অ্যাপশহর

সামির হাতে জয়ের স্বপ্ন একেই বলে প্রত্যাবর্তন

মনে পড়ে যায় দাদুর সঙ্গে রেডিওতে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্টের কমেন্ট্রি শোনার স্মৃতি৷ রেডিওতে শুনতাম গার্নার, হোল্ডিং, মার্শালদের বলের ভয়ঙ্কর গতির কথা৷ আর সেই অতিমানবীয় ডেলিভারিগুলো কী ভাবে সামলাচ্ছে গাভাসকর৷

EiSamay.Com 24 Jul 2016, 11:02 am
ভারত: ৫৬৬-৮ ডি ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৯০-৩ (লাঞ্চ পর্যন্ত স্কোর)
EiSamay.Com mohammed shami knows the key will be to maintain good line and lengths in west indies
সামির হাতে জয়ের স্বপ্ন একেই বলে প্রত্যাবর্তন


রণদেব বসু

ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলা মানে আমি যেন কেমন ছোটবেলায় ফিরে যাই!

মনে পড়ে যায় দাদুর সঙ্গে রেডিওতে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্টের কমেন্ট্রি শোনার স্মৃতি৷ রেডিওতে শুনতাম গার্নার, হোল্ডিং, মার্শালদের বলের ভয়ঙ্কর গতির কথা৷ আর সেই অতিমানবীয় ডেলিভারিগুলো কী ভাবে সামলাচ্ছে গাভাসকর৷

এখন আমি বাংলার টিম নিয়ে বেঙ্গালুরুতে৷ ম্যাচ শেষে সন্ধেয় টিভিতে খেলা দেখতে বসে বেশ মজা পেলাম৷ দেখলাম, ওয়েস্ট ইন্ডিজের এখনকার পেসারদের থেকে আমাদের বোলারলের বলের অ্যাভারেজ স্পিড অনেকটাই বেশি৷

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের সোনার দিন চলে যাওয়ার পরও টিভিতে প্যাটারসন, ওয়ালশদের দেখে শ্রদ্ধায় মাথা নুইয়েছি৷ কিন্ত্ত এখনকার ক্যারিবিয়ান টিমকে দেখে না আসে শ্রদ্ধা না আসে ভয়৷ অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারদের নিয়ে বলার জন্য কলম ধরিনি৷ দেখতে চেয়েছিলাম আমাদের পেসাররা কেমন বল করে!

আগেভাগে বলে নিই, এখনও ভারতীয় টিমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বুঁদ হয়ে আছি৷ বিরাট কোহলিকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই৷ আবার বলতে গেলে শেষ হবে না৷ যাই হোক, পুরোনো কথা বলে সময় নষ্ট করব না৷

আসল হল তৃতীয় দিনের খেলা৷ আরও ভালো করে বললে পেসারদের কেমন দেখলাম৷ প্রথমেই আসব, সামির কথায়৷ প্রায় দেড় বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরল সামি৷ লাঞ্চের আগে এই যখন লিখছি ততক্ষণে সামির দু’উইকেট নেওয়া হয়ে গিয়েছে৷ ফিরিয়ে দিয়েছে চন্দ্রিকা (১৬), ড্যারেন ব্র্যাভো (১১)৷

ভাইয়ের মতো সামির কামব্যাক দেখে ভালো লাগছে৷ তবুও বলছি সামিকে দেখে ১০০ শতাংশ ছন্দে আছে বলে মনে হল না৷ আসলে সামি রিদম বোলার৷ ছন্দ পেয়ে গেলে ভয়ঙ্কর৷ দেড় বছর পর ফিরে প্রথম টেস্টে ছন্দ পেতে একটু সময় লাগবেই৷ রান আপ দেখে মনে হল, কোথায় যেন পুরোটা পাচ্ছি না৷ তবে যে ভাবে শুরু করে তাতে আমি নিশ্চিত, পরের টেস্টেই পুরো ছন্দ ফিরে পাবে সামি৷

এ বার আসি বাকিদের কথায়৷ নিজে পেসার বলে পেস বনাম ব্যাটিংয়ের যুদ্ধ আমাকে সবচেয়ে বেশি টানে৷ সেখানে ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব হতাশ করল বললেও কম বলা হয়৷ বলে গতি আছে৷ কিন্ত্ত পেস বোলিং এমন একটা শিল্প যেটা শুধু গতির উপর নির্ভর করে না৷ যে জন্যই কোচ বা প্রাক্তনরা বারবার লাইন, লেংথের কথা বলেন৷ দেশের এক নম্বর পেসার ইশান্তের বলে সে সবের বালাই নেই৷

৩৫ ওভার পর্যন্ত দেখলাম, বলটা চকচক করছে৷ মানে ব্যাটসম্যানরা ব্যাটে লাগাতে পারেনি বল৷ ইশান্ত, উমেশরা বল করেছে, ঋদ্ধি সেটা ধরেছে৷ এতগুলো ওভার হয়ে যাওয়ার হয়ে হয় ব্যাটসম্যানরা মেরে বলের রং চটিয়ে দেবে, কিংবা পেসারদের ঝুলিতে বেশ কিছু উইকেট থাকবে৷ কিন্ত্ত ইশান্তের হাত থেকে উইকেট নেওয়ার ডেলিভারি কোথায়? শুধু অফ স্টাম্পের বাইরে বল করে গেল৷ যেটা ভিতর দিকে গেল সেটা আবার শর্ট৷

দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পেসার লাঞ্চ পর্যন্ত গুড লেংথ স্পট খুঁজে পেতে গিয়ে মাথা কুটে মরল৷ বাংলার বোলিং কোচ হিসেবে অমিত কুইলা, ঈশাণ পোড়েলের মতো জুনিয়রদের নিয়ে আমার যে সমস্যাটা হয়, কুম্বলেরও নিশ্চয়ই সেটা হচ্ছে৷ তবে কুইলা, ঈশাণ সবে জীবন শুরু করেছে, ওদের আমি শিখিয়ে দেব৷ কুম্বলেকে যদি এখনও ইশান্তকে শেখাতে হয়, তা হলে সেটা ভয়াবহ ব্যাপার হবে৷

উমেশের বলে জোরের সঙ্গে হাতে সুইং আছে৷ কিন্ত্ত তার কোনও ব্যবহারই চোখে পড়ল না৷ আউট সুইং কোথায়? একটা কথা বলে রাখি৷ ইশান্ত কিন্ত্ত এই সিরিজের এক বার পাঁচ উইকেট নিয়ে ফেলতে পারে৷ তখন আবার ধন্য ধন্য করা হতে পারে৷ কিন্ত্ত একটা টেস্টে কবে বাজিমাত্‍ করবে, তার ভরসায় দিনের পর দিন ওকে খেলিয়ে যাওয়ার কোনও মানে হয় না৷

আমার মনে হচ্ছে, বোলিংয়ে বাজিমাত্‍ করলে ওই সামি, অশ্বিন আর অমিত মিশ্রই করবে৷ যদি তাই হয়, তা হলে শুধু ইশান্তকে বয়ে যাওয়া কেন? ভুবনেশ্বর, শার্দূল ঠাকুররা বসে রয়েছে৷ ওদের সুযোগ দেওয়া হোক৷ ভুবনেশ্বর এখন গতি অনেক বাড়িয়েছে৷ প্রতিশ্রুতিমান শার্দূলকে দেখে নেওয়ার এটাই সেরা সময়৷

ক্রিকেট জীবনে কম্পিউটারের মতো ক্যালকুলেটিভ বোলিং করত কুম্বলে৷ এখন কোচ হয়ে এই দিশেহারা ইশান্তদের কী ভাবে সামলায় সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম!

পরের খবর

Sportsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল