অ্যাপশহর

মদনের কেবিনের বাইরেও পুলিশের নাকা, দেখা করতে পারলেন না স্ত্রীও

বিকেলে আর এক বার সুপারের কাছে একই আবেদন করেন অর্চনা৷ দ্বিতীয় বারও আর্জি খারিজ করে দেন সুপার৷

EiSamay.Com 1 May 2016, 1:49 pm
এই সময়: বুকে ব্যথা নিয়ে দু’দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মদন মিত্র৷ ডাক্তাররাও মানছেন, জেলবন্দি প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রীর শরীরস্বাস্থ্য ভালো নেই৷ কিন্ত্ত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ পালনে কোনও ঝুঁকি নিচ্ছেন না এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ বা কলকাতা পুলিশের কর্তারা৷ হাসপাতালের কার্ডিয়োলজি বিভাগের তিন তলায় মদনের কেবিনের বাইরে নয় নয় করে ১৩ জন পুলিশকর্মী দিবারাত্র পাহারা দিচ্ছেন৷
EiSamay.Com tight security at the hospital area for madan mitra
মদনের কেবিনের বাইরেও পুলিশের নাকা, দেখা করতে পারলেন না স্ত্রীও


শুধু তাই নয়, শুক্রবার কমিশন জানিয়েছিল, মদনের সঙ্গে এক মাত্র তাঁর পরিবারের লোকজনই দেখা করতে পারবেন৷ কিন্ত্ত শনিবার ভোটের দিন সে সুযোগও মেলেনি পরিজনের৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, বিনা নোটিসে বাড়ির লোকও মদনের কেবিনে ঢুকতে পারবেন না৷ সেই নিদান মেনে এ দিন সকালে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে হাসপাতালের সুপারকে চিঠি দিয়েছিলেন মদন-জায়া অর্চনা৷ কিন্ত্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, উপরতলার অনুমতি নেই৷

বিকেলে আর এক বার সুপারের কাছে একই আবেদন করেন অর্চনা৷ দ্বিতীয় বারও আর্জি খারিজ করে দেন সুপার৷ তবে, হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য দিনের তুলনায় শনিবার মদন কিছুটা ভালোই ছিলেন৷ বাড়তি অক্সিজেনেরও দরকার হয়নি৷

এরই মধ্যে শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর প্রশংসা করেছে নির্বাচন কমিশন৷ ভোটের জন্য কলকাতা পুলিশের প্রায় গোটা বাহিনীকেই শনিবার পথে নামতে হয়েছিল৷ ফলে, বহু জায়গায় রুটিন নজরদারি বা তল্লাশি চালাতে পারেনি পুলিশ৷ কিন্ত্ত নির্বাচন কমিশনকে খুশি রাখতে হাসপাতালে অসুস্থ মদনের উপর নজরদারির জন্য তিন দফায় মোট ৪০ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন থেকেছেন৷ যাঁদের এক জন আবার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার৷

বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল, অসুস্থতার ভান করে মদন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ভবানীপুরে তাঁর দলনেত্রী মমতার হয়ে ভোট পরিচালনা করবেন বলে৷ বিরোধীদের অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে কমিশন তাঁর কেবিনে প্রবেশাধিকারে বিধি-নিষেধ আরোপ করে৷ কিন্ত্ত কেন এত জন পুলিশকর্মীকে অসুস্থ বন্দির কেবিনের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছিল, তার কোনও সদুত্তর পুলিশমহল থেকে মেলেনি৷ মদন সারদা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে খুন-রাহাজানির মতো বড় ধরনের কোনও অভিযোগ নেই৷

বিহারের পাপ্পু যাদব বা মহম্মদ সাহাবুদ্দিনদের সঙ্গেও কোনও ভাবে তুলনীয় নন৷ তা সত্ত্বেও এত পুলিশ তাঁর এজলাসের বাইরে কেন মোতায়েন করা হয়েছে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে৷ সিবিআইয়ের মামলায় মদন জেল হেফাজতে রয়েছেন৷ পুলিশের একটি অংশের ব্যাখ্যা, মদন হাসপাতাল থেকে গা ঢাকা দিতে পারেন, সম্ভবত এমন কোনও আশঙ্কা সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে৷

তাই শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পরামর্শেও এ হেন ব্যবস্থা৷ তবে মদনের ছোট ছেলে স্বরূপের প্রশ্ন, ‘আমার বাবা কি চোর না ডাকাত, যে অত পুলিশ দিয়েছে৷ আমাদের সঙ্গে দেখা করতে দেবে নাই বা কেন?’ বিরোধীদের অভিযোগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মদন-পুত্র৷ তিনি বলেন, ‘আমাদের মোবাইল নিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না৷ বাবার পক্ষে কি মোবাইলে ভোট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?’ স্বরূপের অভিযোগ, ‘ভোট সন্ধে ছ’টায় শেষ হয়ে গেলেও মাকে দেখা করা অনুমতি দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷’

নিরাপত্তার নামে পুলিশের কড়াকড়ি নিয়ে শুধু মদনের পরিবারই নয়, সরব হয়েছেন কার্ডিয়োলজি ওয়ার্ডের অন্য রোগীদের পরিজনেরাও৷ শনিবার দিনভর ওয়ার্ডে ঢোকার সময়ে সঠিক কাগজপত্র না থাকায় বহু রোগীর পরিজনকেই আটকে দেওয়া হয়েছে৷ ওষুধপত্র ও খাবারদাবার নিয়ে আটকে পড়ায় এক সময়ে হইচইও শুরু করেন রোগীর পরিজনেরা৷

পরের খবর

Special-newsসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল