পরাধীন ভারতবর্ষের দিল্লিতে জন্ম, পাক মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে যোগ, এরপর নওয়াজ শরিফকে সরিয়ে পাক মসনদ দখল,কীভাবে ক্ষমতার চূড়ায় পৌঁছলেন প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশারফ? ১৯৪৩ সালে দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন পারভেজ মোশারফ। এরপর তিনি করাচি এবং ইস্তানবুলে বড় হয়েছিলেন। করাচির সেন্ট প্যাট্রিকস হাইস্কুলে পড়াশোনা করার পর লাহোরের ফোরম্যান ক্রিশ্চিয়ান কলেজে। অংক নিয়ে পড়াশোনা করা মোশারফ পরিবারের অমতে গিয়ে ১৯৬১ সালে যোগ দেন পাক সেনা অ্যাকাডেমিতে। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে ছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালের অক্টোবর মাসে মোশারফের সেনাতে পদোন্নতি হয়েছিল তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের হাত ধরে। তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কার্গিল হামলার নেপথ্যে মূল চক্রী ছিলেন মোশারফই। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার নেপথ্যে ছিল সেনা অভ্যুত্থান। (ছবি সৌজন্যে টুইটার- @P_Musharraf)
১৯৯৯ সালে পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থানের সময় প্রেসিডেন্ট পদে বসেন মোশারফ। তিনি সেই সময় নওয়াজ শরিফকে গৃহবন্দি করেছিলেন। পরে তাঁকে রাওয়ালপিন্ডির জেলে আটক করা হয়। ২০০১ সালে নিজেকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি এবং পরের বছর পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা জানান একটি রেফারেন্ডামের দ্বারা। ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত মোশারফ পাকিস্তানের শাসক পদে ছিলেন। (ছবি সৌজন্যে টুইটার- @P_Musharraf)
২০০২ সালে পাকিস্তানে নির্বাচনের ডাক দেন মোশারফ। সেই বছর অক্টোবর মাসে মোশারফ ঘেঁষা PML-Q দল বিপুল ভোটে জয়ী হয়, তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশারফকে দেশদ্রোহিতার মামলায় ২০১৯ সালে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছিল পেশোয়ার হাইকোর্ট। ২০০৭ সালে তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা করেছিল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (PML)। যদিও ২০২০ সালে লাহোর হাইকোর্ট এই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ প্রত্যাহার করেছিল।
২০১৬ সাল থেকে দুবাইয়ে ছিলেন তিনি। নয় মাসে ধরে হাসপাতালে চিকিৎসারত ছিলেন মোশারফ। বিরল রোগ 'অ্যামিলয়ডোসিস'-এ আক্রান্ত হন তিনি। রবিবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।