অ্যাপশহর

ডার্বি দেখে ফেরার পথে মৃত্যু সৌম্যর

শিলিগুড়ি থেকে ডার্বি দেখে ফেরার পথে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে মৃত্যু হল মোহনবাগান সমর্থক সৌম্য মুখোপাধ্যায়ের৷

EiSamay.Com 14 Feb 2017, 5:01 pm
এই সময় , বরাহনগর :
EiSamay.Com i league 2017 mohun bagan fan dies in accident
ডার্বি দেখে ফেরার পথে মৃত্যু সৌম্যর



শিলিগুড়ি থেকে ডার্বি দেখে ফেরার পথে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে মৃত্যু হল মোহনবাগান সমর্থক সৌম্য মুখোপাধ্যায়ের৷ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ বরাহনগর রোড স্টেশনে৷ বছর বাইশের সৌম্যর বাড়ি দক্ষিণেশ্বরের আদ্যাপীঠের কাছে ডিডি মণ্ডল ঘাট রোডে৷ তিনি সল্টলেকের একটি বেসরকারি কলেজের বি টেক -এর (দ্বিতীয় বর্ষ) ছাত্র ছিলেন৷

সৌম্য বন্ধুদের সঙ্গে এলাকায় গড়ে তুলেছিলেন মোহনবাগান ফ্যান ক্লাব ‘ঐতিহ্যের নাম মোহনবাগান ’৷ সেই ক্লাবের রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করেছেন নিজের বাড়ির ঠিকানা দিয়ে৷ সব ইতিহাস হয়ে গেল৷

শহরতলির সব স্টেশনগুলো বাজারে পরিণত হয়ে গিয়েছে৷ অধিকাংশ স্টেশনে সকালে বাজার বসে৷ পড়ে থাকে সবজির বস্তা৷ রাজ্য সরকার ও রেল নীরব৷

আর ও দিকে এক্সপ্রেস ট্রেন স্লো হলে তা থেকে বাড়ির কাছে ছোট স্টেশনে নামার অভ্যাস অনেকের৷

এই দুটো বদভ্যেসের কী করুণ পরিণতি হতে পারে , তা দেখা গেল এই ঘটনায়৷ তিন বন্ধু রাহুল রায় , অয়ন মাইতি ও আকাশ হালদারের সঙ্গে রবিবার রাতের পদাতিক এক্সপ্রেস ধরে বাড়ি ফিরছিলেন সৌম্য৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন , ট্রেন দক্ষিণেশ্বর পেরিয়ে বরাহনগর রোড পার হওয়ার সময় বেশ আস্তে হয়ে গিয়েছিল৷ সে সময় সৌম্যরা চলন্ত ট্রেন থেকে একে একে নামতে শুরু করেন৷ সৌম্য সকলের শেষে নামেন৷ নামামাত্রই প্ল্যাটফর্মে পড়ে থাকা সব্জির বস্তায় হোঁচট খেয়ে পড়ে যান সৌম্য৷ তাঁর শরীরের কোমর পর্যন্ত ঢুকে যায় ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মের মাঝের অংশে৷ ওই অবস্থায় ছেঁচড়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে যান সৌম্য৷ গুরুতর আহত অবস্থায় আরপিএফ কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালে৷ সেখান থেকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে৷ কিছুক্ষণ পরেই তাঁর মৃত্যু হয়৷ সৌম্যর অকাল মৃত্যুতে ডিডি মণ্ডল ঘাট রোড -সহ আদ্যাপীঠ -দক্ষিণেশ্বর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷ বেলুড় জিআরপি থানায় সন্ধ্যার সময়ে সৌম্যর দেহের ময়নাতদন্ত সংক্রান্ত নথি নিতে এসে ভেঙ্গে পড়েন সৌম্যর কাকা মানস মুখোপাধ্যায়৷

তিনি বলেন , ‘ও ভীষণ খেলা -পাগল ছিল৷ কী ফুটবল , কী ক্রিকেট --- সবেতেই সমান উত্সাহ৷ খেলার মাঠ আর বাড়ি , এ ছাড়া আর কিছু জানত না৷ সকাল সাড়ে ছ’টায় আমায় ফোন করে বলল বর্ধমানে পৌঁছেছে ট্রেন৷ বারবার বারণ করলাম চলন্ত ট্রেন থেকে না নামার জন্য৷ বলে দিই , যেন শিয়ালদহেই নামে৷ কিন্ত্ত কেন যে নামতে গেল , জানি না৷ ’ এলাকায় সৌম্যদের পরিবার তিনপুরুষ ধরে মোহনবাগান সমর্থক বলে পরিচিত৷ তাঁর বাবা বিমান মুখোপাধ্যায় , কাকা মানস --- কেউই এখনও টিভিতে মোহনবাগানের খেলা দেখতে ছাড়েন না৷ সৌম্যর তৈরি ফ্যান ক্লাবের সম্পাদক প্রদীন্ত হাজরা বলেন , ‘ও বয়সে আমাদের সকলের ছোট ছিল৷ সব দায়িত্ব ও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল৷ গত বছর আমরা ফ্যান ক্লাব থেকে ৩৫ জন গিয়েছিলাম শিলিগুড়িতে খেলা দেখতে৷ এবার ওর উত্সাহেই ওরা চারজন গিয়েছিল৷ আমাদের ফ্যান ক্লাবের ফেস্টুনও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল৷ ও এত পাগল ছিল যে বলত , আমি বেশি দিন বাঁচব না তো , তার আগে যেন মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গলকে ৬-০ গোলে হারায় , তা দেখে যেতে পারি৷ ’সব আজ অতীত৷

পরের খবর

Sportsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল