অ্যাপশহর

বিরাটকে ফেরাতে মরিয়া ছিলেন আমির

এই শহরেই দু’হাতে মুখ ঢেকে হাজতে যেতে হয়েছিল তাঁকে৷ ২০১০ -এ লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত মহম্মদ আমিরের ক্রিকেট কেরিয়ারে পড়েছিল কলঙ্কের দাগ৷

EiSamay.Com 20 Jun 2017, 1:20 pm
সব্যসাচী সরকার ■ লন্ডন
EiSamay.Com pakistan beat india by 180 runs to win icc champions trophy 2017 final as it happened
বিরাটকে ফেরাতে মরিয়া ছিলেন আমির

এই শহরেই দু’হাতে মুখ ঢেকে হাজতে যেতে হয়েছিল তাঁকে৷ ২০১০ -এ লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত মহম্মদ আমিরের ক্রিকেট কেরিয়ারে পড়েছিল কলঙ্কের দাগ৷ লন্ডনের জেলে তিন মাস , ক্রিকেট থেকে পাঁচ বছরের নির্বাসন৷ আবার সেই শহরই রবিবার দু’হাত ভরে ফিরিয়ে দিল তাঁকে৷ মাত্র সাত বছর পরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওভালে ম্যাচ উইনার হিসেবে আবির্ভূত তিনি৷

ভারতের যে টপ অর্ডার গোটা টুর্নামেন্ট শাসন করেছে , নিজের প্রথম স্পেলে সেই রোহিত -শিখর -বিরাটকে তুলে নিয়ে ফের বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার হিসেবে উঠে আসা৷ প্রথম স্পেলে ৬-২-১৬-৩৷ ওখানেই ভারতের মেরুদন্ড দুমড়ে যায়৷

অথচ ফাইনালের আগে গোটা টুর্নামেন্টে সে ভাবে কিছুই করেননি আমির৷ গ্রুপ লিগে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে উইকেট পাননি৷ শ্রীলঙ্কা ম্যাচে দুটো উইকেট আর ব্যাট হাতে কঠিন সময়ে সরফবাজের সঙ্গী হিসেবে থেকে ২৮ নট আউট৷ সেমিফাইনালে পিঠের পেশিতে টানের জন্য খেলতেই পারেননি৷

তাঁর জায়গায় খেলে রুমান রইস দুটো উইকেটও নেন৷ কিন্ত্ত গত শুক্রবার নেটে বল করার সময়ই বোলিং কোচ আজহার মাহমুদ টিমের এক নম্বর অস্ত্রকে বলেন , ‘ভারতকে যদি হারাতে হয় , তোমাকে লাগবে৷ ফাইনালের দিন তোমার কি জল বইতে ভালো লাগবে ? বিরাট কোহলি ট্রফিটা নিয়ে যাচ্ছে , এটা তুমি বসে বসে দেখবে ?’এই ভোকাল টনিকে তো বটেই , কাজ হয়েছিল ফিজিও -র পরিচর্যাতেও৷ কোচ মিকি আর্থার আলাদা করে আমিরকে ডেকে বোঝান , ভারতকে হারাতে হলে টপ অর্ডারে দুটো উইকেট প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যে দরকার৷ বলেন , ‘তুমি যদি বিরাটকে প্রথম ১০ রানের মধ্যে ফেরাতে পারো , আমাদের জেতা কেউ আটকাতে পারবে না৷ শুধু অফ স্টাম্পের বাইরে ফোর্থ স্টাম্পে বল রাখো৷ তুমি জাতীয় হিরো হতে পারো৷ ’

তাঁর টিমমেটরা প্রত্যেকে জানাচ্ছেন , এজবাস্টনে ভারতের কাছে হারের পর থেকেই মুষড়ে ছিলেন আমির৷ আর একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন৷ ফাইনাল ফের সেই সুযোগ এনে দেয়৷ বিরাটকে তুলে নেওয়ার৷ বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যানকেও তাঁর সামনে একেবারে অসহায় লেগেছে৷ রোহিত -বিরাট -শিখর , প্রথম দশ ওভারের মধ্যে তিন জনকেই তুলে নেন আমির৷ তাঁর বলে একবার বিরাট কোহলির ক্যাচ পড়া সত্ত্বেও৷ পাকিস্তানের জয়ের পর মিক্সড জোনে দাঁড়িয়ে আজহার আলি বলছিলেন , ‘স্লিপে বিরাটের ক্যাচটা যখন পড়ে গেল , নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিলাম না৷ তাকাতে পারছিলাম না কোনও টিমমেটের দিকে৷ এটা কী করলাম আমি ? আল্লাকে অসংখ্য ধন্যবাদ , পরের বলেই বিরাট আউট হয়েছিল৷ অত বড় ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে এরকম বারবার হয় না৷ ’

ফখর জামানকে ম্যাচের সেরা বাছা হয়েছে , কিন্ত্ত স্বচ্ছন্দে এই পুরস্কার আমিরের কাছেও যেতে পারত৷ বিশেষ করে ওভালের পাটা উইকেটের কথা মাথায় রাখলে৷ মিকি আর্থারের কথায় , ‘ফিট থাকলে আমির যে বিশ্বের যে কোনও ব্যাটসম্যানের ঘুম কেড়ে নিতে পারে , আমরা জানি৷ ও বিগ ম্যাচ প্লেয়ার৷ বড় ম্যাচে জ্বলে ওঠার ক্ষমতা সবার থাকে না৷ আমিরের সেটা আছে৷ এই টুর্নামেন্টে ফাইনালের আগে ও নিজের সেরাটা দিতে পারেনি৷ সেটা বেরিয়ে এল ফাইনালে আর তাতেই আমরা চ্যাম্পিয়ন৷ ’

২০১৬ সালে নির্বাসন থেকে ফেরার পরে সব ফর্ম্যাট নিলিয়ে পাকিস্তানের ৫৭টা ম্যাচের মধ্যে ৪৭টাতে খেলেছেন আমির৷ অবশ্যই কেরিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় ম্যাচ হয়ে থাকছে ওভালের ফাইনাল , একটা বৃত্তই সম্পূর্ণ হচ্ছে তাঁর জীবনে৷ সঙ্গে ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে বিশ্বের সব ব্যাটসম্যানের জন্য থাকছে সতর্কবার্তা৷ মহম্মদ আমিরের হাতে বল মানেই সাবধান !

পরের খবর

Sportsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল