অ্যাপশহর

মারাঠা আন্দোলন সামলানোই ফড়নবীশের অস্তিত্বের লড়াই

মারাঠা আন্দোলনের পর মহারাষ্ট্রের টালমাটাল পরিস্থিতি সামলাতে না পারলে শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে৷

EiSamay.Com 23 Oct 2016, 1:27 pm
গৌতম হোড় ■ নয়াদিল্লি
EiSamay.Com how to tackle maratha issue challenge for fadnavis
মারাঠা আন্দোলন সামলানোই ফড়নবীশের অস্তিত্বের লড়াই


মারাঠা আন্দোলনের পর মহারাষ্ট্রের টালমাটাল পরিস্থিতি সামলাতে না পারলে শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে৷ এমনটাই খবর মিলছে বিজেপি সূত্রে৷ এমনিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বিশেষ পছন্দের নেতা৷

তা সত্ত্বেও মারাঠা আন্দোলনের কল্যাণে পরিস্থিতি যে জায়গায় চলে যাচ্ছে , তাতে ব্রাহ্মণ মুখ্যমন্ত্রীকে পদে রাখাটা ঝুঁকি হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব৷ তাই তাঁর জায়গায় কোনও মারাঠা নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করার কথা ভাবনাচিন্তা করছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব৷ তা হলে পরিস্থিতি আপাতত সামাল দেওয়া যেতে পারে বলে তাঁদের ধারণা৷ যদি এই সিদ্ধান্ত সত্যিই নেওয়া হয় , তা হলে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে৷ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আরও কিছু নেতার নামও বিজেপি মহলে শোনা যাচ্ছে৷ তবে প্রকাশ জাভড়েকরকেও প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট পছন্দ করেন৷ তিনি মূলত নির্বিরোধী৷ প্রশাসন ভালো চালাতে পারেন৷ প্রধানমন্ত্রী কোনও দায়িত্ব দিলে সেটা পালন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেন৷ দলের সংগঠনের সঙ্গেও দীর্ঘদিন জড়িয়ে থাকার কারণে সেদিকেও তাঁর দক্ষতা আছে৷

তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি৷ মূলত শরদ পাওয়ারের উদ্যোগে মহারাষ্ট্রে এখন সংরক্ষণের দাবিতে মারাঠা আন্দোলন রীতিমতো বড় হয়ে উঠেছে৷ বিজেপি আরও অসুবিধায় পড়েছে , কারণ , মহারাষ্ট্রে লড়াইটা মারাঠা বনাম দলিতদের মধ্যে শুরু হয়েছে৷ সেখানে তুলনায় অনেকটা আগ্রাসী মারাঠাদের সামনে দলিতরা কিছুটা কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে৷ এমনিতেই গুজরাটে ও উত্তরপ্রদেশে দলিতদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে বিজেপি কিছুটা কোণঠাসা৷ তার ওপর মহারাষ্ট্রে দলিতরা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁদের চিন্তা বেড়েছে৷ এর প্রভাবটা উত্তরপ্রদেশে ও গুজরাটের দলিতদের ওপর পড়তে পারে৷ সে জন্যই মুখ্যমন্ত্রী বদল করার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করলেও তা নিয়ে এগোয়নি বিজেপি নেতৃত্ব৷ কারণ , তাতে আগামী বছরে উত্তরপ্রদেশের ও পরে গুজরাটের ভোটে কতটা প্রভাব পড়তে পারে সেটাও ভেবে দেখা হচ্ছে৷ তবে মারাঠা আন্দোলন স্তিমিত করতে না পারলে এবং দলিতদের বিরোধিতা থেকে তাঁরা সরে না এলে বিজেপির সামনেও আর কোনও পথ খোলা থাকছে না৷ সে জন্যই মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে এতটা চিন্তিত বিজেপি নেতারা৷ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার দু’বছরের মধ্যে সঙ্কটে পড়ে গিয়েছেন ফড়নবীশ ও বিজেপি নেতৃত্ব৷

ঘটনা হল , দীর্ঘদন পরে একজন অ -মারাঠা নেতা মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন৷ ফড়নবীশ হলেন ব্রাহ্মণ৷ তার ওপর তিনি বিদর্ভের নেতা৷ সে জন্য তিনি বাড়তি চাপেও পড়ে গিয়েছেন৷ আর মারাঠা ‘চানক্য ’ শরদ পাওয়ার তাঁর নিজের দলকে চাঙ্গা করার জন্য যে বিক্ষোভ সংগঠিত করেছিলেন , তাতে রীতিমতো উত্তাল হয়ে গিয়েছে মহারাষ্ট্র৷ বিজেপির এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মতে , ফড়নবীশ প্রথমেই একটা বড় ভুল করে ফেলেছেন৷ একটি দলিত ছেলে একজন মারাঠি মেয়েকে ধর্ষণ করার পর থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়৷ মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল একেবারে গোড়াতেই চার্জশিট দেওয়ার ব্যবস্থা করা৷ প্রথমে দাবিটা সেটাই ছিল৷ কিন্ত্ত ফড়নবীশের সিদ্ধান্ত অনুসারে আগে তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়ে তারপর চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ৷ অভিযুক্তরা সকলেই হাজতে , বিচার চলছে , এ সবই ঠিক আছে৷ কিন্ত্ত প্রথম দিকে ওই যে কিছুদিন দেরি করে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী , তাতেই আন্দোলন প্রবল থেকে প্রবলতর হয়েছে৷ আর তাতেই বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন তিনি৷ এরপর চাপের মুখে তাঁকে বেশ কিছুটা বিভ্রান্ত দেখাচ্ছে বলে ওই মন্ত্রীর দাবি৷

হরিয়ানার জগদীশ খাট্টার , ঝাড়খণেণ্ডের রঘুবর দাসদের নিয়েও বিজেপির অন্দরে মাঝে মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে৷ কিন্ত্ত এ বার দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে নিয়ে জলঘোলা অনেকটা বেশিই হচ্ছে৷

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল