অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়
তিনিই নায়ক। তিনিই খলনায়ক! অরিন্দম ভট্টাচার্য যেন বাজিগরের শাহরুখ খান!
২৩ ম্যাচে অরিন্দম মাঠে ছিলেন ২০৭০ মিনিট। ১৯ গোল খেলেও বাঁচিয়েছেন ৫৯। শতকরা হিসেবে সেভ করেছেন ৭৫.৬৪। স্বাভাববিক ভাবেই সেরা গোলকিপারে সোনার গ্লাভস উঠেছে তাঁর হাতেই। এত কিছুর পরেও যে বড় অন্ধকার! এই সোনার গ্লাভসও কি অরিন্দম খুশি মনে নিতে পারলেন? পারেননি। পারেননি বলেই ম্যাচের পর কার্যত হাউহাই করে কাঁদছিলেন। তাঁকে বুকে টেনে নিয়ে সান্ত্বনা দিতে গিয়েছিলেন এটিকে-মোহনবাগান কোচ আন্তনিও আবাস। কিন্তু কোচের বুকে মাথা রেখে আরও ভেঙে পড়েন অরিন্দম। সহকারী কোচ সঞ্জয় সেনকেও দেখা যায় সান্ত্বনা দিতে। কাঁধে হাত রেখে সাহস দিচ্ছিলেন সতীর্থরা। কিন্তু ভেঙে পড়া অরিন্দমের আর সে সবে মনই ছিল না!
অরিন্দমের একই জেলার ছেলে, আর এক জাতীয় গোলকিপার সংগ্রাম মুখোপাধ্যায় কোনও রাখ-ঢাক না রেখেই বলে দিলেন, 'পুরো ভুলটাই ওর। সামনে তিনজন ডিফেন্ডার ছিল। অনায়াসে হেড করে বলটাকে বার করে দিতে পারত। সেখানে কেন যে বুকে করে বলটা নামাতে গেল, বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয়, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসেই এত বড় খেসারত দিতে হল।' তারপরেই অবশ্য সংগ্রাম জুড়লেন, 'ময়দানে আমাদের মানে গোলিকপারদের নিয়ে একটা প্রবাদ আছে। ভালো খেললে তিন তলা। খারাপ হলে তেঁতুল তলা! অরিন্দম এক মুহূর্তে তিনতলা থেকে তেঁতুল তলায় পড়ে গেল! তবে আশা করি, এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ও ঘুরে দাঁড়াবে।'
কী হলে কী হবে, পরের কথা। আপাতত, 'খলনায়ক'-এর যন্ত্রণা অনেক দিন বয়ে বেড়াতে হবে অরিন্দম ভট্টাচার্যকে। এটাই বাস্তব। এটাই জীবন, একজন গোলকিপারের!