অ্যাপশহর

রাজভবনে বসেই নিজেকে ‘স্বয়ংসেবক’ বলছেন তথাগত

তিনি মনে করেন রাজ্যপাল পদটা আসলে বিয়ে বাড়ির ডিজেল জেনারেটরের মতো৷ যতক্ষণ না পাওয়ার সাপ্লাইয়ে কোনও গোলমাল হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই জেনারেটরের প্রয়োজন পড়ে না৷

EiSamay 20 Feb 2018, 9:09 am
জয় সাহা ■ আগরতলা
EiSamay.Com tathagata roy still recognized that he is active worker of rashtriya swayamsevak sangh
রাজভবনে বসেই নিজেকে ‘স্বয়ংসেবক’ বলছেন তথাগত

তিনি মনে করেন রাজ্যপাল পদটা আসলে বিয়ে বাড়ির ডিজেল জেনারেটরের মতো৷ যতক্ষণ না পাওয়ার সাপ্লাইয়ে কোনও গোলমাল হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই জেনারেটরের প্রয়োজন পড়ে না৷ প্রায় তিন বছর হয়ে গিয়েছে তিনি ত্রিপুরার রাজ্যপাল হয়ে এসেছেন৷ পিছনে ফেলে এসেছেন রাজনৈতিক জীবন৷ ছেড়েছেন বিজেপির সদস্যপদও৷ কিন্ত্ত রাজ্যপাল তথাগত রায় এখনও নিজেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন৷

নিজের স্বয়ংসেবক পরিচিতিটাকেই বেশি গুরুত্ব দেন৷ তথাগতর কথায় , ‘রাজ্যপাল হলে কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য থাকা উচিত নয়৷ আমিও তাই বিজেপি ছেড়ে দিয়েছি৷ কিন্ত্ত আমি একজন স্বয়ংসেবক৷ কারণ আরএসএস কোনও রাজনৈতিক দল নয়৷ রামকৃষ্ণ মিশনের মতো সংস্থা৷ তাই এখনও আমার সেই পরিচয়টা আছে৷ ’৭৩ বছর বয়সেও তথাগত ফিরে যেতে চান তাঁর রাজনৈতিক জীবনে৷ কারণটা অবশ্য তিনি নিজেই জানাচ্ছেন , ‘রাজ্যপাল হয়ে শুধু স্যালুট পাচ্ছি৷ কিন্ত্ত রাজনীতির কর্মী হিসেবে মানুষের কাছে পৌঁছনোর যে সুযোগ পেয়েছিলাম , সেটা আর পাচ্ছি না৷ আমার সঙ্গে মানুষের আর কোনও যোগাযোগ নেই৷ এই চেয়ারটায় বসার পর থেকে সব কিছুই ফাইলের মাধ্যমে আমার কাছে আসে৷ ’

তাঁর দাবি , শরীর সুস্থ থাকলে আর রাজ্যপালের ‘চাকরি ’টা না থাকলে তিনি আবার মাঠে ময়দানের রাজনীতিতেই ফিরে যাবেন৷ ত্রিপুরার রাজভবনে তাঁর ছোট্ট অফিসে মহাত্মা গান্ধী , সুভাষচন্দ্র বসুর ছবি আছে৷ ছবি রয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়েরও৷ তবে রাজ্যপাল হয়ে বেশ কিছু সুবিধেও পেয়েছেন তিনি৷ তাঁর কথায় , ‘লেখালিখি করার সময়টা পাচ্ছি৷ রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকে আমি তিনটি বইয়ের উপর কাজ করছি৷ তারমধ্যে একটি বই ইতিমধ্যে বেরিয়ে গিয়েছে৷ আরও দুটি বইয়ের চূড়ান্ত কাজকর্ম চলছে৷ ’ রাজ্যপাল হিসেবে অনেক কথাই এখন মেপে বলতে হয় তথাগতকে৷ তারপরও তাঁর করা ট্যুইট নিয়ে মাঝেমধ্যেই হইচই পড়ে যায়৷ তথাগত অবশ্য এ ব্যাপারে নির্বিকার৷ তিনি মনে করেন , সাংবিধানিক অধিকার মেনে যতটুকু না বললেই নয় , ততটুকুই বলেন তিনি৷

‘এই সময় ’-কে সোমবার দুপুরে রাজভবনে সাক্ষাত্কার দেওয়ার আগে তিনি শর্ত দিয়েছিলেন , ত্রিপুরার ভোট প্রসঙ্গে কোনও প্রশ্নের জবাব দেবেন না৷ তবু কথায় কথায় সেই প্রসঙ্গ এসেছে৷ সাবধানী কিছু উত্তরও দিয়েছেন৷ রাজ্যপাল হিসেবে তিনি মনে করেন , ত্রিপুরা সমস্যাসঙ্কুল৷ আগামী ৫ মার্চ যে দলের সরকারকেই তিনি শপথগ্রহণ করান না কেন , তিনি চান বেকারি দূরীকরণে যেন আগামী সরকার ভালো করে নজর দেয়৷ তথাগতর কথায় , ‘ত্রিপুরার জনতার মূল সমস্যা বেকারি৷ যে সরকারই আসুক না কেন , তারা যেন এই সমস্যার সমাধান করে৷ কেবল সরকারি চাকরির উপরেই অনেকে নির্ভরশীল৷ কিন্ত্ত অন্যান্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হলে ভাল৷ ’ তাঁর পরামর্শ, পর্যটন , রবার শিল্প ও ফলচাষ - এই ৩ ক্ষেত্রে ত্রিপুরা সম্ভাবনাময়৷

পাশাপাশি অবশ্য জানিয়েছেন , মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ভাল৷ ছোটোখাটো কয়েকটি বিষয়ে মানিকের সঙ্গে মতের মিল হয়নি৷ কিন্ত্ত মুখ্যমন্ত্রী রাজভবন এলে তাঁর প্রিয় নাস্তা মুড়ি আর কড়াইশুটি সেদ্ধর ব্যবস্থা করতে ভোলেন না তথাগত৷ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি করার সময় তিনি ছিলেন কট্টর বাম বিরোধী৷ কিন্ত্ত বিক্ষিন্ত বিচ্ছিন্ন দু একটি ঘটনা বাদ দিলে প্রায় তিন বছর সেই বামেদের সঙ্গেই ঘর করেছেন রাজ্যপাল৷ কী ভাবে সম্ভব হল ? তথাগতর বক্তব্য , ‘রাজ্যপাল হিসেবে আমার সাংবিধানিক যা অধিকার , যতটুকু এক্তিয়ার তার মধ্যে থেকেই কাজ করছি৷ তাই সমস্যা হয়নি৷ ’

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল