অ্যাপশহর

জীবন বদলালেও অতীতকে ভোলেননি সেই মারিয়াপ্পান

২০১৬ সালে রিও প্যারা অলিম্পিকে হাইজাম্পে সোনা জিতেছিলেন মারিয়াপ্পান। ছোটবেলায় সরকারি বাস পায়ের উপর দিয়ে চলে গিয়েছিল। তারপর থেকেই তিনি প্রতিবন্ধী। শারীরিকভাবে হলেও মানসিকভাবে তিনি অসম্ভব দৃঢ়চেতা।

EiSamay 29 Aug 2020, 5:54 pm
অমরেন্দ্র চক্রবর্তী
EiSamay.Com Mariyappan Thangavelu
মারিয়াপ্পান থাঙ্গাভেলু


প্যারা অলিম্পিকের একটা সোনার পদকই জীবনে বদলে দিয়েছে মারিয়াপ্পান থাঙ্গাভেলুর। শনিবার রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি দেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার খেলরত্ন পাবেন।

তাঁর মা এখন আর সব্জি বিক্রি করেন না তামিলনাড়ুর সালেমের বাজারে। ভাঙা বাড়ির জায়গায় নতুন বাড়ি উঠেছে। জমি কিনেছেন চাষের জন্য। তা দেখভালের দায়িত্ব মায়ের। খবরের কাগজ বিক্রি করার দিন চলে গিয়েছে মারিয়াপ্পানের। তবে আপাতত সালেমেও থাকেন না। বেঙ্গালুরুতে থাকেন ভাড়া বাড়িতে। আনলকড্ ওয়ানের সময় বিয়ে করেছেন ভলিবলার রোজাকে। কর্ণাটক রাজ্য দলে নিয়মিত ভলিবলার তাঁর স্ত্রী। তিন বছর প্রেম করার পরে বিয়ে করলেন কোভিড আতঙ্কের মধ্যেই। সাইয়ের চাকরি পেয়েছেন ২০১৭ সালেই। খেলা ছাড়লেই দেশের প্যারা জাম্পারদের কোচিং করাবেন মারিয়াপ্পান। কিন্তু এখন নজর টোকিও অলিম্পিকে। সেই অলিম্পিকের নামার টিকিটও তাঁর পকেটে।

২০১৬ সালে রিও প্যারা অলিম্পিকে হাইজাম্পে সোনা জিতেছিলেন মারিয়াপ্পান। ছোটবেলায় সরকারি বাস পায়ের উপর দিয়ে চলে গিয়েছিল। তারপর থেকেই তিনি প্রতিবন্ধী। শারীরিকভাবে হলেও মানসিকভাবে তিনি অসম্ভব দৃঢ়চেতা।

অলিম্পিকে সোনা জয়ের পরে ২০১৮ সালে এশিয়াডে ব্রোঞ্জ জিতেছেন। তারপরে ২০১৯ সালে দোহাতে বিশ্ব প্যারা মিটে ব্রোঞ্জ জিতেছেন। শনিবার তিনি দেশের পাঁচ ক্রীড়াবিদের সঙ্গে খেলরত্ন পুরস্কার পাচ্ছেন। রিও অলিম্পিকের সোনা জয়ের পরেই অর্জুন ও পদ্মশ্রী পেয়েছিলেন মারিয়াপ্পান। ২০২০ সালে খেলরত্ন। তামিলানাড়ুতে বিশ্বনাথন আনন্দের পরেই তাঁর স্থান। রাজ্যের তিনি দ্বিতীয় ক্রীড়াবিদ, যিনি খেলরত্ন পাচ্ছেন।

বদলে যাওয়া এই জীবন উপভোগ করছেন, পাশাপাশি ভোলেননি পুরোনো দিনের কথা। ফোনে কথা বলার ক্ষেত্রে এখনও লাজুক। বেশি কথা বলতে পারেন না। বিয়ের কথা শুনে তাঁর মন্তব্য, 'হ্যাঁ, দুই পরিবারের সদস্যদের কথা মেনে বিয়ে করতে হল। কিন্তু লক্ষ্য আমার অলিম্পিক। অলিম্পিকের দ্বিতীয় পদক চাই আমার।'

রিও অলিম্পিকের সোনা জয়ের পরে তামিলনাডু সরকার দিয়েছিল দু'কোটি টাকা। তারপরেও আথির্ক পুরস্কার জুটেছিল আরও। এত টাকার মালিক হয়েও শিকড় ভোলেননি। তাই লকডাউনের মধ্যে ১৪ জন খুদে খেলোয়াড়কে আর্থিক সাহায্য করেছেন। কয়েকটি ত্রাণ শিবিরে গিয়েছেন। কোচ সত্যনারায়াণের কথায়, 'জীবন বদলে গেলেও মারিয়াপ্পান বদলে যায়নি। একইরকম রয়েছে। লকডাউনের মধ্যেও প্র্যাক্টিসে খামতি দেয়নি। দু'বেলার জায়গায় একবেলা প্র্যাক্টিস হয়েছে। বেঙ্গালুরু সাইতে প্র্যাক্টিস করার জন্য সেখানেই বাড়ি ভাড়া নিয়েছে।'

বদলে যাওয়া জীবনে মারিয়াপ্পানের দ্বিতীয় লক্ষ্য অলিম্পিকে আরও একটি পদক।

পরের খবর

Sportsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল