অ্যাপশহর

ভোট দেবে গ্রাম? উদ্বেগে দেব

আড়াই লক্ষের বেশি ভোটে জিতেও গত পাঁচ বছরে বন্ধ হয়নি রক্তক্ষরণ। সেই 'ক্ষত' সারাতে এ বার উঠেপড়ে লেগেছেন শাসকদলের নেতারা। দেবের নিজের গ্রাম মহিষদায় দেবকে জেতাতে মরিয়া তাঁরা।

EiSamay 27 Apr 2019, 9:31 am
সমীর মণ্ডল, কেশপুর: আড়াই লক্ষের বেশি ভোটে জিতেও গত পাঁচ বছরে বন্ধ হয়নি রক্তক্ষরণ। সেই 'ক্ষত' সারাতে এ বার উঠেপড়ে লেগেছেন শাসকদলের নেতারা। দেবের নিজের গ্রাম মহিষদায় দেবকে জেতাতে মরিয়া তাঁরা। কেশপুরের মহিষদায় বাড়ি ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেব-এর। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল লোকসভা থেকে ২ লক্ষ ৬০ হাজার ভোটে জয়লাভ করেছিলেন তিনি। শুধু কেশপুর বিধানসভা থেকেই পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি ভোট। অথচ নিজের গ্রামের বুথেই পরাজিত হয়েছিলেন দেব। এর জন্য শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের কম কথা শুনতে হয়নি জেলা নেতৃত্বের কাছে। তাই এ বার দলের প্রার্থীকে তাঁর নিজের গ্রাম থেকে জেতাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন শাসকদলের নেতারা।
EiSamay.Com lok sabha election 2019 west bengal ghatal constituency tmc candidate dipak adhikari vote campaign
প্রচার শুরুর আগে মহিষদা গ্রামের মন্দিরে আশীর্বাদপ্রার্থী দেব - স্বরূপ মণ্ডল


স্থানীয় সিপিএম নেতা মানিকলাল সেনগুপ্ত ঠাট্টা করে বলেন, 'কেশপুরে শাসকদলের এতই ভাল অবস্থা যে, দেবকে জেতাতে স্থানীয় তৃণমূল নেতরা আমাদের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁরা বলছেন, নিজের গ্রাম থেকে অন্তত দেব জিতুক। গত লোকসভা নির্বাচনে মহিষদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি বুথ এবং হাইস্কুলে দুটি বুথ ছিল। গ্রামের ৩টি বুথের মধ্যে দুটি বুথে দেব, বাম প্রার্থী সন্তোষ রানার তুলনায় অনেক কম ভোট পেয়েছিলেন। তৃতীয় বুথটিতে মাত্র ৮টি ভোট বেশি পেয়েছিলেন তিন। সেই বদনাম ঘোচাতে আপ্রান চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল।'

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই দাবি মানতে নারাজ। কেশপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সঞ্জয় পান বলেন, 'এ কথা ঠিক যে মহিষদার ৩টি বুথের মধ্যে ২টি বুথে ভোটের ফলাফলে পিছিয়ে ছিলেন দেব। মহিষদা গ্রাম সিপিএম প্রভাবিত। তখন গ্রামের মানুষকে ভুল বুঝিয়েছিল তাঁরা। এখন অবশ্য সেই অবস্থা আর নেই। কেশপুর ব্লকের অন্য সমস্ত বুথের থেকে মহিষদা বুথের অবস্থা ভালো। আমরা আমাদের সরকারের উন্নয়ন পৌঁছে দিয়েছি প্রতিটি গ্রামে। আশা করছি, এ বার মহিষদার সমস্ত বুথ থেকে লিড পাবে আমাদের প্রার্থী।'

কেশপুরের এই গ্রামেই সিপিএম নেতা শক্তিপদ অধিকারীর বাড়ি। সম্পর্কে দেবের জ্যাঠা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের সম্পাদক তরুণ রায়েরও বাড়ি এই গ্রামে। রাজ্যে পালাবদল হলেও কেশপুরের কিছু জায়গায় সিপিএমের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন অবশ্য পরিস্থিতি বদলেছে। মারা গেছেন শক্তিপদ অধিকারী। তবে এ বারও প্রার্থী ঘোষণার পর গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। গত ২৮ মার্চ গ্রামের বাড়িতে এসে দেব বলেছিলেন, 'জেঠিমার আশীর্বাদ নিতে এসেছি। গ্রামের মানুষ সবাই আমাকে ভালোবাসেন। সবার কাছেই ভোট দেওয়ার আবেদন রাখব। মানুষ যাঁকে পছন্দ করবে তাঁকেই ভোট দেবে। আমি কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি করব না। মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাব।'

মহিষদা গ্রামে দেবের সমর্থনে অসংখ্য দেওয়াল লিখন। সেখানে লেখা, 'ঘরের ছেলে দেবকে জোড়াফুল চিহ্নে ভোট দিয়ে জয়ী করুন।' তবে ভোটের ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, 'দেব ভালো ছেলে। তাঁর কোনও দোষ নেই। গ্রামে এখন সিপিএমের মিছিল, মিটিং প্রচার কিছু নেই। তবুও নিরীহ লোকগুলোকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সর্বস্বান্ত করে দিচ্ছে। এই নিয়ে গ্রামের মানুষের অনেক রাগ।'

মহিষদা গ্রামের প্রবীণ এক বাসিন্দা বলেন, 'এই গ্রামে সিপিএম নেতা তরুন রায়ের বাড়ি। যিনি নিজের বাবার জমি দখল করে গ্রামের গরিব মানুষদের বিতরণ করে দিয়েছিলেন। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বাম আমলে উপকার পেয়েছেন। তাঁরা সেই কথা ভুলে যায়নি।'

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল