অ্যাপশহর

ভুল ব্যবহারে ক্ষুণ্ণ ভাবমূর্তি

বিজেপি নেতাদের সতর্ক করার জন্যই যে ভাগবত ওই বার্তা দিয়েছিলেন, তা নিয়ে একরকম নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। তবে এ দিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী যা বললেন, তার পরতে পরতে ছিল বিভাজন ও বৈষম্যের রাজনীতির সমালোচনা। প্রেক্ষিতটিও ছিল মানানসই।

EiSamay.Com 23 Feb 2020, 8:01 am
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: মতাদর্শের দিক থেকে দু’জনে শুধু ভিন্ন মেরুর নন, বিরোধী শিবিরেরও বটে। তবে ‘জাতীয়তাবাদের’ ব্যবহার নিয়ে সম্প্রতি আশঙ্কায় দু’জনেই। অবশ্য ভিন্ন কারণে। এক জন ফ্যাসিবাদ-নাৎসিবাদের সঙ্গে জাতীয়তাবাদকে সমার্থক করার প্রবণতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। সেখানে দ্বিতীয় জনের আশঙ্কা, জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগ ও ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগানের অপব্যবহার করে এ দেশ সম্পর্কে ‘চরমপন্থী ও আবেগসর্বস্ব ভাবমূর্তি’ তৈরির চেষ্টা চলছে। শনিবার রাজধানীতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের এই মন্তব্যের পর ভাগবতের সাম্প্রতিক উক্তি ফের চর্চায়। যেখানে জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদকে সমার্থক করার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন তিনি।
EiSamay.Com বক্তব্য রাখছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী
বক্তব্য রাখছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী


বিজেপি নেতাদের সতর্ক করার জন্যই যে ভাগবত ওই বার্তা দিয়েছিলেন, তা নিয়ে একরকম নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। তবে এ দিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী যা বললেন, তার পরতে পরতে ছিল বিভাজন ও বৈষম্যের রাজনীতির সমালোচনা। প্রেক্ষিতটিও ছিল মানানসই। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর লেখা ও কাজকর্মের উপর রচিত এক বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘বহুভাষা পারদর্শী নেহরু, তাঁর অননুকরণীয় দক্ষতায়, আধুনিক ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্রগুলির ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কিছু মানুষ হয় ইতিহাস পড়ার ধৈর্যটুকু রাখতে পারেন না বা তাঁরা নিজস্ব পক্ষপাতপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারা পরিচালিত হয়ে তাঁর ভুল ছবি তুলে ধরেন।’

সমাপতন হয়তো একেই বলে। এ দিন নেহরুর উপর লেখা যে বইটির প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, তার ইংরেজি নাম ‘হু ইজ ভারত মাতা।’ পরে কন্নড় ভাষায় অনুবাদ করা হয় সেটির। শনিবার সেটি-ই প্রকাশিত হয়েছে। মনমোহন বইটির নামেরও সদ্ব্যবহার করেছেন। বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বইটি আরও প্রাসঙ্গিক কারণ এখন জাতীয়তাবাদ ও ভারত মাতা কি জয় স্লোগান ব্যবহার করে ভারতের এক চরমপন্থী ও আবেগসর্বস্ব ভাবমূর্তি তৈরি করার চেষ্টা চলছে যেখানে বহু লক্ষ বাসিন্দা ও নাগরিকের স্থান নেই।’ কটাক্ষের লক্ষ্য কী, তা স্পষ্ট। সম্প্রতি, অর্থনীতির হাল নিয়ে শাসকদলের মনোভাবের বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। তবে তা মূলত আর্থিক বৃদ্ধির স্লথ গতির সমালোচনাতেই স্থির ছিল। এ দিনের অনুষ্ঠানে নাম না করে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে ওঠা বিভাজন ও বৈষম্যের রাজনীতির অভিযোগ আনলেন স্বল্পবাক রাজনীতিবিদ।

রাজনৈতিক মহলের অনেকেরই প্রশ্ন, দ্বিতীয় ইউপিএ আমলের শেষ দিকে, মনমোহনকে ‘মৌনমোহন’ খোঁচা দেওয়া কার্যত অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিল বিজেপি শিবির। তাদের এই ‘নামকরণ’ এখন ব্যুমেরাং হয়ে আসছে না তো? প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অবশ্য এ দিন নেহরুকে উদ্ধৃত করেই মোক্ষম প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘ভারত মাতা কে? কার জয় চান আপনারা?’ উত্তরও দিয়েছেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর কথাতে , ‘পাহাড়, নদী, জঙ্গল, মাঠ, এ সব কিছুই আমাদের সকলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সবার শেষে গুরুত্বপূর্ণ হলেন ভারতবাসী...যাঁরা আসমুদ্রহিমাচল ছড়িয়ে রয়েছেন।’

আরও পড়ুন: সৌদিতে আটক বাঙালি, সাত বছর পর প্রত্যাবর্তন

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল