অ্যাপশহর

ওষুধের দোকানে গিয়ে হঠাত্‍‌ মৃত্যু হাঁপানি রোগীর, ফিরে দেখল না অমানবিক শহর!

হঠাত্‍‌ মৃত্যুর পর ছ-ঘণ্টা পড়ে রইল মৃতদেহ। পুলিশ এল না। কোভিড হেল্পলাইন গুরুত্ব দিল না। এসি থেকে জেলাশাসকের দফতর, সাড়া দেয়নি কেউই। শেষে পুরকর্মীরা এসে ছ-ঘণ্টা পর সরালেই সেই মৃতদেহ।

EiSamay.Com 16 Jul 2020, 3:02 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার মৃত্যুভয় কি আমাদের স্বার্থপর করে তুলছে? কোভিড আতঙ্কে কি আমরা বিসর্জন দিয়েছি মনুষ্যত্ব বোধ? প্রশ্ন তুলল একটা মৃত্যু। চোখের সামনে একটা লোককে সকলে মরতে দেখল। অথচ, কেউ একজনও এগিয়ে এল না। চেষ্টা করল না তাঁকে সুস্থ করার। খবর অবশ্য পুলিশও পেয়েছিল। কিন্তু তাদের নড়তে-চড়তে ছ-ঘণ্টা। তত ক্ষণে ওই ভাবে পড়ে থেকে মরে কাঠ হয়ে গিয়েছে সেই মানুষটি। কোভিড আতঙ্কেই যে কেউ সাহস করে কাছে ঘেঁষেননি, এমনকী পুলিশের দেরি করে আসার কারণও যে ভাইরাস-ভয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। 'মৃত্যু' এখন কোভিডেরই নামান্তর! যে কোনও অসুস্থতা, মৃত্যুর পিছনে আগে লোকে কোভিড খুঁজছে।
EiSamay.Com bihar
এই দোকানের সামনেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির...


বুধবার সক্কাল সক্কাল মনখারাপ-করা এই ঘটনা ঘটেছে বিহারের ভাগলপুরে। ওষুধের দোকানে এসে হঠাত্‍‌ই অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। সেই পড়াই শেষ পড়া! উঠে দাঁড়াতে পারেননি। ক্রমশ নিথর হয়ে আসে শরীর। তার পর কখন যে মৃত্যু হয়েছে-- তক্ষুনি তক্ষুনি নাকি আরও কিছুটা সময় পর, কেউ-ই তা জানে না। জানার বিন্দুমাত্র চেষ্টাও করেনি। পুলিশ এসেছে অবশ্য ঘটনার অনেক পরে। যদিও খবর পেয়েছিল আগেই। ঘটনা ঘটার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই। কেন আসতে দেরি, সে কৈফিয়ত কাউকে দেওয়ার নেই। কিন্তু, লোকটি ওষধের দোকানের সামনে ওই ভাবেই পড়ে থেকেছেন ছ-ছ'টি ঘণ্টা।

ওই ওষুধের দোকানের কেমিস্ট মোহম্মদ মুস্তাক খানের কথা অনুযায়ী, ভদ্রলোক অ্যাজমার পাম্প কিনতে এসেছিলেন। কিনে দোকানের বাইরে পা রাখা মাত্র পড়ে যান। সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। কেউ এগোননি কোভিডের ভয়ে।

ওই দোকান মালিকের কথায়, 'এই কোভিড সংকটে সরকারকে বড় অসহায় লাগছে। অনেকেই খবর দেওয়া হয়েছিল কেউ আসেনি। অ্যাম্বুল্যান্স এসে, তাঁকে না নিয়েই তড়িঘড়ি ফিরে গেছে। পুলিশ আগে এসে, একবার ফিরে গেছে। তার পর আবার এসেছে ছ-ঘণ্টা পর। মৃতদেহ সরাতে। সেই পাঁচ-ছ'টি ঘণ্টা ওই ভাবেই পড়েছিল মৃতদেহ।'

মুস্তাক বলেন, 'আমি জনে জনে আবেদন করেছি। কোভিড হেল্প লাইনে ফোন করেছি। পুলিশকে বলেছি। দোকানের সামনে জড়ো হওয়া পথচলতি অনেককেই বলেছি সহযোগিতা করার জন্য। সকলেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।' অভিযোগ পুলিশসুপার, জেলাশাসক, ভাগলপুর থানা... ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সব নম্বরে ফোন করেছেন। সাড়া মেলেনি।

জানালেন, ছ-ঘণ্টা পর পুরসভা লোক পাঠায়। পিপিই কিট পরে আসা পুরসভার স্যানিটাইজেশনের কর্মীরা এসে, মৃতদেহ তুলে নিয়ে যান। সেটা সম্ভব হয়েছে, ডেপুটি মেয়রের সৌজন্যে।

করোনায় বিহারের দ্বিতীয় সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত জেলার নাম ভাগলপুর। গোটা বিহারে এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত ২০ হাজার। সেখানে শুধু ভাগলপুরে আক্রান্ত ১ হাজারের উপর।

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল