এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক : হাসপাতাল চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছে অশরীরি আত্মা! অনেকেই নাকি সেটা দেখেছেন। আবার হাসপাতাল চত্বর থেকে নাকি মাছের আঁশটে গন্ধ বেরোচ্ছে। সবমিলিয়ে, ভূতের উপদ্রব হয়েছে হাবরা হাসপাতাল চত্বরে। এমনই অভিযোগ তুলে হাসপাতাল চত্বরে ভূত তাড়ানোর পুজোয় মাতলেন হাবরা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা। স্থানীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে হাসপাতালের রোগী ও রোগীর পরিজনদের মধ্যে। যদিও ভূত তাড়ানোর পুজোর কথা অস্বীকার করেছেন হাবরা হাসপাতালের সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাসের।
হাসপাতাল চত্বরে ভূত ঘুরে-বেড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করে সুপারের দাবি, ‘বিগত ৪০ বছর ধরে হাসপাতাল চত্বরে মনসা পুজো হয়। গতবছর কোভিডের জন্য হয়নি। রবিবার সেই পুজো করা হয়েছে। আর সেই পুজোর সঙ্গেই ‘ভূত’ ট্যাগ করা হয়েছে।’ তবে সেই পুজোও তাঁর অনুমতি ছাড়া হয়েছে বলে দাবি সুপারের। একইসঙ্গে হাসপাতাল চত্বরে ভূত ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করে সুপার বলেন, ‘হাসপাতালকে বদনাম করতেই একটা মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে। এর কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। আমরা বিষয়টি গুরত্ব দিয়ে দেখব।’ বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের রোগী ও রোগীর পরিজনদের আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তাও দিয়েছেন সুপার ডা. বিবেকানন্দ বিশ্বাস। একইসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘যাঁরা এই ধরনের প্রচার করছে তাঁদের মানসিক চিকিৎসা দরকার।’ এব্যাপারে সংবাদমাধ্যমকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, হাবরা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা ভূত দেখেছেন এবং ভূত-পুজো করছেন বলে অভিযোগ উঠলেও তাঁদের অনেকেই ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে হাবরা হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাজ করছেন বুড়ো দাস। ভূতের উপদ্রবের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কে কী দেখেছে জানি না। আমি কিছু দেখিনি। আমি বহুবার হাসপাতালের মর্গে গিয়েছি। আমার অ্যাম্বুলেন্সেও অনেক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কখনও অস্বাভাবিক কিছু দেখিনি।’ ভূত-পুজো প্রসঙ্গে সুপারের সুরেই তিনি বলেন, ‘বহু বছর আগে হাসপাতালের এক কর্মী এখানে মনসা পুজো শুরু করেন। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন এই পুজো করা হত। এবারে সেদিন করা হয়নি। তাই রবিবার করেছি। এটা ভূত তাড়ানোর পুজো নয়।’
অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনা বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা কমিটির সদস্য প্রদ্যুৎ কর্মকারেরও দাবি, ‘আজকের দিনে ভৌতিক কিছু হতে পারে না। যদি কেউ কিছু দেখে থাকেন সেটা চোখের ভুল হতে পারে। আর মাছের সংরক্ষণাগার ঠিকমত দেখাশোনা না হলে গন্ধ বেরোতে পারে। যাঁরা এই ধরনের খবর ছড়াচ্ছে তাঁদের প্রতি বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে আবেদন, কেউ কুসংস্কার ছড়াবেন না। হাসপাতালে এমনিতেই প্রচুর রোগীর চাপ। এরকম খবর ছড়ালে হাসপাতালে রোগীর চাপ সামলাতে সমস্যা হবে। সকলকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।’