অ্যাপশহর

ক্লাস টেনের এই মেয়ে বাঁচালেন ৩ জনকে, অবশ্য মৃত্যুর পর!

নাবালিকা হিসেবে মরণোত্তর দেহদান করে নজির স্থাপন করলেন মুম্বইয়ের কিশোরী কেজল পান্ডে। মৃত্যুর পর প্রকাশিত পরীক্ষার ফলে মিলল অধ্যবসায়ের প্রমাণ।

EiSamay.Com 30 May 2016, 10:13 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: নাবালিকা হিসেবে মরণোত্তর দেহদান করে নজির স্থাপন করলেন মুম্বইয়ের কিশোরী কেজল পান্ডে। মৃত্যুর পর প্রকাশিত পরীক্ষার ফলে মেয়ের অসাধারণ সাফল্য দেখে ভেঙে পড়লেন কেজলের বাবা।
EiSamay.Com mumbai girl saves 3 lives after death scores 8 6 cgpa in cbse exams
ক্লাস টেনের এই মেয়ে বাঁচালেন ৩ জনকে, অবশ্য মৃত্যুর পর!


জন্মদিনের ঠিক ১০ দিন আগে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিল মুম্বইবাসী বছর ষোলোর কেজল। থানের কাছে মায়ের স্কুটারের পিছনে বসে সফর করার সময় আচমকা একটি গাড়ির ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়ে মাথায় গুরুতর চোট পায় ওই কিশোরী। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জেরে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু তারই দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ধারণ করে নতুন জীবন পেলেন তিন মুমূর্ষু রোগী।

দুর্ঘটনায় কিশোরীর মৃত্যুর পর তার বাবা-মাকে বোঝানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন চিকিত্‍সকরা। তাঁদের যুক্তি ছিল, মেয়ের দান করা অঙ্গ পেয়ে প্রা
ণ রক্ষা হবে তিন ব্যক্তির। এই ভাবে তাঁদের শরীরের অংশ হয়ে বেঁচে থাকবে কেজল। চিকিত্সকদের কথায় রাজি হন হতভাগ্য দম্পতি। কেজলের দেহদান করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

অনুমতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা শুরু হয়। কেজলের কিডনি দু'টি প্রতিস্থাপিত হয় স্থানীয় জুপিটার হাসপাতালে ভর্তি দুই রোগীর দেহে। অন্য দিকে, তার লিভার পেয়ে নয়া জীবন লাভ করেছে বছর চোদ্দোর এক কিশোর।

এদিকে, কেজলের মৃত্যুর কয়েক দিন পরই প্রকাশিত হয় তার দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল। মেয়ের মার্কশিটের দিকে তাকানোর মতো মনের জোর ছিল না শোকে পাথর হয়ে যাওয়া পান্ডে দম্পতির। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা জানার পর তাঁরা ফের গভীর শোকপ্রবাহে ভেসে গিয়েছেন। মার্কশিট অনুসারে, সিবিএসই পরীক্ষায় মোট নম্বরের ৮১.৭০% অর্জন করেছে কেজল।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে কেজলের বাবা শ্যামাকান্ত পান্ডে জানিয়েছেন, 'ও নেই, এই ব্যাপারটায় অভ্যস্ত হওয়া বড় কঠিন। ওর দেহদান করার পর মনে করছি এখনও আমাদের মধ্যে বেঁচে রয়েছে কেজল।'

কেজলের সহপাঠী মধুরা জানিয়েছে, 'জম্নদিনের মাত্র দিন দশেক আগেই ও চলে গেল। সব সময় প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর থাকত কেজল। সবাইকে হাসি-ঠাট্টায় মাতিয়ে রাখত। আমার প্রিয় বন্ধু ছিল। ও নেই, এই রুঢ় বাস্তব মেনে নেওয়া অসম্ভব।' মধুরা আরও জানিয়েছে, 'ও সফল হতে চাইত। একাদশ শ্রেণিতে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হতে চেয়েছিল। ভবিষ্যতে সফল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখত।'

প্রিয়জনের দীর্ঘশ্বাসের বিরাম নেই। তবে তিনটি ভাগ্যবান হৃদয়ের স্পন্দনে বেঁচে রইল তাঁদের বহু আদরের কেজল।

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল