতি সেই মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন তিনি৷ তারপর এমন মন্তব্যে ফের সমালোচনার ঝড় উঠতে পারে বলে পরে নিজের বক্তব্যের জন্য ভিন্ন সাফাই দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি৷ তিনি যখন বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েতের আহ্বান করছিলেন , তখন মঞ্চে বসে থাকা তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মুচকি হেসে সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে বলেন , ‘আপনাদের তো খবর হয়ে গেল৷ ’ সেই চন্দ্রিমাকেই সভার পর অনুব্রতের ঘোষণার ব্যাখ্যা চাইলে তিনি এড়িয়ে যান৷

চন্দ্রিমা বলেন , ‘অনুব্রতদা এমনটা বলেননি৷ ’ তারপর পাশে বসা কেষ্টকে তিনি বলেন , ‘দাদা , উত্তরটা আপনি বলে দিন৷ ’ সঙ্গে সঙ্গে অনুব্রত বলেন , ‘আমি বলেছি যে আমার দায়িত্বে থাকা ১৪টি বিধানসভা এলাকায় এত উন্নয়ন হয়েছে যে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারবে না৷ ’ এতে অবশ্য বিতর্ক ধামাচাপা দেওয়া যায়নি৷ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম বলেন , ‘প্রতি বার ভোটের আগে অনুব্রত মণ্ডলের যে ছক থাকে , তাই তিনি আজ কর্মীদের মনে করিয়ে দিলেন৷ এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি কর্মীদের রণকৌশল বোঝালেন৷ বলে দিলেন , বিরোধীরা যাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না -পারে , তার জন্য যা করার কর৷ আসলে এটা হল গণতন্ত্রকে হত্যা করার ঘোষণা৷ যে জবরদখলের রাজনীতি ওরা চালাচ্ছেন , এই ঘোষণা তারই ইঙ্গিত দিল৷ ’বীরভূম জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন , ‘প্রকাশ্যে এমন কথা বলাটাকে শুধু মন্তব্য হিসাবে ধরলে ভুল হবে৷

এটা হুমকি৷ ক্ষমতা দখল করে লুটেপুটে খাওয়ার রাজনীতি চালু করেছে এই সরকার৷ তাই গণতন্ত্রকে হত্যা করে ক্ষমতা দখলের কথাই বলছেন অনুব্রত৷ ’ বিজেপি এর পিছনে প্রলোভন দেখানোর রাজনীতি আছে বলে মনে করে৷ দলের বীরভূম জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন , ‘দলের সম্মেলনে এমন কথা শোনানো মানে এই বার্তা দেওয়া যে কেউ যেন আর বিরোধী দলেই না -থাকে৷ কারণ , মনোনয়নপত্র পেশ করতে না -দিলে বিরোধী দলের প্রার্থী হয়ে কোনও লাভ নেই৷ তবে শেষপর্যন্ত কী হবে , তা ভোটের সময়ই বলে দেবে৷ ’মনে করা হচ্ছে , পঞ্চায়েত নির্বাচন এক বছর পরে হলেও এখন থেকে দলীয় কর্মীদের চাঙা করতে এই ভোকাল টনিক দিলেন অনুব্রত৷ তাতে যে তিনি অনেকটাই সফল , তা বোঝা গেল এ দিনের মহিলা সম্মেলনেই৷ অনুব্রত বিরোধীহীন পঞ্চায়েতের কথা বলা মাত্র হাততালি যেন আর থামতেই চায় না৷ মহিলা কর্মীরা একে অন্যকে বলাবলি করছিলেন , ‘এই না -হলে কেষ্টদা৷ দম আছে৷ ’ কেউ বললেন , ‘বুকের পাটা আছে৷ ওঁর হুঙ্কারে বাঘে -গোরুতে একঘাটে জল খায়৷ ’

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল