অ্যাপশহর

লজেন্স মুখে বল বিকৃতির দায়ে অভিযুক্ত বিরাট

বিরাট কোহলির বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে রাজকোটে প্রথম টেস্টে বল বিকৃতির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনল ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড 'ডেইলি মেল'৷

EiSamay.Com 23 Nov 2016, 1:38 pm

এই সময়: অভিযুক্ত ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি৷ তাঁর বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে রাজকোটে প্রথম টেস্টে বল বিকৃতির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনল ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড 'ডেইলি মেল'৷

EiSamay.Com virat kohli accused of tampering the ball
লজেন্স মুখে বল বিকৃতির দায়ে অভিযুক্ত বিরাট


বক্তব্য, টিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রাজকোটে টেস্টের চতুর্থ দিন ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস চলাকালীন যখন দুই ওপেনার কুক ও হামিদ ব্যাট করছিলেন, বিরাট মুখে লজেন্স বা চুইং গাম জাতীয় কোনও পদার্থ নিয়ে ফিল্ডিং করতে নেমেছিলেন৷ টিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বিরাট সেই পদার্থ মুখে থাকা অবস্থা জিভ থেকে নিঃসৃত লালা বলে মাখাচ্ছিলেন, যা ক্রিকেটের আইনবিরোধী৷

কিন্ত্ত ঘটনা হল, মাঠে থাকা দুই আম্পায়ার বা ইংল্যান্ড টিমের পক্ষ থেকে এই নিয়ে কোনও অভিযোগ এতদিনেও জমা পড়েনি৷ নিয়ম অনুযায়ী কোনও অভিযোগ থাকলে তা রাজকোট টেস্ট শেষ হওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে ম্যাচ রেফারির কাছে করতে হত৷ রাজকোট টেস্ট শেষ হয়েছে ১৩ নভেম্বর, ১৮ নভেম্বরের মধ্যে কোনও অভিযোগ জমা না পড়ায় আইসিসি এই নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে না৷

এমন একটা দিনে এই অভিযোগ উঠেছে, যে দিন আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে ব্যাটিংয়ে কেরিয়ারের সেরা ৪ নম্বরে উঠে এসেছেন বিরাট৷ যিনি রাজকোটে করেছিলেন ৪০ ও ম্যাচ বাঁচানো ৪৯ নট আউট, বিশাখাপত্তনমে দ্বিতীয় টেস্টে ১৬৭ ও ৮১৷ এব আগে কখনও টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ১০-এর মধ্যে ছিলেন না বিরাট৷ প্রথম তিনে আছেন স্টিভ স্মিথ, জো রুট ও কেন উইলিয়ামসন৷

অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার চলতি সিরিজে হোবার্টের দ্বিতীয় টেস্টে একই অভিযোগ উঠেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসির বিরুদ্ধে৷ যেখানে টিভি ফুটেজে দেখা যায়, মুখে ললিপপ থাকা অবস্থায় বলে জিভ থেকে নিঃসৃত লালা বলে লাগাচ্ছেন দু প্লেসি৷ মাঠে থাকা দুই আম্পায়ার কোনও অভিযোগ না করলেও আইসিসি নিজে থেকেই ব্যাপারটা নিয়ে তদন্ত করে এ দিন দু প্লেসিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে৷ পরের টেস্টে সাসপেন্ড না হলেও হোবার্ট টেস্টের পুরো ম্যাচ ভাতা জরিমানা হয়েছে দু প্লেসির৷

বিরাট কোহলির ক্ষেত্রে এখনও আইসিসি এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি৷ মাঠে থাকা দুই আম্পায়ারও বিরাটের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি৷ তবে টিভি ফুটেজ দেখে আইসিসি নিজেরাই এই নিয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে পারত৷ ক্রিকেটে বলের পালিশ ঠিক রাখতে জিভ নিঃসৃত লালা বলে মাখানো খুব চালু পদ্ধতি৷ কিন্ত্ত আইনে পরিষ্কার বলা আছে, এ ক্ষেত্রে কোনওরকম কৃত্রিম পদার্থের সাহায্য নেওয়া যাবে না৷ যে কোনও চুইং গাম, ললিপপ বা লজেন্সে যে শর্করা থাকে, তা বলে মাখালে বলের একটা দিক বেশি চকচকে যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনই তা ওজনেও সামান্য ভারী হয়ে উঠতে পারে৷ যা বল সুইং করার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে৷

আইসিসি এ দিন দু প্লেসি সংক্রান্ত তাদের বিবৃতিতে বলেছে, 'এই সিদ্ধান্ত আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া হয়েছে, যাঁরা বলেছেন, ঘটনাটা তাঁরা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতেন৷ এমসিসি-র ক্রিকেটে প্রধান জন স্টিফেনসনও জানিয়েছেন, ফুটেজ থেকে পরিষ্কার, এ ক্ষেত্রে বল পালিশ করার সময় কৃত্রিম বস্ত্ত ব্যবহার করা হয়েছে৷'

রাজকোটে প্রথম টেস্ট শেষ পর্যন্ত ড্র হলেও বিশাখাপত্তনমে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে ভারত এই মুহূর্তে পাঁচ টেস্টের সিরিজে ১-০ এগিয়ে আছে৷ ফুটেজ দেখে আইসিসি কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা কৌতূহলের বিষয়৷ তবে এই ফুটেজ যে স্কাই টিভি মারফত্ ব্রিটিশ মিডিয়ার হাতে পৌঁছেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই৷ ফুটেজে কোনওরকম কারচুপি করা হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে৷ ভারতীয় বোর্ড বা টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে এখনও এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি৷

তবে ইতিমধ্যেই ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে প্রকাশিত ফুটেজের ছবি নিয়ে সরব হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এবং সে দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা৷ প্রাক্তন লেগস্পিনার আব্দুল কাদির বলেছেন, 'বিরাটকে অবশ্যই জরিমানা করা উচিত৷ দু প্লেসির যদি জরিমানা হয়ে থাকে, তা হলে বিরাটের কেন হবে না? সব সদস্য দেশগুলির ব্যাপারটা আইসিসি-কে জানানো দরকার৷'

সঙ্গে যোগ করেছেন, 'যখন কোনও পাকিস্তানি প্লেয়ারের অ্যাকশন বা স্লো ওভার রেট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, আইসিসি সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়৷ কিন্ত্ত ভারতের ক্ষেত্রে তা হয় না৷'

পাকিস্তান বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান খালেদ মেহমুদ বলেছেন, 'ভারতের বেলা আইসিসি একেবারেই কড়া হয় না৷ এই ধরণের মনোভাব খেলাটার জন্য ক্ষতিকর৷ বিরাট কোহলি মাঠে যা করেছে, তার জন্য শাস্তি হওয়া দরকার৷'

ভারতীয় ক্রিকেটে শেষ বার বল বিকৃতির অভিযোগ উঠেছিল ২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের সময়৷ পোর্ট এলিজাবেথে দ্বিতীয় টেস্টের সময় ম্যাচ রেফারি মাইক ডেনেস অভিযুক্ত করেছিলেন সচিন তেন্ডুলকরকে৷ প্রতিবাদে ভারত পরের টেস্ট খেলতে অস্বীকার করে৷ পরে আইসিসি-র তদন্তে সচিন নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিলেন৷ সচিন নিজেও গোড়া থেকে দাবি করেছিলেন, তিনি কখনওই এই অন্যায় করেননি৷

পরের খবর

Sportsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল