অ্যাপশহর

গল্পের মেজাজ, ক্রস ভোটিংয়ের শঙ্কা

সংসদ ভবনের দোতলায় উঠে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বাঁ হাতটা নাড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ টিভি ক্যামেরা , চিত্র সাংবাদিক এবং সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে চলে গেলেন ভোটকক্ষের দিকে৷

Ei Samay 18 Jul 2017, 8:25 am
গৌতম হোড় ■ নয়াদিল্লি
EiSamay.Com nda nominee ram nath kovind will take advantage in cross vote
গল্পের মেজাজ, ক্রস ভোটিংয়ের শঙ্কা

সংসদ ভবনের দোতলায় উঠে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বাঁ হাতটা নাড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ টিভি ক্যামেরা , চিত্র সাংবাদিক এবং সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে চলে গেলেন ভোটকক্ষের দিকে৷ একেবারে সকাল সকাল রামনাথ কোবিন্দকে ভোটটা দিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ তার পরেই অমিত শাহ৷ সংসদের দোতলার ঘরে সাধারণত বিভিন্ন কমিটির বৈঠক এবং কখনও -সখনও সাংবাদিক বৈঠক হয়৷ সোমবার সেটাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটকক্ষ৷ আগে থেকে সাংসদদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল , কোন টেবিলে গিয়ে ব্যালট নিতে হবে৷

ঘরের মধ্যে কাপড় দিয়ে ঢাকা ছ’টা টেবিল , যেখানে ব্যালট নিয়ে গিয়ে সাংসদরা তাঁদের পছন্দমতো ভোট দিচ্ছেন৷ ব্যালটের রঙ সবুজ৷ তাতে প্রথম নামটি মীরা কুমারের৷ দ্বিতীয় স্থানে আছে রামনাথ কোবিন্দ৷ পাশে বক্স৷ সেখানে ১ লিখতে হবে৷ সেটাও নির্দিষ্ট পেন দিয়ে৷ বাইরে থেকে যাতে কিছু দেখা না যায় , তাই সংসদ ভবনের থামের মধ্যের জায়গাগুলি ঢেকে দেওয়া হয়েছিল সাদা কাপড় দিয়ে৷ লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার পর রাহুল , জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া , ভূপিন্দর সিং হুডা -সহ একগুচ্ছ কংগ্রেস সাংসদকে নিয়ে ভোট দিতে গেলেন সনিয়া গান্ধী৷ তাঁদের একটু পিছনেই তৃণমূল সাংসদ সুগত বসু৷

ভোট দিয়ে সনিয়া দাঁড়ালেন না৷ এটা যদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের একটা ছবি হয় , তা হলে অন্য ছবি তৈরি করলেন সুষমা স্বরাজ , লালকৃষ্ণ আদবানি ও ফারুক আবদুল্লা৷ ভোট দিয়ে বেরিয়ে সুষমা যখন সিঁড়ির দিকে আসছেন , তখন তিনি আদবানি ও ফারুক আবদুল্লার হাত ধরে আছেন৷ আদবানির বয়স ৮৯ এবং ফারুকের ৭৯ বছর৷ সুষমা বরাবরই আদবানির অনুগামী হিসাবে পরিচিত৷ ফারুক আবদুল্লার সঙ্গেও তাঁর ভালো সম্পর্ক৷ আদবানিকে হাত ধরে কিছুটা নিয়ে এলেন সুষমা৷ ক্যামেরার শাটার টেপার শব্দ ও টিভি ক্যামেরায় দৃশ্যটা ধরে রাখার তাগিদ দেখে তিন জনেই খুব হাসছিলেন৷ ছবির দিক থেকে সংসদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত৷

তবে তারপরে এ রকম মুহূর্ত আরও এল৷ লালু-কন্যা মিসা ভারতী ভোট দিয়ে এসে অপেক্ষা করছিলেন মুলায়মের পুত্রবধূ ও অখিলেশের স্ত্রী ডিম্পল যাদবের জন্য৷ সম্পর্কে দুজনে আত্মীয়৷ নিজেদের মধ্যে কথা বলতে বলতে এগোলেন৷ সঙ্গে সপা সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদব এবং আরজেডি নেতা জয়প্রকাশ যাদব৷ বিহারের সাংসদ পাপ্পু যাদবের সঙ্গে কংগ্রেসের সাংসদ শশী থারুরের জমিয়ে কিছুক্ষণ কথপোকথন৷ ঘনিষ্ঠ ভঙ্গিতে হাত ধরে দুজনে কী বললেন তারপর সেটাই কিছুক্ষণের জন্য সাংবাদিক মহলে চর্চার বিষয় হয়ে রইল৷ হেমা মালিনী এলেন এবং দুটো আঙুলে ভি চিহ্ন দেখালেন৷ প্রদীপ ভট্টাচার্য সকাল সকাল এসে ভোট দিয়ে গেলেন৷

আর কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর রাজ্যসভা সাংসদ থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ আবার মনোনয়ন পাবেন কি না , তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ রাজ্যের তৃণমূল সাংসদদের মধ্যে সুগত বসু ছাড়া দেব এবং কে ডি সিং সংসদে ভোট দিলেন৷ অভিজিত্ মুখোপাধ্যায়ও সংসদেই ভোট দিয়েছেন৷ একটা সময়ে ভোট দেওয়ার লাইনও দীর্ঘ হল৷ বেঙ্কাইয়া নাইডু-সহ কয়েক জন মন্ত্রীকে দেখা গেল , লাইনে দাঁড়িয়ে৷ প্রধানমন্ত্রী , সনিয়ার মতো কয়েকজন ছাড়া সকলকেই লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে হয়েছে৷ সেখানেও তাঁরা একে অপরের সঙ্গে গল্প করেছেন৷ তবে এর মধ্যে যে ক্রস ভোটিং -এর আশঙ্কা ছিল না তা নয়৷ সবথেকে বেশি ছিল , শরদ পাওয়ারের এনসিপি -কে নিয়ে৷ কারণ , জল্পনা চলতে থাকে , এনসিপি -র অনেকেই কোবিন্দকে ভোট দিয়েছেন৷ ফলে প্রফুল প্যাটেলকে বলতে হয় , তাঁরা মীরা কুমারকে সমর্থন করছেন৷

ফলে ভোটটা তাঁকেই দিয়েছেন , কোবিন্দকে নয়৷ দলের সকলেই মীরাকেই ভোট দেবেন৷ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনও হুইপ থাকে না৷ ফলে দলের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য থাকেন না সাংসদরা৷ রামনাথ কোবিন্দ যে জিতবেন তা নিয়ে তো সংশয় নেই৷ কৌতূহল , কত ভোটে জিতছেন৷ বিজেপি ক্রস ভোটিং করাতে পারল কি ? প্রণবের প্রাপ্য ভোটের হার ছাপিয়ে যেতে পারলেন কোবিন্দ ?

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল