অ্যাপশহর

২০১৯ কুরুক্ষেত্রে ‘পাণ্ডব’ কংগ্রেসই

বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রাক্কালে কৌরবপক্ষ সেই বার্তাই দিয়েছিল পাণ্ডব শিবিরকে৷

EiSamay 19 Mar 2018, 8:55 am
গৌতম হোড় ■ নয়াদিল্লি
EiSamay.Com congress sunday said the country needs to be rescued from the hands of ignorant and incompetent policy makers
২০১৯ কুরুক্ষেত্রে ‘পাণ্ডব’ কংগ্রেসই

বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রাক্কালে কৌরবপক্ষ সেই বার্তাই দিয়েছিল পাণ্ডব শিবিরকে৷ সেই ‘যুদ্ধ’ করেই যে আগামী লোকসভা ভোটে তাঁরা ক্ষমতায় আসতে প্রস্ত্তত , সে কথা সাফ জানিয়ে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ ২০১৯-এর সাধারণ নির্বাচনকে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে মোদী সরকারকে ‘ক্ষমতালোভী, বিত্তবান কৌরবদের’ সঙ্গে তুলনা করলেন৷

আর কংগ্রেসকে তুলে ধরলেন ‘ন্যায়পরায়ণ পাণ্ডবদের’ সঙ্গে৷ ছুঁয়ে গেলেন তাঁর মন্দির দর্শনের গল্পও, যেখানে এক জন পুরোহিত তাঁকে বলেছিলেন, ‘বেটা, তুমিই হবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী৷ ’ এ ভাবেই খুব সূক্ষ্ম ভাবে ছুঁয়ে গেলেন হিন্দুত্বকে , আর তীব্র আক্রমণে ফালাফালা করলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে৷ বিজেপিও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর বক্তৃতাকে ‘হেরে যাওয়ার উপাখ্যান ’ বলে ব্যাখ্যা করল৷ নির্মলা সীতারামন প্রশ্ন তুললেন , রাহুল তথা কংগ্রেস যেখানে রামকে মানেন না , সেখানে তিনি কী করে মহাভারতের প্রসঙ্গ টানতে পারেন ! এ দিন প্রথম থেকেই রাহুল ছিলেন আক্রমণাত্মক৷ ইংরেজি-হিন্দি মেশানো বক্তৃতায় কুরুক্ষেত্র প্রসঙ্গ টেনে তাঁর প্রথম প্রশ্নই ছিল , ‘ভারত কি মিথ্যা নিয়ে বাঁচবে , না সত্যের মুখোমুখি হবে ? হাজার বছর পর এখন ঠিক সেই প্রশ্নটিই পুনরুচ্চারিত হচ্ছে৷ ’

তার পরেই তিনি মোদীর হাতে ভারতের করুণ অবস্থা তুলে ধরে বলেন , ‘ভারতের বর্তমান সত্য হল , দেশের অর্থনীতি বাড়ছে, কিন্ত্ত মানুষের কাজ নেই৷ গরিব হলে চুক্তি শ্রমিক , কৃষক বা কৃষি শ্রমিক হওয়া ছাড়া কোনও বিকল্প নেই৷ তাঁদের মোদীর দয়ায় বাঁচতে হবে৷ রোজগার নেই , কৃষক মরছে , প্রধানমন্ত্রী বলছেন , চলো যোগ করি৷ আসলে মোদী মানে হল ভারতের সবথেকে বড় পুঁজিপতিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে যোগসাজশের প্রতীক৷ ’ রাহুল ছাড়েননি অমিত শাহকেও৷ চাঁছাছোলা ভাষায় তিনি বলেন, ‘একজন হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে লোকে বিজেপি সভাপতি হিসাবে মেনে নিতে পারে, কিন্ত্ত কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবে মেনে নেবে না৷’

সম্ভবত এই প্রথম অমিতকে এতটা সরাসরি আক্রমণ করলেন রাহুল৷ বদলে ফেলার সময় এসেছে ও সেই পরিবর্তন যে কংগ্রেসের প্রতিটি সদস্যকে হাতে হাত ধরে আনতে হবে , তা স্মরণ করাতে ভোলেননি রাহুল৷ আর সে জন্য যে তিনি আগামী কয়েক মাস কঠোর সিদ্ধান্ত নেবেন এবং নেতা ও সাধারণ কর্মীদের মধ্যে পাঁচিল ভাঙার কাজ করবেন , তাও জানিয়ে দিয়েছেন৷ বলেছেন ‘সরকার বিভাজনের রাজনীতি করছে , কালবুর্গি-গৌরী লঙ্কেশের মতো যুক্তিবাদীরা প্রশ্ন তোলায় তাঁদের মরতে হয়েছে , মহিলাদের উপর চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে নানা অনুশাসন৷ ’ তবে শুধু আক্রমণই নয় , দেশের মানুষের সামনে তাঁর ভিশন স্টেটমেন্ট তুলে ধরেছেন রাহুল৷ তাঁর বিশ্বাস , দেশে দক্ষতার অভাব নেই৷ দরকার হল , তাঁদের জন্য ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করে কাজের সুযোগ তৈরি করা৷ ক্ষমতায় এলে প্রতিটি জেলায় তাঁদের ব্যাঙ্ক ও প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করা হবে৷ কৃষকরা যাতে নিজের শস্য সরাসরি ফুড প্রসেসিং কারখানায় বেচতে পারেন , সে জন্য তৈরি করা হবে ফুডপার্ক৷ কংগ্রেস সভাপতির প্রতিশ্রীতি , কৃষকদের জন্য আগের বারের মতোই ৭০ হাজার কোটি টাকার ঋণ মকুব করতেও প্রস্ত্তত কংগ্রেস৷

উচ্চশিক্ষায় যাতে আইআইটি , আইআইএমের মতো মানের শিক্ষা দেওয়া যায় , তাতে কোনও ত্রুটি রাখবে না তাঁর দল৷ প্লেনারির পাশেই ‘ভিশন ২০৩০ ’ বলে আধ ঘণ্টার সেশনে স্যাম পিত্রোদা থেকে শুরু করে জয়রাম রমেশ , জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া , কর্নাটক ও পাঞ্জাবের অর্থমন্ত্রীরা বলেছেন, কংগ্রেস সরকারে এলে কী করা হবে৷ সেখানেও সবথেকে গুরুত্ব পেয়েছে কর্মসংস্থান৷ রাহুল বলেন, ‘লড়াইটা দুই বিচারধারার , কংগ্রেসের মতাদর্শ জিতবে৷ মোদীজি স্যুট পরা ছেড়ে দিয়েছেন৷ তিনিও ভাবছেন, ২০১৯-এ জিততে পারব না৷’ কর্মীদের জাগাতে সেনাপতির বরাভয়, ‘আপনারা ভয় পাবেন না৷ মনে রাখবেন , আপনারা গান্ধীজির দলের কর্মী৷ আমরা দেখিয়ে দেব, কী করে লড়তে হয়৷’

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল