অ্যাপশহর

আমেরিকার ক্যাপ্টেন শিবানীর প্রেরণা ঝুলন

আমেরিকার মেয়ে ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভ‌ূত! ২৩ বছরের সেই তরুণীর অনুপ্রেরণা আবার বাংলার ঝুলন গোস্বামী! কী ভাবে সম্ভব হল এমন যোগাযোগ? জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে।

EiSamay 2 Apr 2018, 11:59 am
এই সময়: আমেরিকার মেয়ে ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভ‌ূত! ২৩ বছরের সেই তরুণীর অনুপ্রেরণা আবার বাংলার ঝুলন গোস্বামী! কী ভাবে সম্ভব হল এমন যোগাযোগ? জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে বছর আটেক৷ তামিলনাড়ুর এক ওপেনার ঝুলন গোস্বামীর নেতৃত্বে বাংলার বোলিং আক্রমণের মুখোমুখি৷ ব্যাটসম্যান বলটি ঠিক মতো খেলতে পারেননি৷ মিড উইকেটে দাঁড়ানো ফিল্ডার ক্যাচ ফেলে দেন৷ বাউন্ডারি লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে কর্নাটকের অলরাউন্ডার, তখন বছর ১৫-র শিবানী ভাস্কর দেখতে পেলেন, ঝুলন ছুটে এসে মিড অফে দাঁড়ানো সেই ফিল্ডারকে বলছেন, ‘ঠিক আছে, এমনটা হয়৷ পরের বলটাতে মনঃসংযোগ করো৷’ ঝুলন নিজে মাথা ঠান্ডা রেখেছিলেন৷ রেগে যাননি৷ শুধু ফিল্ডারকে বলেছিলেন নিজের কাজে ফোকাস করতে৷ বাংলা ম্যাচটা জেতে৷
EiSamay.Com american womens cricket team captain shibani follow indian player jhulan goswami
আমেরিকার ক্যাপ্টেন শিবানীর প্রেরণা ঝুলন


আমেরিকার জাতীয় মেয়ে টিমের অধিনায়ক হয়ে শিবানীর অনুপ্রেরণা এখন সে দিনের ঝুলন গোস্বামী৷ নিজেই বলছেন, ‘আমি ওই রকম ক্যাপ্টেন হতে চাই৷ প্লেয়ার হিসেবেও আমি চেয়েছি ওই রকম ক্যাপ্টেনকে৷ কারণ, আমি কোনও ক্যাচ ফেললে নিজেই এতটা দুঃখ পাই, যে তার পর চাইনা আমার উপর কেউ হতাশ হয়ে পড়ুক৷ ক্যাপ্টেন হিসেবে আমি আমার টিমের প্রত্যেকটা প্লেয়ারের আত্মবিশ্বাস বাড়াব৷’ শিবানীর নেতৃত্বেই এখন আমেরিকা স্বপ্ন দেখছে বিশ্বকাপের মূল পর্বে কোয়ালিফাই করার৷ শিবানীর বাবা ভাস্কর রাজা আমেরিকার বিদেশমন্ত্রকের কর্মী ছিলেন৷ তাই তাঁদের কর্মসূত্রে ঘুরতে হয়েছে হামবুর্গ, ঢাকা, আলেকজান্দ্রিয়া, চেন্নাই এবং কলকাতায়৷ শিবানীর বয়স যখন ১১, তখন তাঁর বাবা কলকাতায় কর্মরত৷ সে সময় থেকে নিয়মিত টুর্নামেন্টে খেলছেন শিবানী৷ তখনই বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার কল্যাণ মিত্রের সংস্পর্শে আসেন তিনি৷ কল্যাণের কাছে ক্রিকেটের পাঠ নিতে থাকেন এর পর৷ ছোট্টখাট্টো চেহারার জন্য কল্যাণ শিবানীকে ডাকতেন ‘ছোটু’ বলে৷ কল্যাণের কাছে ব্যাটিং এবং বোলিং টেকনিক শেখা৷ তার আগে কিছু দিন চেন্নাইয়ে চন্দ্রশেখরের অ্যাকাডেমিতে ট্রেনিং নেন৷

শিবানীর জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ে৷ জন্মের পর ভাস্করের কাজের জায়গা বদলে যায়৷ এক সময় চেন্নাই চলে আসেন তাঁরা৷ এর পর ২০০৭ সালে কলকাতা এলে বাংলার অনূর্ধ্ব ১৬ টিমে জায়গা পান শিবানী৷ তাঁর দিদি মীনাক্ষী জাতীয় রোয়িং চ্যাম্পিয়ন, তাঁর দাদুর বাবা ছিলেন একজন জিমন্যাস্ট৷ ছোট থেকেই শিবানীকে টানে মাঠের খোলা হাওয়া৷ স্কুলে পড়ার সময় নিয়মিত ফুটবল খেলেছেন, দৌড় প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছেন, সাঁতারে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন৷ বাবা ভাস্কর বলছেন,‘গলিতে ক্রিকেট খেলে ওর খেলার প্রতি অনুরাগটা তৈরি হয়৷ তখন তো মেয়েদের জন্য এত আলাদা টুর্নামেন্ট ছিল না৷ ও পাড়ার ছেলেদের সঙ্গেই ছোট থেকে খেলত৷’ চেন্নাইতে কর্মসূত্রে থাকার সময় চন্দ্রশেখরের অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করার কথা ভাবেন মেয়েকে৷ কিন্তু , সেই অ্যাকাডেমিতে মেয়েদের কোচিং করানো হয় না৷ কিন্তু বাবা বিশেষ করে অনুরোধ করায় চন্দ্রশেখর নেটে ডাকেন শিবানীকে৷ সেখানে তাঁর খেলা দেখে ভর্তি করেন৷ এর পর কলকাতায় এসে কল্যাণের কাছে শিক্ষাটা ভালোভাবে হতে থাকে৷ পরের বেশ কিছু মাস শিবানীর কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ দেশকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে তুলে নিয়ে যাওয়া ছাড়াও অন্য অনেক টুর্নামেন্ট রয়েছে, যেখানে ভালো পারফর্ম না করতে পারলে তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠবে৷ এককালের ছাত্রী সম্পর্কে চন্দ্রশেখর বলছেন, ‘ওকে ভারতের হয়ে খেলতে দেখলে ভালো লাগবে৷ তবে, যে দেশের হয়েই খেলুক, ও যদি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেকে সুপারস্টার হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে পারে, তা হলে আমি সব থেকে খুশি হব৷’

পরের খবর

Sportsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল