অ্যাপশহর

হাথরস গণধর্ষণ মামলা: হাইকোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চেয়ে CJI-কে চিঠি DCW চেয়ারপার্সনের

উত্তরপ্রদেশের দলিত যুবতী ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সোচ্চার হলেন দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল। হাথরসের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দাবি জানান স্বাতী। দেশের প্রধানবিচারপতিকে তিনি একটি চিঠিও দিয়েছেন।

EiSamay.Com 30 Sep 2020, 9:05 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: হাথরস গণধর্ষণ মামলা (Hathras gangrape case)-য় হাইকোর্টের নজরদারিতে তদন্তের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবডেকে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০) চিঠি লিখলেন দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন (DCW Chairperson) স্বাতী মালিওয়াল (Swati Maliwal)। অ্যাপেক্স কোর্টে বিচারপতিদের কাছেও তিনি এই মর্মে আর্জি জানিয়েছেন।
EiSamay.Com swati-maliwal-1582113424
স্বাতী মাালিওয়াল, দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন


পুলিশ-প্রশাসনের যে সমস্ত আধিকারিকরা এই ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে সাসপেন্ড করা-সহ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করার দাবিও তিনি জানিয়েছেন। স্বাতী মাালিওয়ালের কথায়, 'উত্তরপ্রদেশের হাথরসে ১৯ বছরের দলিত যুবতীকে নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা আমাদের অন্তঃস্থলকে ফের একবার নাড়া দিয়েছে।'

সুপ্রিম প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে লেখা চিঠিতে দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, 'লক্ষ লক্ষ যুবতী, নিষ্পাপ মেয়েরা তাঁদের জীবন ও আত্মমর্যাদা বিসর্জন দিয়ে এসেছেন। কিন্তু, ক্ষণিকের ক্ষোভ প্রকাশ ছাড়া আমরা সদর্থক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছি।'

তাঁর কথায়, 'মা ও মেয়েদের প্রতি আমরা যে সম্পূর্ণ উদাসীন, সমাজে তাঁরা যে আজও অবহেলিত-- হাথরস গণ-ধর্ষণ তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।'


১৪ সেপ্টেম্বর হাথরসের দলিত যুবতীকে গণধর্ষণ করে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। পরিবারের বারবার আবেদন সত্ত্বেও লোকাল পুলিশ গণধর্ষণের মামলা দায়ের করতে রাজি হয়নি। এমনকী ঘটনার পাঁচ দিনও পরেও ধর্ষকরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর ধর্ষিতার বয়ান রেকর্ড করে, পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের সংশ্লিষ্ট ধারা দেয়। তাদের চিহ্নিতও করা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করেন স্বাতী।


DCW চেয়ারপার্সন মনে করেন, নিগৃহীতার পরিবারের আবেদনে পুলিশের তত্‍‌ক্ষণাত্‍‌ সাড়া দেওয়া উচিত ছিল। নির্যাতিতাকে আরও আগে চিকিত্‍‌সার জন্য দিল্লিতে আনা উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন। দেশের প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে লেখা চিঠিতে তিনি বলেন, 'আমরা আর কোনও মেয়েকে এ ভাবে হারিয়ে যেতে দিতে পারি না।'


চিঠিতে অভিযোগের সুরে স্বাতী মাালিওয়াল বলেন, ঘটনার প্রথম দিন থেকেই গুরুতর অবস্থা ছিল নির্যাতিতার। তা সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশ সরকার ওই যুবতীকে চিকিত্‍‌সার জন্য দিল্লিতে পাঠানোর প্রয়োজন অনুভব করেনি। ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁকে দিল্লিতে শিফট করা হয়। পরদিন, মঙ্গলবার তাঁর মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন: 'বাংলায় নাকি আইন-শৃঙ্খলা নেই, উত্তরপ্রদেশকে দেখুন!' বিজেপির 'গুন্ডারাজ' নিয়ে সরব মমতা

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও আনেন স্বাতী। তাঁর অভিযোগ, মঙ্গলবার গভীর রাতে (রাত ২টোয়) পরিবারকে ঘরে আটকে রেখে মৃত তরুণীর দেহ পুড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। পরিবারের কোনও সদস্যকে শেষকৃত্যে থাকতে দেয়নি পুলিশ।

আরও পড়ুন: হাথরাস ধর্ষণের তদন্তে SIT! কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ মোদীর, যোগীর ইস্তফা দাবি প্রিয়াঙ্কার

হাথরসের ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এরই মধ্যে ৩ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেন। যোগী জানিয়েছেন, এই দলে থাকছেন স্বরাষ্ট্রসচিব ভাগওয়ান স্বরূপ। সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে SIT। এই মামলার শুনানি ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্টে হবে বলেও জানান যোগী। এই ঘটনার নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী যোগী সরকরের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, যোগী আদিত্যনাথের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই।

এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন

পরের খবর