অ্যাপশহর

বিদেশি ফুটবলার কমানোর পক্ষেই রায় দুই প্রধানের

ইস্টবেঙ্গল শীর্ষ কর্তা দেবব্রত অবশ্য মনে করেন, বিদেশি ফুটবলার কমানো হলে তাতে শুধু বাংলার ফুটবল নয়, ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি হবে। তাঁর কথায়, ‘বিদেশি ফুটবলার কমালে ভারতীয় ফুটবলারদের খেলার সুযোগ বাড়বে। যেটা জাতীয় টিমের পক্ষে ভালো।’

EiSamay.Com 16 Mar 2020, 3:59 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: কড়াকড়ি উড়িয়ে ২০০০ অতিথির বিয়েবাড়িতে অবাধে মুখ্যমন্ত্রী বাঙালি ফুটবলারের কি সত্যিই আকাল? মানছেন না দুই প্রধানের কর্তা দেবাশিস দত্ত, দেবব্রত সরকার। তাঁদের সঙ্গে একমত আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ও জেলাস্তর থেকে ফুটবলার তুলে আনা কর্তা নবাব ভট্টাচার্যও।
EiSamay.Com east bengal mohun bagan
ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান


মোহনবাগানের আই লিগ জয়ে অনেকেই মনে করেছেন হাত শুধু বিদেশি ফুটবলার ও ভিনরাজ্যের ফুটবলারদের। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের প্রথম একাদশে এখন বাঙালি ফুটবলারদের সংখ্যা দুই বা তিনজন। কেন বাঙালি ফুটবলার কম? মোহনবাগান অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত এর জন্য সরাসরি এআইএফএফের নীতিকে দায়ী করেছেন। দেবাশিসের কথায়, ‘প্রথম একাদশে কী ভাবে বাঙালি ফুটবলার বাড়বে? ফেডারেশনের নিয়মে প্রথম একাদশে পাঁচ জন বিদেশি ফুটবলার খেলে। হাতে থাকে ৬ জন। সেখানে আমাদের টিমে গোলে শঙ্কর রায় আর মাঝমাঠে সাহিল নিয়মিত খেলেছে। শুভ ঘোষ পরিবর্ত হিসেবে নেমে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছে। টিমে ২৭ জনের মধ্যে অন্তত ১২-১৩ জন বাঙালি রয়েছে। এটাই প্রমাণ করে মোহনবাগানে বাঙালি ফুটবলার কমেনি।’

দেবাশিস-দেবব্রতর কথার সুর জাতীয় কোচ ইগর স্টিমাচের গলায়। স্টিমাচ বলেছেন, ‘ভারতের ক্লাব ফুটবলে ৫ বিদেশি খেলানো ঠিক নয়। এএফসির নিয়ম মেনেই ৩জন বিদেশির সঙ্গে একজন এশিয়ান কোটার ফুটবলার খেলানোটাই ঠিক। এতে স্থানীয় ফুটবলারদের খেলার সুযোগ বাড়বে। যা জাতীয় টিমের শক্তি বাড়াবে।’

দেবব্রত আবার ইতিহাসে ঘেঁটে তুলে আনেন অন্য তথ্য। তাঁর কথায়, ‘মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলে বরাবরই বাঙালি ফুটবলারদের পাশাপাশি ভিনরাজ্যের ফুটবলাররা দাপিয়ে খেলেছেন। ইস্টবেঙ্গলের পঞ্চপান্ডবই তো ছিলেন ভিনরাজ্যের। তারপর সুধীর-সমরেশ-সুরজিৎদের আমলেও দাপট দেখিয়েছে নইম-শ্যাম-হাবিবরা। তারপরেও বিজয়ন, ভাইচুংরা ছিল নায়ক। তাহলে এখন বাঙালি নেই বলে এমন হা-হুতাশ করার কোনও মানে নেই।’

বাঙালি ফুটবলারের সপক্ষে দেবাশিস বলেন, ‘এ বার আমাদের আই লিগ জয়ের টার্নিং পয়েন্ট লুধিয়ানায় গিয়ে পাঞ্জাব এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচ ১-১ করে ফেরা। পিছিয়ে থাকা ওই ম্যাচে ৮৭ মিনিটে গোল করে শুভ ঘোষ। এই ম্যাচে হেরে গেলে আমরা ডার্বি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম না।’

আবার বাঙালি ফুটবলার কমার জন্য দেবব্রতর ইঙ্গিত প্রশাসনের দিকে। তাঁর মন্তব্য, ‘আগে বাঙালি ফুটবলার আসত জেলাস্তর থেকে। এখন তো জেলার লিগগুলোই প্রায় বন্ধ বা বন্ধ হওয়ার জায়গায়।’ এই জেলা থেকেই বাঙালি ফুটবলার তুলে আনতে ইস্টবেঙ্গল তাদের শতবর্ষে জেলায় জেলায় টুর্নামেন্ট করে সেখান থেকে বাছাই করে ফুটবলার তুলতে চাইছে। জানিয়েছেন দেবব্রত।

ইউনাইটেড স্পোর্টস ও পাঠচক্রের কর্তা নবাব ভট্টাচার্য ইতিমধ্যেই জেলাস্তর থেকে বাঙালি ফুটবলার তোলার কাজে নেমে পড়েছেন। ‘তারার খোঁজে’ বলে একটি প্রকল্প গড়ে তারা জেলায় জেলায় ফুটবলারদের ট্রায়াল নিচ্ছেন। নবাব বলছিলেন, ‘আলিপুরদুয়ার থেকে মেদিনীপুর--প্রতিটা ট্রায়ালে শ’য়ে শ’য়ে ফুটবলার আসছে। এত ফুটবলার আসছে যে আমরা সামাল দিতে পারছি না। এর মধ্যে প্রচুর ভালো কোয়ালিটির ফুটবলারও রয়েছে। আমার বিশ্বাস আগামী দিনে বাঙালি ফুটবলাররা আবার দাপট দেখাবে ভারতীয় ফুটবলে।’

আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ও বাঙালি ফুটবলার তুলতে তাঁর নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘পঞ্চম থেকে দ্বিতীয় ডিভিশন পর্যন্ত ফুটবল লিগকে এ বার আমরা বয়সভিত্তিক করে দিয়েছি। ফলে ক্লাবে জেলায় জেলায় গিয়ে নতুন ফুটবলার খুঁজছে। এই চেষ্টার ফলে আগামী দিনে বাংলার ফুটবল ভান্ডারে নতুন ফুটবলারে ভরে যাবে। তার সঙ্গে আমরা জেলা ফুটবলেও জোর দিয়েছি। তাতেও বাঙালি ফুটবলার বাড়বে।’

পরের খবর

Sportsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল