অ্যাপশহর

মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা করেই এমন দুর্দশা ইস্টবেঙ্গলের, অভিযোগ দিলীপ ঘোষের

গত মরশুমে ISL টুর্নামেন্টে অভিষেক হয় East Bengal ক্লাবের। তবে তা নিয়েও অবশ্য কম জলঘোলা হয়নি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী Mamata Banerjee-র হস্তক্ষেপে শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে বিনিয়োগ করতে সম্মত হয়।

EiSamay.Com 22 Jul 2021, 4:12 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক : ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারা শ্রী সিমেন্টের পাঠানো চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে এখনও সই করেনি। সেকারণে আসন্ন ইন্ডিয়ান সুপার লিগে লাল-হলুদ শিবিরের অংশগ্রহণও একেবারে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তার উপরে দল ছাড়ছেন একের পর এক তারকা ফুটবলার। এই পরিস্থিতিতে বুধবার বিকেলবেলা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা দলের কর্তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করে। অবস্থা বেগতিক দেখে লাঠি চালায় পুলিশও। ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এমন একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিযুক্তের কাঠগড়ায় তুলেছেন BJP রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
EiSamay.Com Dilip Ghosh on East Bengal Club
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য


গত মরশুমে ISL টুর্নামেন্টে অভিষেক হয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের। তবে তা নিয়েও অবশ্য কম জলঘোলা হয়নি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে বিনিয়োগ করতে সম্মত হয়। তবে গত মরশুমে রবি ফাওলারের কোচিংয়ে একেবারেই ভালো ফলাফল করতে পারেনি লাল-হলুদ ব্রিগেড। এটিকে মোহনবাগান যেখানে রানার্স আপ হয়ে এই টুর্নামেন্ট শেষ করেছিল, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব সেখানে পয়েন্ট টেবিলে ছিল একেবারে নিচে। ফাওলারের যুক্তি ছিল, তিনি দল গঠন করার জন্য খুব বেশি সময় হাতে পাননি। সেকারণেই নাকি এমন ফলাফল হয়েছে। শোনা যায়, এই ফলাফলের পর থেকেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতি অনীহা দেখাতে শুরু করেছিল শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ। তবে শেষপর্যন্ত তারা আবারও বিনিয়োগের জন্য রাজি হয়। কিন্তু, এবার বেঁকে বসেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তারা। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সামনে যে চুক্তিপত্রে তাঁরা সই করেছিলেন, এবারের চুক্তিপত্র একবারে আলাদা। এই চুক্তিপত্রে সই করার অর্থ হল ক্লাবকে 'বিক্রি' করে দেওয়া।

তবে ক্লাব কর্তাদের এই যুক্তি মানতে নারাজ দলের সমর্থকেরা। এটিকে মোহনবাগান যেখানে আগামী মরশুমের জন্য সংসার প্রায় গুছিয়েই ফেলেছে, সেখানে ইস্টবেঙ্গলের খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়ায়, তাঁরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। আর সেকারণেই আজ তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নেমেছেন। অন্যদিকে, এই ইস্টবেঙ্গল ইস্যুকেই হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন BJP রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

দিলীপবাবুর বক্তব্য, 'আজ ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে দেখে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর ভরসা করেই আজ তাদের এই দুর্দশা। ISL-এ ক্লাবকে তুলে দেবেন বলে তিনি কথা দিয়েছিলেন। এবং হাত ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন। একটি কোম্পানির সঙ্গে তিনি মউ চুক্তি করতে বাধ্য করেছিলেন। হয়ত তখন নির্বাচন ছিল। তাই নবান্নে নিয়ে গিয়ে এগ্রিমেন্ট করিয়েছিলেন। সেই এগ্রিমেন্ট আজকে ডেথ ওয়ারেন্টে পর্যবসিত হয়েছে।'


তিনি আরও যোগ করেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা ছিল বলেই তিনি একাজ করেছেন। কোটি কোটি মানুষের সেন্টিমেন্ট নিয়ে তিনি খেলা করেছেন। রাজনৈতিক খেলা। কিন্তু, দূর্ভাগ্যবশত ক্লাবটা আজ অন্ধকার গলিতে পৌঁছে গেছে। কালকে কী হবে, কেউ জানে না। ক্লাব কি আদৌ আইএসএল খেলতে পারবে? ক্লাব কি আদৌ আগামী বছর নতুন ফুটবলার কিনতে পারবে? এইধরমের প্রশ্নের সামনেই ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা দাঁড়িয়ে আছেন।'

তবে মমতা সরকারের সমালোচনা করলেও দিলীপ ঘোষ কিন্তু দেবব্রত সরকারের পাশেই রয়েছেন। তিনি বললেন, 'ক্লাবের কর্মকর্তারা এই চুক্তিপত্রে সই করলে, সেটা আর ক্লাব থাকবে না। কোম্পানি হয়ে যাবে। সমর্থকেরা কেউ ক্লাবে ঢুকতে পারবেন না। আর কর্তারাও শুধুমাত্র নামমাত্র ক্লাবে বসতে পারবেন। ক্লাবের লোগো ব্যবহার করতে হলে কোম্পানির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। আমি জানি না, এর পিছনে রহস্য কী আছে? এটা কি শ্রী সিমেন্টের কাটমানির খেলা? যে ক্লাবকে নিয়ে আমরা আবেগে ভাসি, সমর্থকেরা খেলা দেখার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটেন, সেই কোটি কোটি মানুষের আবেগ নিয়ে খেলার অধিকার কে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে? এটা শুধু ফুটবলের অপমান নয়, এটা বাঙালির অপমান। এটা বাংলার অপমান।'

পরের খবর