অ্যাপশহর

খরস্রোতা নদীতে নেই সেতু, বিপাকে ফাঁসখাওয়া-চুনিয়াঝোরার বাসিন্দারা

ভুটান পাহাড়ে বৃষ্টি হলেই, চিন্তা বাড়ে ফাঁসখাওয়া-চুনিয়াঝোরা চা বাগান এলাকার বাসিন্দাদের। সেতু না থাকায় বৃষ্টির সময় ফাঁসখাওয়া নদী পেরনো দুস্কর হয়ে পড়ে। ফলত বেশিরভাগ সময় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

Lipi 20 Oct 2021, 8:10 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতার পর ৭৪ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের ফাঁসখাওয়া এবং চুনিয়াঝোরার বাসিন্দারা সেই তিমিরেই। আসলে এখনও ফাঁসখাওয়া নদীর উপর কোনও সেতু নির্মাণের কাজ হয়নি। ফলত ভুটান পাহাড়ে বৃষ্টি হলেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে ওই দুই চা বাগান এলাকার বাসিন্দাদের। বৃষ্টি হলেই নদীতে জল বেড়ে যায়। তখন ওই দু'টি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে জেলার অন্য প্রান্তের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তাঁরা বিশেষ যাতায়াত করতে পারেন না। পাশাপাশি, পাহাড়ি নদীর হড়পা বানে সমস্যায় পরেন স্থানীয়রা।
EiSamay.Com Faskhawa River
ফাঁসখাওয়া নদী (ফাইল ছবি)


সাধারণত দু'টি এলাকার বাসিন্দারা ফাঁসখাওয়া নদী পেরিয়ে হাতিপোতা থেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করেন। কিন্তু, বর্ষার সময় তাঁরা যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা! নদীতে জল না কম হওয়া পর্যন্ত খুব প্রয়োজনেও পারাপার সম্ভব নয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্বাধীনতার পর এতগুলো বছর কেটে গেলেও, উন্নয়নের আঁচ সেভাবে পৌঁছয়নি ওই অঞ্চলে। এখনও পর্যন্ত ফাঁসখাওয়া নদীর সেতু নির্মাণের কাজই হয়নি। তাঁদের দাবি, প্রতি বছরই বর্ষাকালে একই পরিস্থিতির শিকার হতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রয়োজিৎ সরকার, পেশায় স্কুল শিক্ষক বলেন, ‘জন্মলগ্ন থেকেই এই নদীর উপর দিয়েই যাতায়াত করি। যখনই এই নদী পার হই, তখন ভয় করে। পাহাড়ি নদীতে হাঁটু সমান জলেও স্রোত বেশি হয়। ফলে এদিক থেকে ওদিক হলে সাইকেল কিংবা বাইক সমেত যে কেউ ভেসে যেতে পারে। তবু নদী পেরোনোর অন্য কোনও উপায় নেই। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা নদীর স্রোতের জলের জন্য বর্ষাকালে ঠিকমত স্কুলও করতে পারে না।’ আগে অবশ্য এই নদীর উপর দিয়ে একটি সরকারি যান চলাচল করত। কিন্তু গত পাঁচ বছর হল সেটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলেও তিনি জানান। অসুস্থ ও গর্ভবতী মহিলারা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। আবার প্রাণ হাতে নিয়ে ডিউটি যেতে হয় বলে জানিয়েছেন হাতিপোতা ফাঁড়িতে কর্মরত চুনিয়ার সিভিক ভলেন্টিয়ার গনি।

বিষধর শাঁখামুটির এক কামড়ে শেষ 'গোয়েন্দা' রানি
শুধু সাধারণ মানুষের নিত্য-নৈমিত্তিক সমস্যা নয়, ফাঁসখাওয়া নদীতে সেতু না থাকায় শিল্পও মার খাচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ফাঁসখাওয়া চা বাগানের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার গৌরব শ্রীবাস্তব বলেন, ‘এই পাহাড়ি নদীর জলচ্ছাসের ফলে মাঝেমধ্যেই হাতিপোতা, শামুকতলা, আলিপুরদুয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে চা শিল্পের উপর বিশাল প্রভাব পড়ছে।’ ফাঁসখাওয়া নদীর উপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করার জন্য সরকারের কাছে আবেদনও জানাচ্ছেন তিনি।

বিদ্যুতের আলোয় নন্দীগ্রাম নাম পাল্টে মমতাময়ী নগর
যদিও এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কোনও আশ্বাস মেলেনি। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ার জন্যই ফাঁসিখাওয়া ও চুনিয়াঝোরা সরকারি সুবিধা, প্রশাসনের নজর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তবে সরকারের নজর নিশ্চই পড়বে- এই আশাতেই দিন গুনছেন ভারত-ভুটান সীমান্তবর্তী এই দুই চা-বাগান এলাকার বাসিন্দারা।

পরের খবর

West bengal newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল