এই সময়, নৈহাটি: লকডাউনের ঠিক আগে আগে পুনেয় বড় ছেলের কাছে গিয়ে আটকে পড়েছেন স্ত্রী। ছোট ছেলেও তাই। এ ক'মাস নৈহাটির বাড়িতে একাই ছিলেন দুর্গালাল সাউ (৫৮)। নির্বিরোধী দুর্গালালের সঙ্গে কারও কোনও অশান্তি বা শত্রুতা ছিল মনে করতে পারলেন না পড়শিরা। অথচ সোমবার সকালে সেই দুর্গালালের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হল ঘর থেকে।
ঘরের মেঝেয় পড়ে চাপচাপ রক্ত। ওই রক্তের উৎস দুর্গালালের ক্ষতবিক্ষত দেহ। গলার নলি কাটা। বুক মাঝখান দিয়ে চেরা। এক হাতে কাঁচের টুকরো ঢুকেছিল। ঘরের জিনিসপত্র লন্ডভন্ড। বাড়ির বারান্দায় রক্তমাখা পায়ের ছাপও রয়েছে। সেটি সম্ভবত খুনির। সোমবার সকালে দুর্গালালকে ডাকতে এসে এই দৃশ্য দেখে আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন তাঁর এক বন্ধু। মুহূর্তে লোক জড়ো হয়ে যায় নৈহাটির হাজিনগর সুটকিপাড়ার দুর্গালালের ভাড়াবাড়িতে। নৈহাটি জুটমিলে কাজ করতেন দুর্গালাল। এই বাড়িতে তাঁর দীর্ঘদিনের বাস। বাড়িওয়ালি নির্মলা গোস্বামী বলেন, নির্মলা গোস্বামী বলেন, 'দুর্গালাল মাঝেমধ্যে নেশা করতেন ঠিকই। কিন্তু কারও সঙ্গে তাঁকে কোনও দিন ঝামেলা করতে দেখিনি।'
স্ত্রী ও ছোট ছেলেকে নিয়ে হাজিনগরের এই ভাড়াবাড়িতে থাকতেন দুর্গালাল। বড় ছেলে অমিত থাকেন পুনেয়। সেখানে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। লকডাউনের ঠিক আগে মা ও ছোট ভাইকে পুনে নিয়ে যান অমিত। কথা ছিল সপ্তাহ খানেক থাকার। কিন্তু লকডাউনের জন্য এখন কেউ ফিরতে পারেননি। এই ক'মাস বাড়িতে একাই ছিলেন দুর্গালাল। স্থানীয়দের অনুমান, তিনি একা থাকেন জেনে হয়তো দুষ্কৃতীরা লুটপাট করতে এসেছিল। তিনি বাধা দেওয়ায় খুন হন।
স্থানীয়দের থেকে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে দুর্গালালের এক বন্ধু তাঁকে ডাকতে আসেন। বেশ কয়েক বার ডাকাডাকির পরেও সাড়া না পেয়ে তিনি দরজা ঠেলে ঘরে ঢোকেন। তারপর ওই দৃশ্য। আতঙ্কে চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে আসেন।
নির্ঝঞ্ঝাট মানুষটিকে কে বা কারা কেন খুন করল তা পরিষ্কার নয়। রক্তমাখা পায়ের ছাপ-ই আপাতত একমাত্র ক্লু পুলিশের কাছে।