অ্যাপশহর

হিন্দুনেতার খুনিদের মুণ্ডচ্ছেদ করলেই পুরস্কার ₹১ কোটি, ঘোষণা শিবসেনার

এক ভিডিয়ো বার্তায় অরুণ পাঠক নামে শিবসেনার ওই নেতা বলেন, 'কমলশে তিওয়ারিকে যারা নৃশংস ভাবে খুন করল, আমি বিশ্বাস করি, তাদের বিচারে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা উচিত নয়। একই কায়দায় ওই খুনিদেরও ধড়-মাথা বিচ্ছিন্ন করে মারা উচিত।

EiSamay.Com 19 Oct 2019, 9:37 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দু মহাসভার প্রাক্তন নেতা কমলেশ তিওয়ারির খুনিদের কেউ মাথা কাটতে মারলে, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি ওই ব্যক্তিকে ১ কোটি টাকা পুরস্কার দেবেন। শনিবার এই মর্মে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করলেন বিজেপির এক নেতা। ইতিমধ্যেই তিওয়ারি খুনে জড়িত সন্দেহে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে লখনউ পুলিশ।
EiSamay.Com tiwari news


এক ভিডিয়ো বার্তায় অরুণ পাঠক নামে শিবসেনার ওই নেতা বলেন, 'কমলশে তিওয়ারিকে যারা নৃশংস ভাবে খুন করল, আমি বিশ্বাস করি, তাদের বিচারে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা উচিত নয়। একই কায়দায় ওই খুনিদেরও ধড়-মাথা বিচ্ছিন্ন করে মারা উচিত। যে ব্যক্তি কমলেশের খুনিদের মাথা কাটতে পারবে, আমি তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা দেব। আমি কমলেশ তিওয়ারি এই পুরস্কার ঘোষণা করছি।'

পাঠকের বক্তব্য, 'হিন্দুদের পক্ষে কথা বলার জন্যই তিওয়ারিকে এমন নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটা হয়তো একটা বার্তাও, যাঁরা হিন্দুদের হয়ে কথা বলবে, তাঁদের এ ভাবে মেরে ফেলা হবে। ভারতে এটা আমরা হতে দিতে পারি না।'

কমলেশ তিওয়ারি খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবারf পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে তিন জনকে এ দিন সকালে গুজরাট থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সুরাত ও আমদাবাদের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে, এই ঘটনায় দুই মৌলবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর থেকে।

গুজরাট থেকে যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হল, রশিদ আহমেদ পাঠান, ফৌজান পাঠান এবং মৌলবী মহসিন শেখ। পুলিশের অনুমান, এই রশিদই কমলেশ খুনের মূল চক্রী। পুলিশ জানিয়েছে, কমলেশের বাড়িতে যে মিষ্টির বাক্স দুষ্কৃতীরা নিয়ে গিয়েছিল, সেই বাক্স কিনেছিল ফৈয়াজ।

শুক্রবার দুপুরে লখনউয়ে খুরশিদ বাগে নিজের বাড়িতে খুন হন হিন্দু মহসভার প্রাক্তন নেতা কমলেশ। তাঁকে কুপিয়ে, গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। কমলেশের খুনের পর থেকেই এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খুনিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ-প্রশাসনের উপর ক্রমশ চাপ বাড়তে থাকে। তদন্তের নেমে ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নেপথ্যে বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, কমলেশকে ১৩ বার কোপানো হয়েছে। তাঁর ঘাড়ের কাছে অদ্ভুত একটা ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের এক সূত্রের খবর, কাউকে খুনের সময় জঙ্গিরা যে ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে, কমলেশের ঘাড়ে পাওয়া ক্ষতের সঙ্গে সেটার অনেকটাই মিল রয়েছে। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, কমলেশের মুখের ভিতরে গুলি করা হয়। সেই গুলি তাঁর পিঠ ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়।

কমলেশ তিওয়ারি...


উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি ওপি সিংহ বলেন, '২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যে অপরাধীদের ধরতে পারবে, সে বিষয়ে আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। গ্রেফতারও করেছি তাদের।' উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এই কর্তা জানান, ছোট ছোট দল তৈরি করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তদন্ত শুরু হয়। তবে প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল এই খুনের যোগসূত্র রয়েছে গুজরাটে।

কমলেশের বাড়িতে পাওয়া মিষ্টির বাক্স থেকে বেশ কয়েকটি সূত্র হাতে পায় পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই গুজরাটের একটি মিষ্টির দোকানের খোঁজ পায় পুলিশ। যোগাযোগ করা হয় সে রাজ্যের ডিজির সঙ্গে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ একটি দলও পাঠায় সেখানে। তদন্তে নেমে সুরাত ও আমদাবাদ থেকে এ দিন প্রথমে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, কমলেশকে যারা গুলি করেছিল, সেই দুই শুটারকেও চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই খুনের পিছনে মহম্মদ মুফতি নইম এবং আনওয়ারউল হক নামে বিজনৌরের দুই মৌলবীর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কমলেশের স্ত্রী কিরণ তিওয়ারি। তাঁর অভিযোগ, ২০১৬-য় কমলেশকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন ওই দুই মৌলবী। কিরণের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এ দিন তাঁদের দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়।

পরের খবর