অ্যাপশহর

পাশে CRY, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মেয়েরা

চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ইউ (CRY)-র সহায়তায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে প্রতিবেশী দুই রাজ্যের প্রত্যন্ত কিছু গ্রাম।

EiSamay.Com 10 Mar 2017, 12:14 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: সদ্য পেরিয়ে গেল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নানা দিকে নারী উন্নয়ন এবং কন্যা সন্তানদের নিয়ে বহু কথা শোনা গিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে অবস্থাটা খুব একটা আশাপ্রদ নয়। সারা দেশের নিরিখে দেখলে এমন কিছু রাজ্য আছে যেখানে কন্যা ভ্রূণ হত্যা করা হয় নির্বিচারে। পুরুষের অনুপাতে নারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কম। সেখানেই চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ইউ (CRY)-র সহায়তায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে প্রতিবেশী দুই রাজ্যের প্রত্যন্ত কিছু গ্রাম।
EiSamay.Com cry helping women fight some of the grave issues
পাশে CRY, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মেয়েরা


ঝাড়খণ্ডের পোখরডিহা গ্রাম। বছর ঊনিশের শোভা বিবাহিতা। কিন্তু স্বপ্ন দেখে ডাক্তার হওয়ার। ১৮ বছরের আগে কোনও ভাবেই বিয়ে নয়, এমন জেদ নিয়েই বাবা-মাকে বোঝাতে শুরু করেন তিনি। এখন রাষ্ট্রীয় ঝাড়খণ্ড সেবা সংস্থানের একজন একনিষ্ঠ কর্মী। এই সংগঠনটি ক্রাইয়ের উদ্যোগে চলে। এদের মূলত কাজ, গ্রামে গ্রামে গিয়ে বাল্যবিবাহ বিরোধী জনমত গড়ে তোলা। শোভা-কে দেখে বহু মেয়েরা এগিয়ে এসেছেন। তেমনই একজন অনিতা। নবম শ্রেণির ছাত্রী অনিতার বক্তব্য, ‘আমি তো বিয়ে করবই না, আমার বন্ধুদের মধ্যেও যাতে কেউ অল্প বয়সে বিয়ে না করে সেটাও দেখব’।

মননপুর গ্রামে সব চেয়ে বেশি বয়সি অবিবাহিতা রয়েছেন ২২ বছরের সরস্বতী। স্নাতকের ছাত্রী বাড়িতে অভিভাবকদের বুঝিয়েছেন যাতে তাঁরা কম বয়সে তাঁর বিয়ে না দেন। এখন তাঁরা রীতিমতো মেয়েদের হয়ে প্রচারে অংশ নেন। তাঁর বাবা নিজেদের জমিও গ্রামে স্কুল গড়ে তোলার জন্য দান করেছেন। যাতে পড়াশোনার মেয়েদের অন্য গ্রামে না যেতে হয়। তেমনই মীরগঞ্জ গ্রামে দ্বিতীয় জীবন শুরু করেছেন সালেহা বিবি। মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয় তাঁর। শ্বশুরবাড়িতে অকথ্য অত্যাচারের পর বাড়িতে এসে ওঠেন। এখন থাকেন মায়ের কাছেই। তাঁর মা তেহমিনা বিবি বলেন, ‘আমার মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। ওদের যোগ্যতম করে গড়ে তুলতে যা করার দরকার করব।’

বিহারের সমস্তিপুরের বলভদ্রপুর গ্রামে অভাবের সংসারে মেয়ে পিঙ্কিকে নিয়ে থাকেন সুনীতা। ছেলেকে ১০ বছর বয়সে কাজের জন্য কলকাতা পাঠিয়েছেন। কিন্তু মেয়েকে কাজে পাঠানোর আগে তিনি বুঝতে পারেন, শিশু শ্রমিক কখনও বাড়ির অভাব মেটাতে পারে না। একমাত্র শিক্ষার আলোতেই এই অন্ধকার মেটানো সম্ভব। তাই শত কষ্ট করেও মেয়েকে পড়াচ্ছেন। পিঙ্কি-র বয়স এখন ১৬। সে পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে জওহর শিশুবিকাশ কেন্দ্রের একনিষ্ঠ কর্মী। এই সংগঠনের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে CRY. গ্রামের মেয়েরা যাতে স্কুল ছেড়ে কাজে না যায় তা দেখাশোনা করে সে।

প্রায় একই পরিস্থিতিতে লড়ছেন আরও দুই বোন মমতা এবং পূজা। দশম শ্রেণির পড়া শেষ হওয়ার পর বাড়ি থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আর পড়ানো সম্ভব হবে না। তখন নিজেদের পড়ার খরচ জোগাড় করতে কাজ শুরু করেন দু’ জনে। এখন পূজা স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করছেন। মমতা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পূজা বলেন, ‘দাদা গ্রাজুয়েশনের পর বি. এড পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু মাধ্যমিকের পর আমাদের পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা বাড়িতে জানিয়ে দিই, যদি তোমাদের পক্ষে সম্ভব না হয় তবে আমরাই কিছু কাজ করে নিজেদের পড়ার খরচ জোগাব। কিন্তু পড়া বন্ধ করব না।’

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল