অ্যাপশহর

আশার আলো দেখাল বেনেট বিশ্ববিদ্যালয়

এই আকস্মিক ও অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে আইনগত দিক থেকে আর্থসামাজিক জীবনের নানা স্তরে চুক্তির কী দশা হতে পারে, তা এ দিনের আলোচ্যসূচির অন্যতম বিষয় ছিল। জানুন বিস্তারিত...

EiSamay 13 Jun 2020, 9:19 am
এই সময়: করোনা পরিস্থিতিতে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। লক্ষ্যণীয় ভাবে বদলেছে আদালতের এজলাসের চিরাচরিত চেহারাটা। কারণ, লকডাউনের জেরে বিচারপতিরা মামলা শুনছেন তাঁদের বাড়ি থেকে। আইনজীবীরাও বাড়িতে বসেই মামলার শুনানি করছেন। অনলাইনে মামলা দাখিল করার সুবাদে খরচও অপেক্ষাকৃত কমেছে। শুক্রবার বেনেট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ল আয়োজিত ‘কোভিড ১৯- সাংবিধানিক ও আইনি নানা প্রশ্ন’ শীর্ষক ওয়েবিনারের সামাজিক দূরত্বের শর্ত মানার তাগিদে গত কয়েক মাসে আইন আদালতের আমূল বদলে যাওয়া ছবিটা এ ভাবেই আঁকলেন প্রখ্যাত আইনজীবী মুকুল রোহতাগি। তাঁর প্রস্তাব, ‘ভবিষ্যতেও সপ্তাহে তিন-চার দিন এজলাসে হাজির থেকে শুনানি ও অন্তত দু’-একদিন অনলাইনে শুনানির কাজ চলুক।’
EiSamay.Com bennett university paved a new path for tomorrow
আলো দেখাল বেনেট বিশ্ববিদ্যালয়


সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ চলতি পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এই ওয়েবিনারে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির সহযোগিতামূলক নীতি ও সহাবস্থানের উপর নির্ভরশীল। তবে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় যুদ্ধ বা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীকরণের ঝোঁকও আসতে পারে। আজকের সঙ্কটকালীন পরিস্থিতিতে সামগ্রিক ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রয়েছে বিচারব্যবস্থার। বিশেষ করে নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার প্রশ্নে। তবে এই মুহূর্তে জরুরি কোনও বিষয়ে যদি সুপ্রিম কোর্ট বিচার-বিবেচনা শুরু করে, সে ক্ষেত্রে হাইকোর্টগুলির উচিত ওই বিষয়ের মধ্যে আর না যাওয়া। রাজ্যস্তরে খুবই স্থানীয় কোনও বিষয় থাকলে সেটা ব্যতিক্রম বলে বিবেচিত হতেই পারে।’

ওয়েবিনারের উদ্বোধনী ভাষণে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক বলেন, ‘একসময় জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চায় সারা বিশ্বকে দিশা দেখিয়েছে নালন্দা ও তক্ষশীলার মতো বিশ্ববিদ্যালয়। আজকের দুনিয়ায় বেনেট বিশ্ববিদ্যালয় সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে। আমি এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বিনীত জৈনকে সাধুবাদ জানাব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে ভারত অভূতপূর্ব এক সমস্যার মোকাবিলা করছে। করোনা সমস্যার তথা লকডাউনের জন্য যাতে পড়াশোনার কাজ কোনও ভাবে ব্যাহত না হয়, সে দিকে নজর রেখে তৈরি দীক্ষা বা স্বয়মের মতো ই-লার্নিং পোর্টালগুলি সক্রিয় রয়েছে। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া যে সব ছাত্রছাত্রীর স্মার্টফোন নেই বা নেট সংযোগের সমস্যা রয়েছে, তারা দূরদর্শনে ‘ওয়ান চ্যানেল ওয়ান ক্লাসরুমের’ পাঠ নিতে পারবেন।’

টানা পাঁচ ঘণ্টার ওয়েবিনারে যথারীতি এসেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের হালহকিকত। আইনবিশেষজ্ঞ স্বপ্ন সুন্দরের মতে, এই ধরণের সঙ্কট খুব একটা অপ্রত্যাশিত ছিল না। কোনও একটা বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরেও এই ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারত। কারণ, প্রশ্নটা কোনও কিছুর মোকাবিলায় আগেভাগেই প্রস্তুতির। তাঁর কথায়, ‘আমাদের দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবায় প্রতি হাজারজন মানুষ পিছু হাসপাতালে বেডের সংখ্যা ০.৭। চিনে এই সংখ্যাটা প্রতি হাজারে ৪.২-৫.২। এটাও মাথায় রাখতে হবে আমাদের দেশের জিডিপি’র ছ’শতাংশ আসে পরিযায়ী শ্রমিকদের শ্রমেই।’

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে যে পরিস্থিতি কার্যত অদৃষ্টের বিধানের সঙ্গে তুলনীয়, তাতে আইনি চুক্তির মর্যাদা কি সর্বতো ভাবে রক্ষা পেতে পারে। এই প্রশ্নের আইনি উত্তর খুঁজেছেন স্বনামধন্য আইনজীবী হরিশ সালভে। তিনি বলেন, ‘লকডাউন ব্যবসাবাণিজ্য বা পরিষেবা প্রদানের মতো নানা ক্ষেত্রে চুক্তির পুরোপুরি কার্যকর হওয়ার পথে কাঁটা ফেলেছে। কারণ, অফিস-কাছারি থেকে শুরু করে অনেক কিছুই তো বন্ধ রাখতে হয়েছিল। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন কেন্দ্র ও রাজ্য দুই স্তরের সরকারের হাতেই ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে। আবার লকডাউনের কারণেই ট্যাক্স রিটার্ন করা থেকে শুরু করে অনেক কিছুই ব্যাহত হয়েছে।’

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল