অ্যাপশহর

চিনা পণ্য বয়কটে ধসে পড়বে সব খেলার বাজার

‘হঠাৎ করে চিনের জিনিস বয়কট করলে বিপদে পড়ে যাব।’ নতুন পরিস্থিতিতে বেজায় চিন্তায় খেলার জগতের তারকারা। ২০১৮-১৯ মরসুমের হিসেব ধরলে, বিদেশ থেকে জিম এবং অ্যাথলেটিক্সের সরঞ্জাম কেনার জন্য ১০০২.৫ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। শুধু চিন থেকে এসেছে ৬৯৪.৭৭ কোটি টাকার জিনিস। লাদাখের গলওয়ানে চিনা সেনার নৃশংস আচরণের জেরে ভারত জুড়ে যে ভাবে চিনা দ্রব্য বয়কটের দাবি উঠেছে, তাতে খেলার জগৎও যে ধসে পড়বে!

EiSamay 23 Jun 2020, 12:09 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: ফুটবল, ব্যাডমিন্টনের র৵াকেট হোক বা কর্ক, টেবল টেনিসের বল, কুস্তির ম্যাট, হাই জাম্পের বার, বক্সিং বা জ্যাভলিনের সরঞ্জাম, অথবা জিমের জিনিসপত্র বা পাহাড়ে ওঠার সরঞ্জাম---সব কিছুতেই পরিত্রাতা চিন। ভারতের খেলাধুলোর বাজারে একটা বিশাল অংশ দখল করে রেখেছে তারা।
EiSamay.Com all sports markets
ছবিটি প্রতীকী


লাদাখের গলওয়ানে চিনা সেনার নৃশংস আচরণের জেরে ভারত জুড়ে যে ভাবে চিনা দ্রব্য বয়কটের দাবি উঠেছে, তাতে খেলার জগৎও যে ধসে পড়বে! ভারতের খেলোয়াড়রাও পড়ে যাবেন বিপদে। কিন্তু কী হবে এখন? ডিপার্টমেন্ট অফ কমার্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতীয় খেলাধুলোর বাজারে অর্ধেকেরও বেশি সরঞ্জাম আসে চিন থেকেই। একটা হিসেব দিলেই বোঝা যাবে, চিনের উপর কতটা নির্ভরশীল ভারতীয় ক্রীড়া জগৎ।

২০১৮-১৯ মরসুমের হিসেব ধরলে, বিদেশ থেকে জিম এবং অ্যাথলেটিক্সের সরঞ্জাম কেনার জন্য ১০০২.৫ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। শুধু চিন থেকে এসেছে ৬৯৪.৭৭ কোটি টাকার জিনিস। ব্যাডমিন্টনের র৵াকেট ১৩০.৩১ কোটির মধ্যে চিন থেকে আসে ৪২.৭ কোটি। টেবিল টেনিসের বল ১৭.৭৭ কোটি টাকার মধ্যে চিনের ভাগ ১১.৫৪ কোটি। ভারতীয় বাজারে এক বছরে যদি ১৮.৫৭ কোটি টাকার ফুটবল ক্রয়-বিক্রয় হয়, তা হলে চিন থেকেই আমদানি হয় ১২.৮৪ কোটি টাকার ফুটবল। আর এ সব বাদে খেলার অন্য সরঞ্জাম ৩৫৭.৩২ কোটির টাকার হলে চিনের ভাগ ১৯৭.২৫ কোটির। অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি বাজার চিনের হাতেই।

নতুন পরিস্থিতিতে বেজায় চিন্তায় খেলার জগতের তারকারা। টেবল টেনিস তারকা সাতিয়ান জ্ঞানশেখরণ যেমন বলেছেন, ‘আমরা চিনের তৈরি বলেই প্র্যাক্টিস করি। বিশ্ব এবং এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ওই বলেই খেলা হয়। ফলে স্পিন আর বাউন্সটা অভ্যাস করতে হয়। চিন এক ধরণের একনায়কতন্ত্র করে রেখেছে।’

ভারতের বিভিন্ন ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থাও জানিয়েছে, তারা জিনিস নিজেদের কারখানায় বানালেও কাঁচামালের অনেক কিছুই আনতে হয় চিন থেকে। জলন্ধরের একটি কোম্পানির মালিক বিকাশ গুপ্ত যেমন বলে দিচ্ছেন, ‘কাঁচামালের মান আমাদের দেশে খুব ভালো নয়। চিন থেকে আনতেই হয়। সস্তাও।’

জিমের সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী এক নামী কোম্পানিও বলেছে, ‘হঠাৎ করে চিনের জিনিস বয়কট করলে বিপদে পড়ে যাব।’

প্রসঙ্গত, কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (CAIT)-র অধীনে রয়েছেন প্রায় ৭ কোটি ব্যবসায়ী এবং ৪০ হাজার ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন। তারা একটি ক্যাম্পেন শুরু করেছেন, যেখানে চিনা দ্রব্যের আমদানি বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দাবি করা হয়েছে আগামী বছরের মধ্যে আমদানি ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমানোর জন্যে। একই সঙ্গে বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার এবং ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং সচিন তেন্ডুলকরকে অনুরোধ করা হয়েছে কোনও রকম চিনা সামগ্রীর বিজ্ঞাপনে কাজ না করতে। এবার প্রশ্ন হচ্ছে আদৌ এই ব্যবস্থ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে চলছে নানা বিতর্ক। বর্তমানে বছরে ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দ্রব্য চিন থেকে আমদানি করে ভারত।

পরের খবর

Sportsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল