এই সময়: রণক্ষেত্র রাঁচি। ১৫ দিনে আগে পয়গম্বরকে (Prophet Row) নিয়ে বিজেপি নেত্রী নূপূর শর্মার (Nupur Sharma) কুকথাকে ঘিরে শুক্রবার রাস্তায় রাস্তায় প্রতিবাদের আগুন জ্বলল প্রয়াগরাজেও। যোগীরাজ্যের একাধিক শহরে মার খেতে হল পুলিশকে। প্রকাশ্য রাস্তায় পুড়ে খাক হয়ে গেল পুলিশকর্তার গাড়ি। ছাড় পেল না সাংবাদিকের বাইক, ক্যামেরাও। গত শুক্রবার নমাজের পরে যে প্রতিবাদ ঘিরে হিংসার আগুন দেখেছিল কানপুরে, এদিন যেন তারই আঁচ ছড়াল রাজধানী দিল্লি থেকে শুরু করে লখনৌ, ফিরোজাবাদ, দেওবন্দ, প্রয়াগরাজ, মোরাদাবাদ, সাহারানপুরে। নূপুরের গ্রেপ্তারির দাবিতে তাঁর কুশপুতুল পুড়িয়ে উত্তাল জনরোষের ছবি ধরা পড়ল পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া, তেলঙ্গানার হায়দরাবাদ থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, পাঞ্জাব, গুজরাট, জম্মু-কাশ্মীরের একাধিক এলাকায়।
সূত্রের খবর, জুম্মার নমাজের পরে এদিন দেশ জুড়ে যে এমন অশান্তি ছড়াতে পারে, তা আগেই আন্দাজ করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই অনুযায়ী, সব রাজ্যকেই সতর্ক থাকতে বলেছিল অমিত শাহের অফিস। তবে এত দিন 'শান্ত' থাকা পড়শি রাষ্ট্র বাংলাদেশেও যে অশান্তির ঝড় উঠবে, তা অনেকেই আন্দাজ করতে পারেননি। সূত্রের খবর, সব ইসলামিক দেশকে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আর্জি জানিয়ে এ দিন ঢাকায় জমায়েত-প্রতিবাদ করেন কয়েক হাজার মানুষ। বাংলাদেশ সরকার কেন এখনও সরকারি ভাবে ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দাপ্রস্তাব আনছে না, তা নিয়েও ক্ষোভে ফেটে পড়েন একাংশ।
গত ২৬ মে একটি টিভি-ডিবেটে নেমে বিতর্কে জড়ান বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর। দু'দিন পরে একই বিষয়ে টুইট করেন দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র নবীন জিন্দল। এর মোটামুটি এক সপ্তাহ পরে ইসলামিক দুনিয়ার একটা বড় অংশ ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব এনে বয়কটের হুমকি দেয়। সে দিনই দলীয় ভাবে 'সহিষ্ণুতার' বার্তা দিয়ে নূপুর-নবীনকে ছ'বছরের জন্য সাসপেন্ড করে বিজেপি। বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করে দিল্লি পুলিশ। তার পরেও এ দিন কেন একসঙ্গে দেশের এতগুলো জায়গায় আগুন ছড়াল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। লক্ষ্যণীয় যে, ইসলামিক দেশগুলির একটা বড় অংশ কিন্তু বিজেপির সাসপেনশন পদক্ষেপের প্রশংসাই করেছিল। তিন দিনের ভারত সফরে এসে কিছুটা সুরও নামান ইরানের বিদেশমন্ত্রী। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যখন সবে থিতোচ্ছে বলে মনে হয়েছিল, তখনই দেশ জুড়ে আগুন জ্বলল আরও একটা শুক্রবারে। উল্লেখ্য, এর মধ্যে কিন্তু একটি বারের জন্যও মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে কূটনৈতিক স্তরে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টায় মোদী গোড়াতেই মাঠে নামেন বলে দাবি একাধিক সূত্রের।
এদিন প্রথম বিক্ষোভ-প্রতিবাদের খবর আসে দিল্লি থেকে। সূত্রের খবর, জামা মসজিদ চত্বরে নমাজের পরেই নূপুরের গ্রেপ্তারির দাবিতে একটা অংশ প্রাথমিক ভাবে শান্তিপূর্ণ ভাবে স্লোগান দিতে শুরু করেন। দেখতে দেখতে ভিড় জমে যায়। পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিলে ফের জমায়েত হলেও দিনের শেষে বড় অশান্তির খবর মেলেনি। জামা মসজিদের শাহি ইমাম জানান, মসজিদের তরফে কোনও প্রতিবাদের কর্মসূচি ছিল না। দিল্লির জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশও নূপুরের গ্রেপ্তারির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান ক্যাম্পাসে।
কিন্তু এই 'স্বতঃস্ফূর্ত' বিক্ষোভ-প্রতিবাদ যে কী ভয়ঙ্কর চেহারা নিতে পারে, এদিন তা লাইভ দেখল ঝাড়খণ্ডের রাঁচি আর যোগীরাজ্যের একাধিক শহর। বিক্ষোভকারীদের পাথর ছোড়া থেকে শুরু করে গাড়ি-বাস জ্বালানো, পুলিশ-সাংবাদিকদের মারধরের মতো ঘটনা সবচেয়ে বেশি এসেছে এই দু'টি রাজ্য থেকেই। সূত্রের খবর, নমাজের পরেই রাঁচির রাস্তায় রাস্তায় জড়ো হয়ে হাজার-হাজার মুসলিমরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সেই ভিড় থেকেই পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। পাশাপাশি স্থানীয় দোকান ও গাড়িতে ভাঙচুর চালান বিক্ষোভকারীরা। সংঘর্ষে কয়েকজন পুলিশ ও সাংবাদিক আহত হন। সুজানা চকেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। হনুমান মন্দিরের সামনে মারমুখী বিক্ষোভকারীদের থামাতে লাঠিচার্জের পাশাপাশি শূন্যে গুলিও চালাতে হয় পুলিশকে। রাঁচি শহরের একটা বড় অংশ জুড়ে কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন। গ্রেপ্তার অন্তত ৩০।
একই রকম অশান্তির ছবি ধরা পড়েছে উত্তরপ্রদেশে প্রয়াগরাজ, সাহারানপুর, মোরাদাবাদ, ফিরোজদাবাদ থেকেও। বিক্ষোভকারীদের কড়া হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। দোকানপাট বন্ধ করে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়া ও গাড়ি-বাড়ি ভাঙচুর চালানোর দায়ে শুধু সাহারানপুর থেকেই ধৃত ২১। রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ নেমে বিক্ষোভ দেখান হায়দরাবাদ, লুধিয়ানা, আমেদাবাদ, মুম্বই, কর্নাটকের কালবুর্গি, শ্রীনগরেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জম্মু ও কাশ্মীরের একটা বড় অংশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। রাজ্যবাসীকে শান্তিরক্ষার আর্জি জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কড়া হাতে বিক্ষোভ দমনের পাশাপাশি একই আর্জি জানিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন।
সূত্রের খবর, জুম্মার নমাজের পরে এদিন দেশ জুড়ে যে এমন অশান্তি ছড়াতে পারে, তা আগেই আন্দাজ করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই অনুযায়ী, সব রাজ্যকেই সতর্ক থাকতে বলেছিল অমিত শাহের অফিস। তবে এত দিন 'শান্ত' থাকা পড়শি রাষ্ট্র বাংলাদেশেও যে অশান্তির ঝড় উঠবে, তা অনেকেই আন্দাজ করতে পারেননি। সূত্রের খবর, সব ইসলামিক দেশকে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আর্জি জানিয়ে এ দিন ঢাকায় জমায়েত-প্রতিবাদ করেন কয়েক হাজার মানুষ। বাংলাদেশ সরকার কেন এখনও সরকারি ভাবে ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দাপ্রস্তাব আনছে না, তা নিয়েও ক্ষোভে ফেটে পড়েন একাংশ।
গত ২৬ মে একটি টিভি-ডিবেটে নেমে বিতর্কে জড়ান বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর। দু'দিন পরে একই বিষয়ে টুইট করেন দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র নবীন জিন্দল। এর মোটামুটি এক সপ্তাহ পরে ইসলামিক দুনিয়ার একটা বড় অংশ ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব এনে বয়কটের হুমকি দেয়। সে দিনই দলীয় ভাবে 'সহিষ্ণুতার' বার্তা দিয়ে নূপুর-নবীনকে ছ'বছরের জন্য সাসপেন্ড করে বিজেপি। বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করে দিল্লি পুলিশ। তার পরেও এ দিন কেন একসঙ্গে দেশের এতগুলো জায়গায় আগুন ছড়াল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। লক্ষ্যণীয় যে, ইসলামিক দেশগুলির একটা বড় অংশ কিন্তু বিজেপির সাসপেনশন পদক্ষেপের প্রশংসাই করেছিল। তিন দিনের ভারত সফরে এসে কিছুটা সুরও নামান ইরানের বিদেশমন্ত্রী। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যখন সবে থিতোচ্ছে বলে মনে হয়েছিল, তখনই দেশ জুড়ে আগুন জ্বলল আরও একটা শুক্রবারে। উল্লেখ্য, এর মধ্যে কিন্তু একটি বারের জন্যও মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে কূটনৈতিক স্তরে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টায় মোদী গোড়াতেই মাঠে নামেন বলে দাবি একাধিক সূত্রের।
এদিন প্রথম বিক্ষোভ-প্রতিবাদের খবর আসে দিল্লি থেকে। সূত্রের খবর, জামা মসজিদ চত্বরে নমাজের পরেই নূপুরের গ্রেপ্তারির দাবিতে একটা অংশ প্রাথমিক ভাবে শান্তিপূর্ণ ভাবে স্লোগান দিতে শুরু করেন। দেখতে দেখতে ভিড় জমে যায়। পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিলে ফের জমায়েত হলেও দিনের শেষে বড় অশান্তির খবর মেলেনি। জামা মসজিদের শাহি ইমাম জানান, মসজিদের তরফে কোনও প্রতিবাদের কর্মসূচি ছিল না। দিল্লির জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশও নূপুরের গ্রেপ্তারির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান ক্যাম্পাসে।
কিন্তু এই 'স্বতঃস্ফূর্ত' বিক্ষোভ-প্রতিবাদ যে কী ভয়ঙ্কর চেহারা নিতে পারে, এদিন তা লাইভ দেখল ঝাড়খণ্ডের রাঁচি আর যোগীরাজ্যের একাধিক শহর। বিক্ষোভকারীদের পাথর ছোড়া থেকে শুরু করে গাড়ি-বাস জ্বালানো, পুলিশ-সাংবাদিকদের মারধরের মতো ঘটনা সবচেয়ে বেশি এসেছে এই দু'টি রাজ্য থেকেই। সূত্রের খবর, নমাজের পরেই রাঁচির রাস্তায় রাস্তায় জড়ো হয়ে হাজার-হাজার মুসলিমরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সেই ভিড় থেকেই পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। পাশাপাশি স্থানীয় দোকান ও গাড়িতে ভাঙচুর চালান বিক্ষোভকারীরা। সংঘর্ষে কয়েকজন পুলিশ ও সাংবাদিক আহত হন। সুজানা চকেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। হনুমান মন্দিরের সামনে মারমুখী বিক্ষোভকারীদের থামাতে লাঠিচার্জের পাশাপাশি শূন্যে গুলিও চালাতে হয় পুলিশকে। রাঁচি শহরের একটা বড় অংশ জুড়ে কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন। গ্রেপ্তার অন্তত ৩০।
একই রকম অশান্তির ছবি ধরা পড়েছে উত্তরপ্রদেশে প্রয়াগরাজ, সাহারানপুর, মোরাদাবাদ, ফিরোজদাবাদ থেকেও। বিক্ষোভকারীদের কড়া হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। দোকানপাট বন্ধ করে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়া ও গাড়ি-বাড়ি ভাঙচুর চালানোর দায়ে শুধু সাহারানপুর থেকেই ধৃত ২১। রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ নেমে বিক্ষোভ দেখান হায়দরাবাদ, লুধিয়ানা, আমেদাবাদ, মুম্বই, কর্নাটকের কালবুর্গি, শ্রীনগরেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জম্মু ও কাশ্মীরের একটা বড় অংশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। রাজ্যবাসীকে শান্তিরক্ষার আর্জি জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কড়া হাতে বিক্ষোভ দমনের পাশাপাশি একই আর্জি জানিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন।