অ্যাপশহর

শৌচালয়ের বাইরেও পুলিশ! ২৪ ঘণ্টা নজরবন্দি হাথরস নির্যাতিতার পরিবার

অভিযোগ অনুযায়ী, ১৪ সেপ্টেম্বর গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন হাথরসের বছর উনিশের ওই দলিত তরুণী। প্রায় দিন পনেরো ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর, গত মঙ্গলবার দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই রাতেই পরিবারের সম্মতি ছাড়া দাহ করা হয় ধর্ষিতাকে। তার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলি যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুখর হয়।

EiSamay.Com 3 Oct 2020, 3:09 pm
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: হাথরসের নৃশংস গণধর্ষণ কাণ্ড ঘিরে এখন সকলের চোখ উত্তরপ্রদেশে। হাথরসের নির্যাতিতা তরুণীর বাড়ির পরিবারের সঙ্গে বাইরের জগতের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠল। ঘটনার পর থেকেই ওই গ্রামে পুলিশি নজরদারি বসিয়েছে যোগী প্রশাসন। রাজনৈতিক দল তো বটেই সাংবাদিকরা পর্যন্ত গ্রামে ঢোকার অনুমতি পাননি।
EiSamay.Com Hathras off limits
নির্যাতিতার বাড়ির বাইরে পুলিশে টহল। ফাইল ছবি


হাথরসের নিপীড়িতা কিশোরীর মৃত্যুর পরেই গোটা দেশে যখন ক্ষোভ আছড়ে পড়তে শুরু করেছে, তখন নির্যাতিতার বাড়ি এমনভাবে ঘিরে রেখেছে পুলিশ, একটা মাছি গলারও উপায় নেই সেখানে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিশেষ তদন্তকারী দল সিট ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। বলাবাহুল্য, সিট তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাইরের কেউই প্রবেশ করতে পারবে না বলে সরকার থেকে বলে দেওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, পুলিশের বিরুদ্ধে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের কথায়, গ্রামে সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতেও বাধা দিচ্ছে পুলিশ। এমনকি পরিবারের সকলের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রায় ২৪ ঘন্টাই নির্যাতিতার পরিবারকে নজরবন্দি করে রেখেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

হাথরসে ঢুকতে বাধা কেন, জানাল যোগী প্রশাসন


বৃহস্পতিবার, গ্রামের মেইন রোড থেকে গ্রামে যাওয়ার রাস্তার সব দিক বন্ধ করতে ব্যারিকেড দিয়ে দেয় পুলিশ। গ্রামে ঢোক ও বের হওয়ার সমস্ত রাস্তা আপাতত বন্ধ। এমনকি বহিরাগতরা যাতে গ্রামে প্রবেশ করতে না পারে, তারজন্য গ্রামের কৃষিক্ষেতেও পুলিশি নজরদারি রাখা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে, নির্যাতিতা তরুণীর এক আত্মীয়া জানিয়েছেন, ব্যারিকেডের কাছে সাংবাদিকরা অপেক্ষা করে রয়েছেন কখন নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি পাওয়া যাবে। অন্যদিকে, সংবাদমাধ্যমের সামনে যাতে পরিবারের যাতে কথা না বলতে পারেন, তারজন্য কার্যত গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে গোটা পরিবারকে। তাঁদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি নির্যাতিতার বাবাকে বেধরক মারধরও করেছে পুলিশ। অভিযোগ, এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার ধর্ষিতার বাবার বুকে এমন জোরে লাথি মারেন যে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। বাড়ির শৌচালয়ের বাইরেও পুলিশ ২৪ ঘন্টা পাহারা দিচ্ছে!

'শুধরে নিন সব', চাপে যোগীরাজ, সাসপেন্ড ডিএম ও এসপি


গ্রামের এক বাসিন্দার থেকে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা তরুণীর বাড়ির কোনও মহিলা শৌচালয়ে গেলেও পুলিশের নজরবন্দিতে থাকতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ জানিয়েছে, পরিবারটি সংবাদমাধ্যেমগুলির সঙ্গে দেখা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এবার আমার সঙ্গে পালাতে গিয়েও তা সম্ভব হয়নি। আমি জানি গ্রাম থেকে বের হওয়ার গোপন রাস্তাগুলো আমার চেনা। কৃষিক্ষেতের মধ্যে দিয়েই রয়েছে গোপন পথ। কিন্ত পুলিশের নজর এড়িয়ে তা সম্ভব হয়নি।

দলীয় সূত্রের খবর, প্রথমে হাথরস ও পরে বলরামপুর, উত্তরপ্রদেশের দু'টি জায়গায় কয়েক দিনের ব্যবধানে দলিত মহিলাদের উপরে নৃশংস অত্যাচার, তাঁদের মৃত্যু ও তার পরে রাজ্য পুলিশের ভূমিকায় প্রবল অসন্তুষ্ট বিজেপির শীর্ষস্তর৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে সাসপেন্ড করা হয় হাথরসের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও ডেপুটি পুলিশ সুপারকে। তাঁদের বদলি করা হতে পারে বলে খবর। জানা গিয়েছে, রাজ্য তদন্তের জন্য যে সিট গঠন করেছে, তার প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন-

পরের খবর